প্রযুক্তির সহজলভ্যতা ও ইন্টারনেট বিপ্লবের কারণে সোশ্যাল মিডিয়া এখন শুধু যোগাযোগ বা বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং আধুনিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স (সাবেক টুইটার), ইউটিউবসহ নানা প্ল্যাটফর্মে সময় কাটাচ্ছেন কোটি কোটি মানুষ। ব্যক্তিগত সম্পর্ক থেকে শুরু করে ব্যবসা, শিক্ষা, এমনকি রাজনীতিও এখন পরিচালিত হচ্ছে এই ভার্চুয়াল মাধ্যমে।
জার্মানভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান Statista-র তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৫২২ কোটি মানুষ সক্রিয়ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছেন, যা বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৬৩.৮ শতাংশ। এই সংখ্যা ২০২৮ সালের মধ্যে ৬০০ কোটিতে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মার্টফোনের প্রসার, কম খরচে ইন্টারনেট এবং সহজলভ্য ডিভাইসের কারণে উন্নয়নশীল ও পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মানুষও এই প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। তরুণদের পাশাপাশি এখন প্রবীণরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হচ্ছেন পরিবারের সঙ্গে সংযোগ রক্ষার প্রয়োজনে।
একজন ব্যবহারকারী দিনে গড়ে ১৫১ মিনিট সময় ব্যয় করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে—যা ২০১৫ সালের তুলনায় ৪০ মিনিট বেশি। এই ক্রমবর্ধমান ব্যবহার একদিকে যেমন সুবিধা দিচ্ছে, অন্যদিকে উদ্বেগও বাড়াচ্ছে।
ডিমান্ডসেইজ-এর এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বে অন্তত ২১ কোটি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তিতে ভুগছেন। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, কিশোর-কিশোরী ও শিশুদের মধ্যে স্ক্রিন টাইম আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের ব্যবহারকারী সংখ্যা ৩০৭ কোটি ছাড়িয়ে গেছে, যার বড় একটি অংশ ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সি। তবে এখন প্রবীণরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হচ্ছেন, বিশেষত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়া যতই উন্নত ও সহজলভ্য হোক না কেন, এর ব্যবহার ভারসাম্যপূর্ণ ও সচেতন হওয়া জরুরি। না হলে এর নেতিবাচক প্রভাব ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজের ওপর মারাত্মক হতে পারে।