বিদেশে ভিক্ষাবৃত্তি ও অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় হাজার হাজার পাকিস্তানি নাগরিকের পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। ইতোমধ্যে ৭ হাজার ৮০০-এর বেশি পাসপোর্ট বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন।
বুধবার (৪ জুন) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী ও মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা বিষয়টি দেশটির সিনেট কমিটিকে অবহিত করেছেন।
কমিটিকে জানানো হয়, ২০১৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ৭ হাজার ৮৭৩ জন পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫ হাজার ৬০০ জন সৌদি আরব, কাতার ও ওমান থেকে ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে বিতাড়িত হন।
এ বিষয়ে দেশটির বিদেশি মিশন ও ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন অথরিটির (এফআইএ) বরাত দিয়ে ডন জানায়, এসব বিতাড়িতদের নাম ‘পাসপোর্ট কন্ট্রোল লিস্ট’ (পিসিএল)-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের পুনরায় বিদেশ যাত্রা ও পাসপোর্ট সেবা থেকে বিরত রাখতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
পাকিস্তানি সিনেটের এক বৈঠকে পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক মোস্তফা জামাল কাজী জানান, সৌদি আরব, ইরান ও ইরাকে পাকিস্তানিদের অনুমোদিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে অবস্থান করার প্রবণতা বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, গত বছর ইরান থেকে প্রায় ৩৪ হাজার এবং ইরাক থেকে ৫০ হাজার পাকিস্তানিকে অবৈধ অবস্থানের কারণে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাকিস্তানি নাগরিকদের আশ্রয় আবেদন আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বলেও জানান তিনি। ২০২৪ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মোট এক লাখ ২৫ হাজার পাকিস্তানি আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানান কাজী।
সিনেট বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সিনেটর জীশান খানজাদা। বৈঠকে সিনেটর জমির হুসেন ঝুমরো ভিক্ষাবৃত্তি ও অপরাধ প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
পাকিস্তান সরকার বলছে, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় বিদেশে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।