গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে সকালের দিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণ, ড্রোন হামলা ও মেশিনগান গুলিতে অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে যখন শত শত সাধারণ মানুষ সেখানে খাদ্য সহায়তা সংগ্রহ করতে জড়ো হয়েছিল।
গাজা সিভিল ডিফেন্স মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল জানান, “ইসরায়েলি ড্রোন থেকে গুলি চালানো হয়, এরপর ট্যাংক থেকে কয়েক রাউন্ড শেল ছোঁড়া হয়। সেই মুহূর্তেই বহু মানুষ শহীদ ও আহত হন।”
একমুঠো ময়দার জন্য জীবন বিসর্জন
আহতদের অনেকে নাসের হাসপাতাল-এ চিকিৎসাধীন, যেখানকার মেডিকেল কর্মীরা জানিয়েছেন, অনেকের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক, ফলে মৃত্যুসংখ্যা আরও বাড়তে পারে।এই ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন হামলা নয় - বরং ২৬ মে থেকে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF) খাদ্য বিতরণ শুরু করার পর থেকে প্রতিনিয়ত এধরনের সহিংসতা ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
ইসরায়েলের ব্যাখ্যা নেই, আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া তীব্র:
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস-এর প্রতিক্রিয়া: “পুনরায় দেখা যাচ্ছে, ফিলিস্তিনিরা খাদ্যের আশায় দাঁড়িয়ে থেকে গুলিবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতা চাই।”
জাতিসংঘের সহকারী মুখপাত্র বলেছেন, মানবিক সহায়তা সংগ্রহের সময় সাধারণ মানুষদের হত্যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সড়কে শত শত মানুষ "এক ব্যাগ ময়দা" পাওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখনই: ইসরায়েলি ড্রোন থেকে গুলিবর্ষণ শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর ট্যাংক থেকে কামানের গোলা নিক্ষেপ করা হয়। একইসাথে ভারী মেশিনগান ব্যবহার করে সরাসরি ভিড় লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
এই যুদ্ধ কেবলমাত্র রকেট ও ট্যাংকের নয়, এটি এক ভয়াবহ মানবিক সংকটে রূপ নিচ্ছে। গাজার সাধারণ মানুষ এখন একটি কঠিন দ্বিধায়: "ক্ষুধায় মরবো, নাকি ত্রাণ নিতে গিয়ে গুলিতে মরবো?"
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সহায়তার লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের ওপর এ ধরনের আক্রমণ জাতিসংঘের চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করে এবং অবিলম্বে স্বাধীন তদন্ত প্রয়োজন।