সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

জাতীয় ফলের পুষ্টিগুণ

যাযাদি ডেস্ক
  ১৫ জুন ২০২৫, ১৭:৫৯
জাতীয় ফলের পুষ্টিগুণ
কাঁঠাল

মধু মাসের অন্যতম রসালো ফল কাঁঠাল চলে এসেছে বাজারে। সুমিষ্ট এই ফলটি পুষ্টিগুণে ঠাসা। এক কাপ কাঁঠালে মেলে ১৫৭ ক্যালোরি, ৩৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ গ্রাম ফ্যাট, ৩ গ্রাম ফাইবার এবং ৩ গ্রাম প্রোটিন। এছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, কপার ও ম্যাংগানিজেরও উৎস কাঁঠাল।

১। পটাসিয়াম, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সংমিশ্রণ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। পটাসিয়াম রক্তচাপের উপর সোডিয়ামের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করে, অন্যদিকে ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে অবদান রাখে।

1

২। প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে উপকারী ফল কাঁঠাল। কাঁঠালে ভিটামিন সি বেশি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই ভিটামিন প্রদাহ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে কাঁঠালে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং লিগনান রয়েছে, যা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে।

৩। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে কাঁঠাল। কাঁঠালের গ্লাইসেমিক সূচক স্কোর কম, যার অর্থ এটি খাওয়ার ফলে আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়বে না।

৪। কাঁঠালে ফাইটোকেমিক্যাল নামক পদার্থ রয়েছে, যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড, স্যাপোনিন এবং ট্যানিন। আমেরিকান ইনস্টিটিউট ফর ক্যানসার রিসার্চের মতে, অনেক ফাইটোকেমিক্যালের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার মানে তারা ফ্রি র‌্যাডিক্যালের প্রভাব মোকাবেলা করতে সাহায্য করতে পারে। ফলে ক্যানসারের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমে কাঁঠাল খেলে।

৫। কাঁঠাল ও এর বিচি দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ফাইবারের দারুণ উৎস। দ্রবণীয় ফাইবার এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তের প্রবাহে কার্বোহাইড্রেটের শোষণকে ধীর করে দিতে পারে। এতে খাওয়ার পরে রক্তে গ্লুকোজের স্পাইক প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। খাদ্যতালিকাগত ফাইবার একজন ব্যক্তির হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে।

৬। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি মেলে কাঁঠাল থেকে। নিয়মিত ফলটি খেলে তাই ত্বক ভালো থাকে ও ত্বককে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখা যায়।

৭। কাঁঠাল ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। এটি এমন একটি খনিজ যা শরীরকে শিথিল করতে সহায়তা করে। ২০২১ সালের একটি গবেষণা বলছে, ম্যাগনেসিয়াম ঘুমের সমসযা দূর করতে সাহায্য করে।

৮। কাঁঠালে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি হাড় শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে।

৯। কাঁঠাল ভিটামিন সি এর একটি ভালো উৎস। এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এছাড়াও কোলাজেন নামক প্রোটিন তৈরির জন্য শরীরের ভিটামিন সি প্রয়োজন, যা স্বাস্থ্যকর ত্বক, হাড় এবং সংযোগকারী টিস্যু যেমন রক্তনালী এবং তরুণাস্থি বজায় রাখার জন্য অত্যাবশ্যক। ক্ষত নিরাময়ের জন্য কোলাজেনও গুরুত্বপূর্ণ।

১০। কলা ও আমের তুলনায় নিয়াসিন ও থায়ামিন বেশি থাকে কাঁঠালে। তাই এটি অ্যাথলেটদের জন্য একটি দারুণ এনার্জি ফুড। এটি ক্লান্তি দূর করে, পেশি সবল করে ও মস্তিষ্ক সতেজ রাখে।

১১। কাঁঠালে প্রচুর ডায়েটারি আঁশ থাকে, যা হজমপ্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এটি মল সহজে বের হতে সাহায্য করে, ফলে পেট পরিষ্কার থাকে। পাশাপাশি কাঁঠাল কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।

১২। থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কপার খুব গুরুত্বপূর্ণ। কাঁঠালে থাকা কপার থাইরয়েড গ্রন্থিকে ভালো রাখে।

১৩। কাঁঠালে এমন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা পেটে ঘা বা আলসার তৈরি হতে বাধা দেয়। এছাড়া ফলটি ফাইবার সমৃদ্ধ, যা পেটে অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে