বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

একমাত্র মুসলিম দেশ পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে ওঠার দিন আজ

যাযাদি ডেস্ক
  ২৮ মে ২০২৫, ১২:৩৬
আপডেট  : ২৮ মে ২০২৫, ১৫:৩৫
একমাত্র মুসলিম দেশ পারমাণবিক শক্তিধর হয়ে ওঠার দিন আজ
পাকিস্তানের জন্য এই পারমাণবিক পরীক্ষা করাটা ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। তেজষ্ক্রিয়তার ফলে পুরো পাহাড় সাদা হয়ে গিয়েছিল

বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৯টি দেশের কাছে রয়েছে ইতিহাসের সব থেকে বিধ্বংসী ও ভয়াবহ পারমাণবিক অস্ত্র।

এটি এতই ভয়াবহ যে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নির্মূল করে দিতে পারে একটি পুরো শহরকে। শুধু নির্মূলই নয়, কয়েক বছর ধরে এর আশপাশের এলাকাসহ ছড়িয়ে পড়তে পারে রেডিয়েশন যা প্রাণীর জীবিত থাকা কিংবা স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

1

১৯০০ শতকের ৪০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষার পর একে একে রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মতো দেশ এই অস্ত্রের সক্ষমতায় পৌঁছাতে পারলেও, এ তালিকায় ছিল না কেনো মুসলিম দেশের নাম।

তবে ১৯৯৮ সালের আজকের এই দিনে প্রথম কোনো মুসলিম দেশ হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্রধারীর তালিকায় নাম লেখায় পাকিস্তান।

তবে এই পথ খুব একটা মসৃণ ছিল না। যেমন ছিল পদে পদে বাধা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সংকট, তেমনি ছিল আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ভয়।

মূলত পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্রের স্বপ্ন দেখা শুরু করে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজয়ের পর। পরাজয় ঘটলেও যুদ্ধে ভারতের অবস্থানকে মেনে নিতে পারেনি দেশটি। এমনটিই জানিয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যম।

ডনের খবরে বল হয়, ১৯৭১ সালের ট্রমা থেকে জন্ম নেওয়া পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি একটি সহজ প্রতিশ্রুতির ওপর নির্মিত হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল, দেশের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে যে কোনও আগ্রাসনকে অকল্পনীয় করে তোলা।

এরপর বহু চেষ্টার ফল হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারলেও পাকিস্তান পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। এর অন্যতম কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় পড়ার সম্ভাবনাকে দায়ী করা হয়।

তবে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান বাধ্য হয় এই বিধ্বংসী অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে। মূলত ১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো ভারত পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। তবে পারমাণবিক শক্তিধর হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে ১৯৯৮ সালের ১১ মে আবার পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে।

এরপর ভারতের পারমাণবিক পরীক্ষার প্রতিক্রিয়ায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি মাথায় নিয়ে এবং নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে মাত্র ১৭ দিন পর অর্থাৎ ১৯৯৮ সালের ২৮ মে বেলুচিস্তানের চাগাই অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায় পাকিস্তান। ইতিহাসে সপ্তম দেশ এবং প্রথম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে এ সক্ষমতায় নাম লেখায় দেশটি।

দিনটিকে "ইয়ুম-ই-তাকবীর" হিসেবে ঘোষণা করে ইসলামাবাদ। আজও ১৯৯৮ সালে ঐতিহাসিক পারমাণবিক পরীক্ষার ২৭তম বার্ষিকী স্মরণে পুরো পাকিস্তানে পালিত হচ্ছে দিনটি।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম বলছে, দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তারা এই অনুষ্ঠানের ঐতিহাসিক পটভূমি স্মরণ করিয়ে দেবেন, যেখানে ১৯৯৮ সালের ১১ মে ভারত তার পারমাণবিক পরীক্ষার মাধ্যমে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালিয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্র: এপিপি ও ডন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে