সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাতিল হওয়া একটি দুর্নীতির মামলা পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় ১৫ বছর আগে হাইকোর্ট ভাসমান বিদ্যুৎ প্রকল্প (বার্জ মাউন্টেড) সংক্রান্ত ওই দুর্নীতির মামলাটি খারিজ করে দিয়েছিল। এবার সেই রায় বাতিলের আবেদন করেছে দুদক।
এই আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১৫ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, এই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপরাধের প্রাথমিক উপাদান রয়েছে। তিনি একজন এজাহারভুক্ত আসামি। মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর মামলা বাতিলের কোনো সুযোগ নাই। এ কারণে মামলাটি সচল করা প্রয়োজন।
প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য রোববার এ দিন ঠিক করে দেয় বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ।
এ বিষয়ে দুদকের কৌঁসুলি আসিফ হাসান বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়েছে। এই আপিলের উপর ১৫ জুলাই শুনানি হবে।’
বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে তিন কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে বেসরকারি তিনটি ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি হয়েছিল।
এতে শেখ হাসিনাসহ পাঁচজনকে আসামি করেছিল দুদক। এরপর ২০০৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জাতীয় সংসদ ভবনে স্থাপিত ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার বিচার শুরু হয়। তখন আদালত ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। পরে শেখ হাসিনার আবেদনে এই মামলার বিচার কাজ স্থগিত করে হাই কোর্ট।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মামলাটি বাতিলে রুল শুনানির উদ্যোগ নেন শেখ হাসিনা। ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল বিচারপতি মো. শামসুল হুদা ও বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটি বাতিল করে রায় দেয়। উচ্চ আদালতের এই রায়ের পর দীর্ঘ দেড় দশক আপিল বিভাগে যায়নি দুদক।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মামলাটি সচলের উদ্যোগ নেয় দুদক। হাই কোর্টের রায় বাতিল চেয়ে ৫ হাজার ৪৫২ দিন বিলম্বনা মার্জনা চেয়ে গত ৫ মার্চ লিভ টু আপিল করে দুদক।
গত ১৭ মার্চ আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ১৮ মে দিন ঠিক করে দেয়। এর ধারাবাহিকতায় আবেদনটি শুনানির জন্য রোববার কার্যতালিকায় ওঠে।
আপিল বিভাগ জানায়, আবেদনটি প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে।