বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হাকিমপুরে আরনু জুট মিলের পৌনে ১ কোটি টাকা মূল্যের বস্তা লুট

হাকিমপুর( দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  ২০ মে ২০২৫, ২১:২২
হাকিমপুরে আরনু জুট মিলের পৌনে ১ কোটি টাকা মূল্যের বস্তা লুট
ছবি : যায়যায়দিন

দিনাজপুরের হাকিমপুরের আরনু জুটমিল থেকে শেখ আব্দুল সাফি নামক এক ব্যক্তির হুকুমে প্রায় পৌনে ১ কোটি টাকা মূল্যের নতুন চটের বস্তা লুটের ঘটনায় ৯ জন সহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনের নামে থানায় মামলা করতে গেলে মামলা না নিয়ে বাদিকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এরপর আদালতের নির্দেশে অবশেষে মামলাটি দায়ের হলেও এর ৪ দিনেও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার বা কাউকে আটক করতে ব্যর্থ হওয়ায় এলাকায় থানা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে চলছে ব্যাপক গুঞ্জন। ৪ টি ট্রাক যোগে এ লুটের ঘটনাটি ঘটে।

মামলা ও বাদী সূত্রে জানা যায়, গত ১ মে রাত অনুমানিক ১১টার দিকে শেখ আব্দুল শাফি নামক এক ব্যক্তির হুকুমে আসামিরা মিলে প্রবেশ করেন। এরপর সেখানে তারা মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করেন। এ সময় এজাহান ভুক্ত আসামিদের মধ্যে ৪ জন ট্রাকচালক জামিরুল ঢাকা মেট্রো- ট-২০-৭৮৬, দুখু ঢাকা মেট্রো -ট -২০-১৮৩৯, শামীম ঢাকা মেট্রো -ট-২০-৫৪০ ও রইদুল ঢাকা মেট্রো-ট - ২০-৯৯০৪ অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় লোডিং ক্রেনের মাধ্যমে চুরি ও দস্যুতা করে অসৎ উদ্দেশ্যে মিলটিতে উৎপাদিত ৭৩ লক্ষ্য ১৫ হাজার ৫০৪ টাকা ৬৪ পয়সা মূল্যের নতুন চটের বস্তা গুলো ট্রাকগুলোতে বোঝাই করেন। এ সময় সেখানে কর্তব্যরত পাহারাদাররা বাধা দিলে তাদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এবং তারা বস্তা গুলো লুট করে নিয়ে যায়া। এবং যাওয়ার সময় মিলটির চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল কাইয়ুম আজাদ ও সাক্ষীদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন পরবর্তীতে এ বিষয়ে মামলা করলে তাদের খুন ও গুম করা হবে।

1

এরপর গত ১৩ মে এঅভিযোগে মিলটির চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি এডমিন শেখ মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে হাকিমপুর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ওসি (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম ফিরিয়ে দেন। এরপর দিন তিনি দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত হাকিমপুর এর বিচারক ইব্রাহিম আলীর আদালতে মামলা করেন । এরপর আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তার পর্যবেক্ষণে বলেন চোরাই মালামাল উদ্ধারের আবশ্যকতা রয়েছে । এবং বিষয়টি এজাহার হিসেবে গণ্য করে ৩ দিনের মধ্যে আদালতকে অবগত করার জন্য ওসি হাকিমপুর কে নির্দেশ দেন। এরপর গত ১৬ মে থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এর ৪ দিনেও থানা পুলিশ রহস্যজনক কারণে লুন্ঠিত বস্তাগুলি উদ্ধার কিংবা আসামিদের আটক করতে সক্ষম হয়নি।

এ বিষয়ে রোববার শেখ আব্দুল শাফির ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন দিলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। এরপর মিলটির চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল কাইয়ুম আজাদেট নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকৃত ঘটনাটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন প্রকাশ করুন। মামলার বাদী মিলটির এডমিন মনোয়ার হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওসি (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলম আসামিপক্ষের নিকট প্রভাবিত হয়ে মামলাটি গ্রহণ না করে আমাকে থানা থেকে ফিরিয়ে দেন। এরপর মামলার আই ও মোস্তাফিজুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাদী পক্ষের নিকট মিলের সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ চেয়েছি সেগুলি পেলে অনুসন্ধান করে দেখব।

ওসি (তদন্ত) এস এম জাহাঙ্গীর আলমের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মামলাটি না নিয়ে বাদিকে ফিরিয়ে দিয়েছি তবে বিষয়টি সার্কেল (সরকারি পুলিশ সুপার হাকিমপুর সার্কেল) ও এসপি (দিনাজপুর পুলিশ সুপার) সবায় জানেন। নবাগত ওসি নাজমুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি গতকাল (রোববার) বিকেলে যোগদান করেছি। মামলাটি সম্পর্কে আমি এখনো স্টাডি করিনি তবে আজকে পিওতে গিয়েছিলাম। পরিশেষে মামলাটির তদন্তের দৃশ্যত কোন অগ্রগতি হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এএসপি (হাকিমপুর সার্কেল) আ ন ম নিয়ামত উল্লাহ যায়যায়দিনকে জানান, এখন পর্যন্ত কোন আটকা বা উদ্ধার নেই তবে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে