গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা করা ১২ জন মানবাধিকারকর্মীসহ ত্রাণবাহী জাহাজ 'ম্যাডলিন' জব্দ করার পর ইসরায়েলের বন্দরনগরী আশদদে টেনে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নৌকাটি বন্দরে পৌঁছেছে এবং যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। জাহাজের আরোহীদের মধ্যে সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ রয়েছেন।
জাহাজে থাকা মানবাধিকারকর্মীদের আটক করা হয়েছে। তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
এই অধিকারকর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদানকারী ফিলিস্তিনি সংগঠন আদালাহ জানিয়েছে, তাদের প্রথমে একটি ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হতে পারে, তারপর দেশে ফেরতে পাঠানো হবে।
এর আগে সোমবার এ বিষয়ে অবগত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন বলে, আটক অধিকারকর্মীদের আশদদ বন্দরে নেওয়ার পর বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর দিয়ে 'দ্রুত যার যার দেশে ফেরত পাঠানোর' পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল।
আয়োজক ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) জানিয়েছে, 'ম্যাডলিন' নামের এই জাহাজের লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের বেআইনি অবরোধ ভেঙে গাজায় 'প্রতীকী' সহায়তা পৌঁছানো। তবে সোমবার ভোররাতে গাজার উপকূল থেকে প্রায় ১০০ নটিক্যাল মাইল (১৮৫ কিলোমিটার) দূরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটি আটক করে।
ইসরায়েল এই অভিযানকে ব্যঙ্গ করে 'সেলফি ইয়ট' বলে আখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, জাহাজের আরোহীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন জানিয়েছে, ম্যাডলিনে চাল ও শিশুখাদ্যসহ অন্যান্য পণ্য ছিল।
জাহাজটিতে ব্রাজিল, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, সুইডেন ও তুরস্কের নাগরিকরা ছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট-এর ফরাসি সদস্য রিমা হাসান ও আল জাজিরার ফরাসি সাংবাদিক ওমর ফাইয়াদ।
এর আগে সোমবার সকালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ জাহাজে থাকা ছয়জন ফরাসি মানবাধিকারকর্মীকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান এবং ইসরায়েলকে আহ্বান জানান, তারা যেন এই অধিকারকর্মীদের 'নিরাপত্তা' নিশ্চিত করে।
সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, তারা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। অন্যদিকে তুরস্ক আন্তর্জাতিক জলসীমায় এভাবে জাহাজ আটককে 'জঘন্য হামলা' হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।
এফএফসি বলেছে, সোমবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটি আটক করার পর থেকে তারা ১২ আরোহীর কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।
গাজার দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির প্রতি বিশ্ববাসীর মনোযোগ টানতে ১ জুন ইতালি থেকে যাত্রা শুরু করেছিল জাহাজটি।
ইসরায়েল বলছে, গাজায় হামাস যোদ্ধাদের হাতে অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকাতেই এই অবরোধ জরুরি।