মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা: শুরু কি হাদিসের ‘বড় যুদ্ধ’ ?

যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ জুন ২০২৫, ২০:১৬
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা: শুরু কি হাদিসের ‘বড় যুদ্ধ’ ?
ছবি: যায়যায়দিন

বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধ-সহিংসতা ও আন্তর্জাতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—হাদিসে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কোনো ভবিষ্যদ্বাণী আছে?

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা—বিশ্ব যেন ক্রমেই ছুটছে এক সর্বাত্মক সংঘাতের দিকে। অনেকে মনে করছেন, এটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে অনেকেই ইসলামের পবিত্র হাদিস শরিফে ভবিষ্যৎ যুদ্ধ-সংক্রান্ত বার্তা অনুসন্ধান করছেন।

1

হাদিসে সরাসরি “তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ” শব্দটি নেই, তবে বেশ কিছু হাদিসে “আখেরি জামানা”, “মালহামা”, “দাজ্জালের আগমন” ও “বড় যুদ্ধ”-এর উল্লেখ রয়েছে। প্রখ্যাত ইসলামি গবেষকরা এসব হাদিসকে ভবিষ্যতের বড় ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিচ্ছবি হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।

একটি বিখ্যাত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

"তোমরা রোমের সঙ্গে যুদ্ধ করবে... সেই যুদ্ধ হবে একটি মহান যুদ্ধ।" (সহীহ মুসলিম)

অনেকে এটিকে ইউরোপীয় শক্তির (রোমান সাম্রাজ্যের উত্তরসূরি) সঙ্গে মুসলিম বিশ্বের যুদ্ধ হিসেবে ব্যাখ্যা করে থাকেন। ইসলামী পরিভাষায় একে “মালহামাতুল কুবরা” বা মহাযুদ্ধ বলা হয়।

“মালহামা” শব্দটি এসেছে ‘লাহম’ থেকে, যার অর্থ মাংস। অর্থাৎ, এত বড় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হবে যেখানে প্রচুর মানুষ হতাহত হবে। ইসলামি স্কলারদের মতে, এই যুদ্ধের সময় দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করবে, এরপর নাজাতদাতা হযরত ঈসা (আ.) আগমন করবেন।

আধুনিক ইসলামি গবেষকরা বলছেন, হাদিসের ভবিষ্যদ্বাণীগুলো সুনির্দিষ্ট সময় বা দেশ নির্ভর নয়। বরং এগুলো একটি বৈশ্বিক প্রবণতার প্রতিফলন হতে পারে।

তাদের মতে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘটুক বা না ঘটুক—বিশ্বের অস্থিরতা মুসলমানদের ঈমান, ধৈর্য ও প্রস্তুতির দিকে ফিরে যাওয়ার আহ্বান হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।

ইসলাম শান্তির ধর্ম। হাদিসে যেসব যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো সতর্কতা এবং আত্মশুদ্ধির বার্তা হিসেবেই গ্রহণ করা উচিৎ। রাজনৈতিক বিশ্লেষণের পাশাপাশি আত্মিক প্রস্তুতিও হতে পারে মুসলিম উম্মাহর প্রকৃত করণীয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে