ভারতের মুম্বাইয়ের মসজিদগুলোতে লাউড স্পিকারে আজান দেয়া নিষিদ্ধ করেছে সেখানকার প্রশাসন।
এর আগে, মুম্বাই পুলিশ কমিশনার দেবন ভারতি জানিয়েছিলেন, শহরের সমস্ত ধর্মীয় স্থানে থাকা লাউড স্পিকার সরিয়ে ফেলা হয়েছে, যার ফলে মুম্বাই এখন ‘লাউড স্পিকার-মুক্ত’ একটি শহর।
এমন পরিস্থিতিতে বসে নেই স্থানীয় মুসলিমরা। তারা মসজিদের আজান শোনার বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করে নিয়েছেন।
ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, মুম্বাইয়ের বেশকিছু মসজিদের উদ্যোগে একটি বিশেষ মোবাইল ফোন অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে যার যার মসজিদের পাঁচ ওয়াক্ত আজান মুসল্লিদের মোবাইলে সরাসরি শোনা যাবে।
অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করেছে তামিলনাড়ুর একটি পেশাদার কোম্পানি। এটি বিনামূল্যে মুসল্লিদের মোবাইল ফোনে সেটআপ করা যাবে। এখন এটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ও আইফোনে উপলব্ধ।
এটি অনেকটা স্মার্ট ওয়াচ অ্যালার্ট সিস্টেমের মতো কাজ করে। একবার ইনস্টল ও কনফিগারেশন হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলবে অ্যাপ্লিকেশনটি।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় মাহিম জুমা মসজিদের ব্যবস্থাপনা ট্রাস্টি ফাহাদ খলিল পাঠান জানান, ‘লাউড স্পিকারের বিরুদ্ধে পুলিশের কঠোরতার কারণে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তাদের মসজিদেও এখন উচ্চস্বরে আজান দেয়া হচ্ছে না।’ ফলে মুসল্লিদের মধ্যে বিশেষ এই অ্যাপটির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘তারপরও ঐতিহ্যবাহী যে পদ্ধতিতে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত আজান শোনা যেত, মুসল্লিরা এখন ভীষণভাবে সেটার অভাব অনুভব করছেন।’
উল্লেখ্য, মসজিদে লাউড স্পিকার নিষিদ্ধ কার্যক্রম প্রসঙ্গে মুম্বাই পুলিশ কমিশনার আরো বলেছিলেন, শহর থেকে প্রায় দেড় হাজারটি লাউড স্পিকার হাটানো হয়েছে এবং পুলিশ নিশ্চিত করবে যে ভবিষ্যতে ফের এসব জায়গায় স্পিকার স্থাপন করা হবে না।
দেবন ভারতি জানান, তবে ধর্মীয় উৎসবগুলোর সময় লাউড স্পিকারের ব্যবহারে অস্থায়ীভাবে অনুমোদন থাকবে।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনগত পদক্ষেপ, যা চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুম্বাই হাই কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে গৃহীত হলো।
মুম্বাই হাই কোর্ট জানিয়েছিল যে, লাউড স্পিকার ব্যবহারকে কোনো ধর্মই আবশ্যক মনে করে না।
দুইটি হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই হুকুম জারি করে।
হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনগুলোর অভিযোগ ছিল, মসজিদগুলোতে আজান দেয়াসহ অন্যান্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত লাউড স্পিকার ব্যবহারের ফলে শব্দ দূষণ হচ্ছে।