শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
বাংলাদেশ দূতাবাস আংকারা, তুরস্ক

তুরস্কে মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন

যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৫৩
তুরস্কে মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন

তুরস্কে যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪, বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ এবং বাংলাদেশ-তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষ‌্যে কূটনৈতিক সংবর্ধনা আয়োজন।

আংকারায় সোমবার (২২ এপ্রিল) উৎসবমূখর আবহের মধ্য দিয়ে দূতাবাস ভবন প্রাঙ্গণে গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের পর ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ এবং বাংলাদেশ-তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে আংকারাস্থ আতাকুলে টাওয়ারে কূটনৈতিক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

এইদিন রাজধানী আংকারা শহরের মাইলফলক আতাকুলে টাওয়ারটি বাংলাদেশের পতাকার রঙে আলোকসজ্জা করা হয় এবং বিশালাকৃতির বিলবোর্ডে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলাদেশ-তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে বিশেষকিছু স্থিরচিত্র প্রদর্শিত হয়।

উল্লেখ‌্য, এ বছরের ২৬শে মার্চ রমজান মাসে হওয়ায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ২২ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে আয়োজন করা হয়। এ আয়োজনে স্বাগতিক দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ, আংকারাস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকবৃন্দ, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং তুরস্কে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যসহ প্রায় চারশতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রী H.E. Prof. Dr. Vedat Işıkhan।

উভয় দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান উপলক্ষ‌্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদত্ত ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়। অত:পর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ আমানুল হক।

তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানান এবং হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রম, গতিশীল ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিগত কয়েক বছরে আর্থ-সামাজিক সকল খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে যা আজ সমগ্র বিশ্বে স্বীকৃত। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা রক্ষা ও প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মের তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন চিত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে পারস্পরিক মূল্যবোধ, বিশ্বাস ও ঐতিহাসিক বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আগামী দিনে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে, যা আগামী দিনে ব‌্যবসা, বিনিয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ‌্য, কৃষি, মানবসম্পদ, পরিবেশসহ বিভিন্নক্ষেত্রে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। এরপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তুরস্কের শ্রম ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রী H.E. Prof. Dr. Vedat Işıkhan তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন এবং স্বাধীনতার বিগত বছরে অর্জিত অসাধারণ সাফল্যের জন্য বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রা এবং দেশ গঠনে জনগণ ও বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণের পর ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তুরস্ক সরকার সর্বদা বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশা ব‌্যক্ত করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ‌্যে বাংলাদেশ কমিউনিটি এবং দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের অংশগ্রহণে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অত:পর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ‌্যে কেক কাটা হয় এবং আগত অতিথিবৃন্দকে নৈশভোজ পরিবেশন করা হয়।

উল্লেখ্য, সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলাকালে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি তথ‌্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় যা উপস্থিত অতিথিদের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে