সম্প্রতি ফেসবুক গ্রুপে মেটার আকস্মিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিশ্বব্যাপী হাজারো ব্যবহারকারীরা চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করেই হাজার হাজার গ্রুপ নিষিদ্ধ (ব্যান) হয়ে গেছে বলে অনেক গ্রুপ অ্যাডমিন অভিযোগ করেছেন।
টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুকের গ্রুপ সেকশনে এমন ভয়াবহ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন ব্যবহারকারীরা। শপিং গাইড, অভিভাবক সহায়তা, পোষা প্রাণীর যত্ন, গেমিং, এমনকি পোকেমন সম্পর্কিত গ্রুপগুলো পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিভিন্ন গ্রুপ অ্যাডমিনদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া ফেসবুক গ্রুপের প্রশাসকদের অভিযোগ, ‘নগ্নতা’ বা ‘সন্ত্রাসবাদ–সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট’ প্রচারের অভিযোগে তাদের গ্রুপগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে মেটা জানিয়েছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে ফেসবুক গ্রুপগুলো নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে।
ফেসবুকের নতুন কারিগরি ত্রুটির কারণে পোষা প্রাণীর যত্ন, মা-বাবার সহায়তা, কেনাকাটায় ছাড়ের তথ্য, গেমিং, পোকেমন, মেকানিক্যাল কি–বোর্ড বা ইন্টেরিয়র ডিজাইন বিষয়ক গ্রুপগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
এক পাখিপ্রেমী জানিয়েছেন, শুধু পাখির ছবি শেয়ারের তাদের গ্রুপও নিষিদ্ধ হয়েছে। ওই গ্রুপের সদস্য প্রায় ১০ লাখেরও বেশি ছিল।
এ বিষয়ে মেটার যোগাযোগ বিভাগের মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, ‘আমরা একটি কারিগরি ত্রুটির কথা জানতে পেরেছি, যা কিছু ফেসবুক গ্রুপকে প্রভাবিত করেছে। আমরা এখন এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছি।’ তবে এই ত্রুটির কারণে কোন কোন গ্রুপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা এটি ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় মডারেশন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি তিনি।
কেউ আবার দাবি করেছেন, তারা ‘মেটা ভেরিফায়েড’ সাবস্ক্রিপশন কেনার কারণে প্রায়োরিটি গ্রাহক সহায়তা পেয়েছেন এবং তাদের কিছু গ্রুপ পুনরায় সচল হয়েছে।
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘রেডিট’-এ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া ফেসবুক গ্রুপের একাধিক প্রশাসক জানিয়েছেন, তাদের পরিচালিত গ্রুপগুলোকে একযোগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, আপত্তিকর কোনো কনটেন্ট না থাকা সত্ত্বেও তাদের গ্রুপে ‘সন্ত্রাসবাদ বা বিপজ্জনক সংগঠনের প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগ আসছে।
হঠাৎ করে একযোগে হাজার হাজার ফেসবুক গ্রুপ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় বর্তমানে অনেকেই ব্যবসা ও অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনায় বড় ধরনের ক্ষতিতে আছেন।
অনেকে ইতোমধ্যে অনলাইন পিটিশন চালু করেছেন, যেখানে ১২ হাজারের বেশি স্বাক্ষর জমা পড়েছে। কেউ কেউ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভাবছেন। তবে সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান না হওয়ায় ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।