প্রতি ১০ জন তরুণের মধ্যে ৭ জন (৬৮%) স্বীকার করেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানোর পর তারা নিজেদের নিয়ে আরো খারাপ অনুভব করে। এমন তথ্যই উঠে এসেছে জরিপে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ডস ইনস্টিটিউট পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায, ব্রিটেনে ১৬ থেকে ২১ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই (৪৬%) এমন এক পৃথিবীতে বাস করতে চায়, যেখানে ইন্টারনেটের অস্তিত্বই নেই। আর এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
জরিপ অনুযায়ী, প্রতি ১০ জন তরুণের মধ্যে ৭ জন (৬৮%) স্বীকার করেছে যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানোর পর তারা নিজেদের নিয়ে আরো খারাপ অনুভব করে। এদের মধ্যে অর্ধেক তরুণ (৫০%) রাত ১০টার পর নির্দিষ্ট অ্যাপ ও ওয়েবসাইট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা বা, ডিজিটাল কারফিউ চালুর পক্ষে মত দিয়েছে।
এছাড়া তরুণদের ইন্টারনেট ব্যবহার সংক্রান্ত অভ্যাস নিয়েও উঠে এসেছে বেশ কিছু উদ্বেগজনক তথ্য।
প্রতি চারজনের একজন প্রতিদিন চার ঘণ্টা বা তার বেশি সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটায়। ৪২% তরুণ স্বীকার করেছে, অনলাইনে তারা কী করে তা অভিভাবকদের কাছ থেকে তারা গোপন রেখেছে।
অনলাইনে বয়স নিয়ে মিথ্যাচার করেছে ৪২%, বিকল্প অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে ৪০%, এমনকি ২৭% পুরোপুরি ভিন্ন এক পরিচয়ে নিজেকে উপস্থাপন করেছে।
আর জরিপের এই ফলাফল সামনে আসার পর যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তি সচিব পিটার কাইল ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাতের নির্দিষ্ট সময়ের পর টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মতো অ্যাপ ব্যবহারে বাধা দেয়ার বিষয়ে ভাবছে সরকার।
যদিও শিশু সুরক্ষা সংগঠন এনএসপিসিসির অনলাইন নীতিমালা ব্যবস্থাপক রানি গোভেন্দর সতর্ক করে দিয়েছেন, শুধু ডিজিটাল কারফিউ দিয়ে শিশুদের অনলাইনের ক্ষতিকর বিষয়বস্তু থেকে রক্ষা করা যাবে না।
তিনি বলেছেন, শিশুরা দিনের অন্য সময়েও এসব ঝুঁকির মুখে পড়বে এবং প্রভাবটা একই রকম থাকবে। সরকার ও প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত শিশুদের জন্য কম আসক্তিকর ও আরো নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম নিশ্চিত করা।
জরিপে অংশ নেয়া তরুণদের ২৭% জানিয়েছেন, তারা ইন্টারনেটে অপরিচিতদের সঙ্গে তাদের লোকেশন বা অবস্থানের তথ্য শেয়ার করেছেন। মহামারির সময় অনলাইন ব্যবহার অনেক বেড়ে গিয়েছিল।
ফলে ৭৫% তরুণ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় অনলাইনে কাটায়। তাদের ৬৮% মনে করে, অতিরিক্ত অনলাইন সময় মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থা মলি রোজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যান্ডি বারোওসের মতে, অ্যালগরিদমের মাধ্যমে এমন সব কনটেন্ট তরুণদের সামনে আসে, যা অনেক সময় অজান্তেই ক্ষতিকর ও মানসিকভাবে বিপর্যয়কর উপাদানের দিকে নিয়ে যায়।