একটি শিশুর কৌতূহল আর একটি বোতলে বন্দি স্বপ্ন—৩১ বছর পর এসে যুক্ত করল দুই দেশের দুই নারীর হৃদয়। স্কটল্যান্ডের এক ছোট্ট গ্রাম থেকে ভেসে যাওয়া সেই চিঠি মিলল নরওয়ের এক দ্বীপে। চিঠিটি পাঠিয়েছিল ১২ বছর বয়সী আলাইনা স্টিফেন। আর সেটি খুঁজে পান জার্মান তরুণী পিয়া ব্রড্টমান।
ঘটনার শুরু ১৯৯৪ সালে। স্কটল্যান্ডের পোর্টনকি গ্রামের স্কুলছাত্রী আলাইনা একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে একটি পানীয়র ফাঁকা বোতলে নিজের পরিচয়, বয়স ও ঠিকানা লিখে ভরে দেন একটি চিঠি। স্থানীয়ভাবে তৈরি ‘মোরে কাপ’ নামের পানীয়র বোতলটি তুলে দেন তার শিক্ষকের হাতে। ওই শিক্ষকের স্বামী ছিলেন মাছশিকারি। তিনি সমুদ্রে গিয়ে বোতলটি ছুড়ে দেন।
এরপর কেটে যায় দীর্ঘ ৩১ বছর। ২০২৫ সালে, নরওয়ের ভেগা অঞ্চলের ছোট দ্বীপ লিসশেলয়াতে সৈকত পরিষ্কার করার সময় পিয়া ব্রড্টমান নামের এক জার্মান স্বেচ্ছাসেবক হঠাৎই খুঁজে পান সেই পুরোনো চিঠি।
চিঠিটি হাতে পেয়ে অবাক হয়ে যান পিয়া। তিনি এরপর স্কটল্যান্ডে আলাইনাকে পোস্টকার্ড পাঠিয়ে জানান— এত বছর পর সেই চিঠি অবশেষে পৌঁছেছে নতুন গন্তব্যে। পিয়া নিজেও চিঠিতে নিজের পরিচয়, আগ্রহ ও অভিজ্ঞতার কথা লেখেন।
আলাইনা স্টিফেন, বর্তমানে বয়স ৪২, এখনো সেই পুরোনো ঠিকানাতেই বসবাস করেন। তিনি বলেন,
"চিঠির উত্তর পেয়ে আমি হতবাক। প্রথমে তো বিশ্বাসই করতে পারিনি।"
এরপর তারা একে অপরের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত হন। চিঠির কাগজ, অক্ষর এবং বোতলের অক্ষতা দেখে দুজনেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
পিয়া জানান, "একটা পুরোনো চিঠি এত বছর ধরে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আমার হাতে পৌঁছাবে, ভাবতেই পারিনি। এটা আমার জীবনের এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত।"