মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খানের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (১০ জুন) সকাল ১০টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জনসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। এ ছাড়া তার প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এসময় সিরাজুল আলম খানকে ‘স্বাধীনতার প্রাণ পুরুষ, নেপথ্যের নায়ক ও সফল স্বপ্ন দ্রষ্টা’ হিসেবে তুল ধরেন আ স ম আব্দুর রব।
তিনি বলেন, বাঙালির জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, যুব ছাত্রদের মনে স্বাধীনতার অগ্নিশিখা ছড়িয়ে দেওয়ার মন্ত্র এবং সব সংগ্রাম আন্দোলনকে গণআন্দোলনে রূপান্তর করে স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনার অন্যতম কৌশল প্রণয়নকারী ছিলেন সিরাজুল আলম খান। ১৯৬২ সালেই স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে নিউক্লিয়াস গঠন করেন। এই নিউক্লিয়াসই ছাত্র জনতার আন্দোলন, ৬ দফা, ১১ দফাসহ প্রতিটি আন্দোলনকে স্বাধীনতার পক্ষে জনমত সৃষ্টির কাজে রূপ দিতে গুরুদায়িত্ব পালন করে।
মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সিরাজুল আলম খানের অবদান অনস্বীকার্য, কিন্তু রাষ্ট্র তাকে সেভাবে স্বীকৃতি দিতে পারেনি। হাতে গোনা ব্যাক্তিদের তুমুলভাবে তুলে ধরতে গিয়ে অন্যদের সঠিক স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সিরাজুল আলম খান যে আইডিয়া নিয়ে রাজনীতি করেছেন, সেটা জনকল্যাণের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নে। হয়তো এই ভিন্নমতের কারণেই তিনি বৈষ্যমের শিকার হয়েছেন।
জানাজা শেষে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং দলের পক্ষ থেকে মরহুমের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর মরদেহ মরহুমের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালির উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাকে তার বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সিরাজুল আলম খান গতকাল শুক্রবার (৯ জুন) বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘দাদাভাই’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন সিরাজুল আলম খান।
যাযাদি/ এসএম