প্রশ্ন: যদি আমরা মসজিদে গিয়ে দেখি যে, জামাআত শেষের পথে। এখন আমরা যদি শেষ তাশাহুদে জামাআতের সাথে অংশ গ্রহণ করতে পারি তাহলে কি পূর্ণ জামাআতের সওয়াব পাবো না কি এ জন্য কমপক্ষে ১ বা ২ রাকাআত পাওয়া জরুরি?
উত্তর:
মাসবকু ব্যক্তি যদি ইমামের সালাম ফেরানোর পূর্বে তাকবীর বলে জামাআতে অংশ গ্রহন করতে পারে তাহলে সে জামাআত পেয়ে গেলো এবং অধিকাংশ আলেমের মতে, সে জামাআতের পূর্ণ সওয়াব অর্জন করবে ইনশাআল্লাহ।
(আর আমাদের অজানা নয় যে, একাকি সালাত আদায়ের চেয়ে জামাআতে আদায় করা সাতাশ গুণ-অন্য বর্ণনায় পঁচিশ গুণ- সওয়াব বেশি।)
এ মর্মে হাদিসে এসেছে:
মু'আয ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
“তোমাদের কেউ যদি সালাতে শরিক হতে আসে এবং ইমাম যদি (সালাতের) কোন এক অবস্থায় থাকেন তবে সে ইমাম যা করছেন তাই করবে।” (সহিহ আবু দাউদ ৫২২, সহিহাহ ১১৮৮, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৫৯১ [আল মাদানী প্রকাশনী]-শাইখ আলবানী, এটিকে সহীহ বলেছেন)
ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি গারীব। এই সনদ ছাড়া অন্য কোন সূত্রে এটি মুসনাদরূপে বর্ণিত আছে বলে আমাদের জানা নাই। আলিমগণ এই হাদীস অনুসারে আমল গ্রহণের অভিমত দিয়েছেন। তাঁরা বলেন, ইমামের সিজদার অবস্থায় যদি কেউ জামাআতে শরিক হতে আসে, তবে সেও সিজদায় শরিক হয়ে যাবে। তবে ইমামের সাথে রুকূ না পাওয়ায় বর্তমান রাকআত পাওয়ার ক্ষেত্রে তা যথেষ্ট বলে বিবেচিত হবে না। আবদুল্লাহ ইবনু মুবারক (রহঃ) এই রকম ক্ষেত্রে সে ইমামের সঙ্গে সিজদায় শরিক হওয়ার কথা গ্রহণ করেছেন। জনৈক রাবী থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ হয়ত এই সিজদা থেকে মাথা উঠানোর সাথে সাথে তাকে মাফ করে দেওয়া হবে। [সুনান তিরমিজী - ৫৯১ ]
এ ছাড়াও আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
“যখন তোমরা ইকামত শুনতে পাবে, তখন সালাতে গমন করো। আর তোমাদের উচিত (চলার পথে) ধীরস্থীরতা ও গাম্ভীর্যতা বজায় রাখা; তাড়াহুড়া করবে না। ইমামের সাথে যতটুকু পাও ততটুকু আদায় করো, আর যা ছুটে যায় তা পূরা করে নাও।” [সহীহ বুখারী - ৬০৮, অধ্যায়: আযান ]
উক্ত হাদিসের শেষাংশে বলা হয়েছে, “ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পূরা করে নিবে।”
সুতরাং কেউ যদি-বিশেষত: শরিয়ত সম্মত ওযর যেমন, টয়লেট, ঘুম থেকে উঠতে দেরি বা জরুরি কাজ ইত্যাদি কারণে-জামাআতে সালাত চলাকালীন সময় তাশাহুদের শেষাংশেও শরিক হতে পারে তাহলেও সে জামাআতের পূর্ণ সওয়াব পাবে ইনশাআল্লাহ। তবে কে অলসতা বশত: জামাআতে শরিক হতে বিলম্ব করল আর কে জরুরি কাজ বা ওজরের কারণে বিলম্ব করল নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত।
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব ।