ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলছেন, ৫ আগষ্টের পরে অনেকেই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। অথচ আমাদের ভাগ্যহত মানুষের কোন উপকার হয় নাই। দেশের জালেমের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু জুলুমের পরিবর্তন হয় নাই।
রোববার (২২ জুন) লালমনিরহাটের কালেক্টর মাঠে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে অব্যহত অপপ্রচারের কারণে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা জন্মেছে, ইসলাম সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি করা হয়েছে। অথচ ইসলাম ক্ষমতায় আসলে মানুষ মুক্তি পাবে। ইসলাম তো অসহায় মানুষদের জন্য, বিধবাদের জন্য ইসলাম, মিসকিনদের জন্য ইসলাম। সাধারণ মানুষের জন্য ইসলাম।
তিনি বলেন, পুজিবাদী অর্থনীতি মানুষকে মুক্তি দিতে পারে না। তারা ধনীকে ধনী বানায় আর গরীবকে গরীব বানায়। আর ইসলাম গরীবকে ধনী বানায়; ধনীদের মধ্যে ভারসাম্য আনে। বর্তমান অর্থনীতি বৈষম্য তৈরি করে। গত ষোল বছরে ২৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এই টাকাগুলো গরীবদের। আমার আপনার প্রতিটি অর্থনৈতিক লেনদেনের ওপরে ট্যাক্স ও ভ্যাট কাটা হয়। সকল টাকা আমাদের। সেই টাকাগুলোই ওরা পাচার করে, এই টাকার ওপরে ওরা মাস্তানি করে। কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের রক্ত ও ঘামেই দেশ গড়ে ওঠে। রেমিটেন্স যোদ্ধাদের অধিকাংশই মেহনতি মানুষ। অথচ তাদের কোন গুরুত্ব নাই। বাংলাদেশে ক্ষুধার অভাবে মানুষ আত্মহত্যা করেছে। অথচ আমাদের সম্পদের অভাব নাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ মানুষ। আমরা তাদের কাজে লাগাতে পারি নাই। এই জনশক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা সমৃদ্ধ হতে পারতাম। কিন্তু আমাদের জনসম্পদকে কাজে লাগানো হয় নাই। আমাদের মাদক ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। হিংসা, বিদ্বেষ ও হানাহানী লিপ্ত করা হয়েছে। একজন মেধাবী প্রথম শ্রেণীর সরকারী কর্মকর্তার বেতনের চেয়ে ওয়ার্ডের একজন পাতি নেতার আয় বেশি।
ফয়জুল করীম বলেন, এর দায় আমাদের। দেশের নেতারা অপরাধ করলে তাকে শাস্তি দেয়া হয় না বরং তাকে ফুলের মালা দেয়া হয়। খারাপ উৎস থেকে ভালো কিছু আসা করা যায় না। বাংলাদেশের একটা শ্রেণী পরিনতি দেখে শিক্ষা নেয় নাই। আওয়ামী লীগ যা যা করে দেশ ছাড়া হয়েছে এখনো অনেকেই তা করছেন। বিএনপির কেউ কেউ আওয়ামী লীগের ভাষায় আমাদের ব্যাপারে কথা বলেন। এরা জিয়াউর রহমানের নীতি-আদর্শ ও কর্মকৌশল জানে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী-বিএনপি একই চরিত্রের। এদের কথা ও কাজ একই ধারার। দেশের জালেমের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু জুলুমের পরিবর্তন হয় নাই। শপথ ছাড়াই চেয়ার দখল করা, বিচারকদের ওপরে চাপ প্রয়োগ করার কাজও হচ্ছে। একই অপরাধের কারণে আওয়ামী লীগ দোষী হলে বিএনপিও দোষী হবে।
আমাদের শত্রু-মিত্র চিনতে হবে। ইসলাম নিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি করা হয়। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, ইসলাম কাউকে জোর করবে না। বরং এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হবে যাতে অপরাধে পরিবেশই কেউ পাবে না। মানুষের অন্তর থেকে অপরাধের প্রবনতা দুর হয়ে যাবে। ইসলাম ক্ষমতায় আসলে গরীবরা দ্রুততার সাথে ধনী হয়ে যাবে। আমাদেরকে ইসলাম বুঝতে হবে।