বিশ্বের প্রথম এআই পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলল সৌদিতে। রোগীকে পরীক্ষা করা, প্রেসক্রিপশন লেখা, ওষুধ দেওয়া, এমনকি কোন পথে হবে চিকিৎসা, তা-ও বলে দেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত চিকিৎসক।
হাসপাতালের ওয়ার্ডে রোগীর বেডে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য সেখানে থাকবে অনেকগুলি যন্ত্রমানবী নার্স। জাপানে এ দৃশ্য এর আগেই দেখা গিয়েছে।
ভার্জিনিয়ার একটি সংস্থা এমন রোবট তৈরি করেছে যে একই সঙ্গে ফার্মাসি, গবেষণা ও নার্সের কাজও করবে। কিছু দিন আগেই খবর বেরিয়েছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) পরিচালিত হাসপাতাল খুলেছে চীন, যেখানে এআই পরিচালিত টেলিমেডিসিনের পরিষেবা পাওয়া যাবে। তবে সৌদি আরব প্রথম বার এমন এক ক্লিনিক খুলল, যেখানে এআই চিকিৎসক নিজেই রোগীকে পরীক্ষা করবে, প্রেসক্রিপশন লিখবে এবং চিকিৎসাপদ্ধতিও বলে দেবন।
চীনের মেডিক্যাল টেকনোলজি কোম্পানি সিনই এআই সৌদির আলমোসা হেল্থ গ্রুপের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি খুলেছে। সেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত চিকিৎসকের নাম ‘হুয়া’। সে-ই রোগীদের পরীক্ষা করে ওষুধ দেবে। রোগীদের কী কী সমস্যা হচ্ছে তা শুনে রোগের কারণ ও চিকিৎসাও বলে দেবে।
অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে সেই পদ্ধতিও বাতলে দেবে এআই চিকিৎসক হুয়া। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে রোগীকে ইমার্জেন্সিতে ভর্তি করা, দ্রুত চিকিৎসা করার কাজও করতে পারবে হুয়া।
আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবেই খোলা হয়েছে এআই ক্লিনিক। এআই চিকিৎসককে সহযোগিতা করার জন্য অন্যান্য চিকিৎসকেরাও থাকবেন। কম্পিউটার অ্যালগরিদ্ম ঠিকমতো কাজ করছে কি না, এআই প্রযুক্তি রোগের সঠিক শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাপদ্ধতি বলতে পারছে কি না, তার খুঁটিনাটি খেয়াল রাখবেন চিকিৎসকেরা।
কী ভাবে হবে চিকিৎসা?
৫০ রকম রোগের চিকিৎসা করতে পারবে এআই চিকিৎসক হুয়া। এমনটাই জানানো হয়েছে সৌদির সেই ক্লিনিকের তরফে। বলা হয়েছে, এআই চিকিৎসকের মস্তিষ্কে কয়েকশো রোগের ডেটাবেস ভরে দেওয়া হয়েছে। যন্ত্রই বলে দেবে, রোগী কেমন আছেন, কতটা বিপজ্জনক পরিস্থিতি, মৃত্যুর ঝুঁকি আছে না নেই। হাঁপানি, ফ্যারিঞ্জাইটিস, শ্বাসযন্ত্রের রোগ, চর্মরোগ, হজমের সমস্যা সংক্রান্ত যে কোনও রোগের ব্যাপারে বলতে পারবে যন্ত্র-চিকিৎসক।
এআই-নির্ভর নানা যন্ত্র এখন ব্যবহৃত হচ্ছে তথ্য বিশ্লেষণ বা জটিল সমস্যা সমাধানের কাজে। শারীরিক উপসর্গের তথ্য বিশ্লেষণ করে রোগ নির্ণয়,ওষুধ তৈরির কাজ ইত্যাদি বহু ক্ষেত্রে তা কাজে লাগানো হচ্ছে। এমনকি জিনের ক্রমপর্যায় বিশ্লেষণ করে জরুরি তথ্য দেওয়ার ব্যাপারেও তা কার্যকর। জরুরী পরিস্থিতিতে রোগ ও রোগীর সংখ্যার চাপ সামলাতে এই ব্যবস্থা আগামী দিনে অত্যন্ত কার্যকর হবে বলেই দাবি করা হয়েছে।