এই বিশ্লেষক আরও বলেন, 'আমাদের বাস্তব পরিস্থিতিটা মাথায় রাখতে হবে। বাস্তবতা হলো—এখানে দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ একটি পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন দেশকে আক্রমণ করেছে, অথচ তাদের কেউই প্রথমে হামলার শিকার হয়নি। ইরানের আক্রমণের শিকার হয়নি ইসরায়েল—বরং তারাই যুদ্ধটা শুরু করেছে। ইরান যুক্তরাষ্ট্রকেও আক্রমণ করেনি—এই পর্যায়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রই সংঘাতের সূচনা করেছে।'
পারসি বলেন, ইরানের ওপর এই হামলা বিশ্বজুড়ে 'শকওয়েভ সৃষ্টি করবে'। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের রোষানলে পড়ার আশঙ্কায় থাকা দেশগুলোর জন্য পারমাণবিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া আর নিজেদের নিরাপদ অনুভব করা কঠিন হয়ে পড়বে।
'তাই আমার আশঙ্কা, আমরা পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার দেখতে পাব। তবে আমি এ-ও মনে করি, এই হামলা একপ্রকার নিশ্চিত করে দিল যে, আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রে পরিণত হবে।'
'এভাবেই সংঘাতের চক্র শুরু হয়' কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপন্সিবল স্টেটক্রাফট-এর মিডল ইস্ট প্রোগ্রামের উপ-পরিচালক অ্যাডাম ওয়াইনস্টিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন মধ্যপ্রাচ্যে একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।
তিনি বলেন, ইরান ইতোমধ্যেই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। 'এখন তারা আরও গোপনে কাজ করবে। তারা এনপিটি (পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি) থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। আর তখন স্বাভাবিকভাবেই ইসরায়েলিরা বলবে: দেখ, এ কারণেই আরও হামলা চালানো প্রয়োজন। আর ইরান সম্ভবত কোনো না কোনো ধরনের পাল্টা জবাব দেবে, নইলে তাদের সরকারের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে,' বলেন ওয়াইনস্টিন।
'আর এভাবেই শুরু হয় সংঘাতের। যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলা একবারেই শেষ হয়ে যাবে কি না, এ ব্যাপারে আমার ঘোর সন্দেহ আছে। আমার মনে হয়, যুক্তরাষ্ট্র এখন ইরানের সঙ্গে এমন একটি ঐচ্ছিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে, যা দুর্ভাগ্যবশত তারাই শুরু করেছে।'