শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

স্বল্প সময়ের জন্য স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজলো রাজধানী

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ মে ২০২৪, ২২:১৩
আপডেট  : ০২ মে ২০২৪, ২২:২৫
ছবি : যায়যায়দিন

স্বল্প সময়ের জন্য স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজলো রাজধানী। এতে জনজীবনে কিছুক্ষণের জন্য শীতলতা নেমে আসে। তবে এই বৃষ্টি কিছুক্ষণ পর বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টির কারণে বাতাসে গরমের উত্তাপ কিছুটা কমে আসে। টানা একমাস দাবদাহের পর স্বস্তির বৃষ্টির দেখা পেল রাজধানীবাসী। আজ বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার সদরঘাট, যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, ইসলামপুরসহ আশপাশের একাধিক এলাকায় বৃষ্টির খবর পাওয়া যায়।

রাতের বৃষ্টিতে অনেক ভেজতে দেখা যায়। তবে পথে আটকা পড়া মানুষের ভোগান্তি পড়তে হয়।

আজ সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর তাদের ফেসবুক পাতায় জানায়, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা-ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘ঢাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ৬০ শতাংশ, বিকেল থেকে মেঘ থাকবে, এরপর সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।’

তবে তিনি জানিয়ে দেন, ‘এখনকার বৃষ্টির সময়কাল থাকে খুব কম, আধা ঘণ্টা থেকে বড়জোর দুই ঘণ্টা, এর মধ্যে বৃষ্টি শেষ হয়ে যায়, আবার রোদ ওঠে।’

ফলে তাপমাত্রা এখনি খুব একটা কমছে না।

চট্টগ্রামে যেমন সকাল থেকে আকাশে মেঘ থাকলেও সাড়ে ৯টা নাগাদ খানিকটা বৃষ্টি পড়তে দেখা যায়, তবে সেটার স্থায়িত্ব ছিল খুবই কম।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক জানান, ‘২-৩ মিনিট বৃষ্টি হইছে, এখন রোদ, গরম আরো বেড়ে গিয়েছে।’

শুধু চট্টগ্রামে না সিলেটেও আজ ভোর থেকে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির কথা জানান সেখানকার সাংবাদিক প্রত্যুষ তালুকদার। যা সকাল ৯টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে বলে জানান তিনি, ‘এখন তাপমাত্রা কিছুটা স্বস্তিদায়ক, মানুষ খানিকটা আরামে বাইরে বের হতে পারছে।’

বৃষ্টি কতদিন থাকবে? গরম কি কমবে? বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর গত ২৪ ঘণ্টায় যে বৃষ্টিপাতের বিবরণ দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে দেশের উত্তরবঙ্গের জেলা রংপুর, দিনাজপুর ও সৈয়দপুরের কিছু এলাকায় সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সিলেট অঞ্চলেও সামান্য বৃষ্টিপাতের কথা বলা আছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কক্সবাজার ও একেবারে দক্ষিণে সুন্দরবন ঘেঁষে হালকা বৃষ্টিপাতের কথা উল্লেখ করেছে আবহাওয়া অফিস।

তবে যথারীতি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গাতেই ৪২ দশমকি ৮ ডিগ্রি, আর বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দেখা যায় তেঁতুলিয়ায় ১৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি।

তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, ৪ মে-র পরের পাঁচদিন সারাদেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বিস্তার লাভ করতে পারে এবং তাপমাত্রা আরো হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম বলেন, ‘৫ তারিখ থেকে তাপমাত্রা কমে গিয়ে সহনশীল হওয়ার সম্ভাবনা, যা ৯ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।’

এ সময় প্রতিদিন বজ্রঝড় থেকে কাক্ষিত বৃষ্টি হতে পারে। সেই বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে, তবে টানা নয়, থেমে থেমে বৃষ্টি হবে।

তিনি জানান, তাদের হিসেবে ‘মে মাসে গড় বৃষ্টিপাত হবে ১৩ দিন।’

তবে তাপপ্রবাহ আটকাতে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টিপাত জরুরি বলছেন এই আবহাওয়াবিদ।

আবুল কালাম বলেন, ‘আমাদের পশ্চিমাঞ্চলে যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে তাপমাত্রা কমবে না। দেশের অভ্যন্তরে বজ্রঝড় পশ্চিমে শুরু হয়ে তা যখন রাজশাহী, খুলনা হয়ে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে যায় তখন তাপমাত্রা দুই থেকে ছয় ডিগ্রি কমে যায়।’

এপ্রিল জুড়ে বজ্রঝড়ের সংখ্যা কম থাকলেও মে-মাসে তা বাড়বে বলে জানান তিনি।

বন্যা ও বজ্রপাতের শঙ্কা চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যেই সিলেট অঞ্চলে বন্যার পূর্বাভাসও পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. আবদুল মান্নান জানান, ‘সিলেটে যেহেতু গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে, আর শুধু সিলেট নয়, ওখানে ওপরের দিকে ভারতীয় অঞ্চলেও বৃষ্টি হচ্ছে সেজন্য বন্যার একটা শঙ্কা রয়েছে।’

তবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের যে পরিমাণ তা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি নয় বরং কম।

এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘কিন্তু আজ থেকে যদি ক্রমাগতভাবে প্রতিদিন অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয় তবে সাময়িকভাবে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেজন্য পাঁচ দিন টানা বৃষ্টি হতে হবে।’

এ সময় বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি নিয়েও আলোচনা চলছে। আরেকজন আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মনে করেন, বর্তমান আবহাওয়ায় বজ্রঝড় এখন স্বস্তির হলেও প্রান্তিক মানুষের জন্য তা দুশ্চিন্তার কারণ বটে।

তিনি বলেন, ‘এ সময় বজ্রঝড়ের সাথে বজ্রপাত হয়, যাতে প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া দমকা বাতাস ও ঝড়ো হাওয়াও দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে কারো কারো জন্য।’

এজন্য সবাইকে প্রয়োজনীয় সতকর্তা অবলম্বনেরও তাগিদ দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে