শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু ও জনগণের মুক্তি প্রতিষ্ঠা

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলে বারংবার শুধু একই সত্য প্রমাণিত হয়- তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি ও সৃজনশীলতার কারিগর, সে কারণেই বঙ্গবন্ধু অনন্য ও অতুলনীয়। অবহেলিত জনগণের মুক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন।
ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
  ২৮ মার্চ ২০২২, ০০:০০
আপডেট  : ২৮ মার্চ ২০২২, ০৯:১০

মা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমির প্রতি আত্মনিবেদিত বাঙালি জাতি তার আপন সত্তার বিকাশে সংগ্রামী হয়েছে, প্রতিবাদী হয়েছে। নির্যাতন, লাঞ্ছনা ভোগ করেছে, জীবন দিয়েছে, রক্তের সাক্ষর রেখেছে। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে আমরা তাই পাই। বাঙালির দুর্জয় সাহসিকতা আজও বিশ্বে তার গৌরবের পতাকা বহন করে চলেছে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি বর্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে মোকাবিলা করে বাংলার মাটি থেকে উচ্ছেদ করার আহ্বান জানান এবং মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেন। এ মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন ও সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসার জন্য তিনি বিশ্ববাসীর কাছেও আহ্বান জানিয়েছিলেন। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বাঙালি তার বিজয় অর্জন করে দেশকে শত্রম্ন মুক্ত করেন। পাকিস্তানি স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী বিশ্ব নেতৃবৃন্দের চাপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু অসীম সাহসের দেশপ্রেমি প্রবল পুরুষ। শক্তিবান সাধারণ জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনে উজ্জীবিত এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও বোধে এক অতুলনীয় শ্রেষ্ঠ সন্তান। যার হত্যা একটি রাষ্ট্রকে বিপর্যস্ত ও ব্যর্থ করে তুলেছে। যার অনুপস্থিতি একটি অগ্রগামী ও বিকাশমান রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ভঙ্গুর করে জনমনকে অস্থির ও অনিশ্চিত করে দিল, যার শূন্যতায় বাংলাদেশ জাতি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মুক্তির ইতিবাচক ধারা চরমভাবে বিঘ্নিত হলো। সেই খুন জাতির অভিশপ্ত কালিমা, সেই খুন রাষ্ট্র হননের শামিল। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলে বারংবার শুধু একই সত্য প্রমাণিত হয়- তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি ও সৃজনশীলতার কারিগর, সে কারণেই বঙ্গবন্ধু অনন্য ও অতুলনীয়। অবহেলিত জনগণের মুক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। এবার আমি বঙ্গবন্ধুর সাধারণ মানুষের প্রাসঙ্গিক ভাবনা বিষয়ের ইতিবৃত্ত তুলে ধরছি। সাধারণ মানুষের প্রাসঙ্গিক ভাবনায় চিত্র নিম্নরূপ। যদি তাদের কুশলাদির কথা জিজ্ঞেস করা হয়- তাহলে হয়তো উত্তরে বলবেন ভালো আছেন, আলস্নাহপাক ভালো রেখেছেন, আল হামদুলিলস্নাহ ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থাৎ একটা ইতিবাচক উত্তর পাওয়া যাবে। এটা স্বভাবত সাধারণ খেটে খাওয়া প্রান্তিক শ্রমিক ও কৃষক মানুষের জন্য প্রযোজ্য হয়ে থাকে অর্থাৎ খেটে খাওয়া শ্রমিক মানুষের জীবন হচ্ছে সহজ সরল ও অনাড়ম্বর। তারা কোনো দ্বন্দ্ব সংঘাত, সহিংসতা বুঝে না, হানাহানি দাঙ্গা-হাঙ্গামা বুঝে না। তারা হন অত্যন্ত সজ্জন ও নিরিবিলি প্রকৃতির মানুষ। তারা সততা ও সরলতার মূর্ত প্রতীক। তাদের দু'বেলা দু'মুঠো ভাতই শান্তি ও সুখ। তার বেশি তাদের চাহিদা থাকে না। আর বেশি চাহিদা সম্পন্ন মানুষরা কেমন আছেন প্রশ্ন করলে তাদের উত্তর হবে একটু ঘোরানো বাঁকা প্রকৃতির- অর্থাৎ স্বাভাবিক ভালতে তাদের মন ভরে না- শান্তি আসে না, সুখ আসে না। স্বাভাবিক ভালো থাকায় যেন তাদের পরিতৃপ্তি হয় না। তাদের আরও বেশি বেশি চাই আর বেশি বেশি খাই শুধুই এ ভাবনা। আর সে ভাবনা থেকেই তারা অস্থির থাকেন আর পরিবেশকে অস্থির ও অস্থিতিশীল করে তোলেন। সে পরিবেশ কিসের পরিবেশ? যদি উলেস্নখ করি, তাহলে বলা যায়। বাজারের পরিবেশ, নদীর পরিবেশ, স্বাস্থ্যের পরিবেশ, শিক্ষার পরিবেশ, বাসস্থানের পরিবেশ, দারিদ্র্যতার পরিবেশ ইত্যাদি ইত্যাদি আরও কত কিছু। যেমন- হাটাবাজার পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। তারা সিন্ডিকেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণের নামে বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তোলে। অন্যান্য সেক্টরের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যেমন- যোগাযোগ ও সড়ক পথের পরিবেশে যোগাযোগ সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি রমরমা অবস্থা। তারা মত্ত থাকেন চাঁদা কালেকশন নিয়ে। তারা এটাকে অর্থনীতির প্রবাহ বলে চালিয়ে থাকেন। এটা তাদের একটা কৌশলগত দিক। অর্থনীতির চাকা যদি এরকম কোনো অনিয়ম বা চাঁদাবাজিতে সচল হয়ে থাকে তাহলে অর্থ শাস্ত্রেও সব শাস্ত্রীয় কথাবার্তা আজ মিথ্যা বলে প্রতীয়মান হবে। আমি ভূমিকাতে দুটো সেক্টরে প্রসঙ্গ টেনেই অন্য আলোচনায় যেতে চাচ্ছি। তার পূর্বে এটুকু পরিষ্কার করতে চাই- তা হচ্ছে আমাদের অনেকেই রাজনীতির নামে বা রাজনীতির মুখোশ পরে আপনাদের মতো সাধারণ মানুষের কাছে এসে থাকেন। আপনাদের সহজ সরল মানসিকতাকে পুঁজি করে আপনাদের বোকা বানাতে একেকজন বড় রকমের কেতাদূরস্ত সাজ নিয়ে আবির্ভাব ঘটে। মনে হয় যেন একেকজন বড় মাপের পন্ডিত। আপনাদের ভালো থাকার জন্য ভেলকিবাজি ফন্দি বাজি আশ্রয় নিয়ে আপনাদের লুটপাট, শাসন শোষণ এবং হয়রানিসহ কিনা হয়ে থাকে। কাজেই সাধু সাবধান। এই ভেলকিবাজির ফাঁদে পা দেবেন না। তারা ফন্দিবাজি দিয়ে সাধারণ মানুষকে সর্বহারা করে তোলেন। আর সর্বহারা মানুষরাও তাদের লোভে পড়ে মোহগ্রস্ত ও বিভ্রান্তিতে পড়ে থাকেন। এরা হলো সুবিধাভোগী তকমা ধারী লোক তেল ঝাঁল ও গরম মসলার গরম নেতা তারা। মুখরোচক ভাষায় তাদের জুরি মেলা ভার। তবে তাদের এ সুন্দর কথায় সমাজের আর যাই হোক সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন আসবে না। তারা ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের কারিগর। তারা তাদের স্বার্থ ও সুবিধার জন্য এহেন কিছু নেই- যা তারা করতে পারে না। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অনন্য দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। লাখো মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে মহান নেতা শেখ মুজিব বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, 'রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব- ইনশাআলস্নাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা'। বঙ্গবন্ধুর এ বলিষ্ঠ ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। এ ভাষণের মধ্য দিয়ে তৎকালীন সাড়ে ৭ কোটি মুক্তিকামী বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইতোমধ্যেই বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে এসে জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন যে আজ আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে। আজ দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবে না। দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, বাংলার মাটি থেকে দুর্নীতি উৎখাত করতে হবে। দুর্নীতি বাংলার কৃষক করে না। দুর্নীতি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ করে না। এ দেশে দুর্নীতি করে সাধারণ মানুষের টাকা দিয়ে শিক্ষিত হওয়া সমাজ। আজ আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। সে জন্য কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন আছে। আমাদের শ্রমিকরা খারাপ নয়। তারা কাজ করতে চায়। তারা উৎপাদন বাড়াতে চায় কিন্তু কেউ কেউ আমরা তাদের কাজে বাধা সৃষ্টি করি। আমরা অনেকেই ষড়যন্ত্র করি। আমরা সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিই। তাদের সম্পদাদি লুটপাট করে খায়। যারা বাংলার মাটি থেকে বিদেশে মালামাল চালান দিয়ে চোরা কারবারি মাধ্যমে দুর্নীতি করে তাদের এভাবে চলতে দেয়া যায় না। তাই মানসিক দৃষ্টিভঙ্গিও পরিবর্তন আবশ্যক। আমাদের নতুন জীবনবোধ সৃষ্টি করতে হবে। উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে হবে। মানুষকে মোবিলাইজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাংলার মানুষ খুবই ভালো। বাংলার মানুষের মতো মানুষ কোথাও নেই। বাংলায় যত গোলমাল ও অনাসৃষ্টি তা শুধু বাংলা তথাকথিত শিক্ষিত সমাজেরই। যত অঘটনের মূল তারাই। তাই তিনি পরিবার পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন এবং সমবায়ের প্রতি জোর দিতে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, দুর্নীতি ঘুষ, চোরাকারবারি, মুনাফাখুরির বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের সংগ্রাম করতে হবে। আমাদের জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাঙালি জাতি যে প্রাণ, যে অনুপ্রেরণা নিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম করেছিল। সে প্রাণ, সে অনুপ্রেরণা, সে আদর্শ, সে মতবাদকে নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। চার স্তম্ভকে সামনে রেখে আমাদের সংবিধান রচনা করতে হবে। যেখানে মানুষের অধিকারের কথা লেখা থাকবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ জনগণের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে এবং এ সংবিধানের ভর করে দুনিয়ার সভ্য দেশের মানুষের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। বাংলাদেশের রাজনীতির লক্ষ্য হবে সাধারণ মানুষের কল্যাণ সাধন করা। তেলের মাথায় তেল দেওয়া নয়। গ্রামীণ অর্থনীতিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুও তাই বলেছেন যে, গ্রামে আমরা বেশি করব। অবকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু করে বিদু্যৎ, রাস্তাঘাট ও কর্মসংস্থানের কথা তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন এবং উন্নয়ন কৌশলপত্রে সেটাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছিলেন। \হশেখ মুজিব দেশের বহু আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন ও অনুসরণ করেছেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জোট নিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলনে চলে গেছেন। চীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রম্নতা করা সত্ত্বেও বেইজিংয়ের দিকে মৈত্রীর হাত বাড়িয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে শেখ মুজিবুরের টি ডিপেস্নাম্যাসি নামে খ্যাত মৈত্রীর হাত বাড়ানোর নীতি অধিকাংশ আরব দেশকে এই বলে আশ্বস্ত করেছিল যে, তিনি সংগ্রামী আরব স্বার্থের বন্ধু পাকিস্তানের ভুট্টোকেও তিনি বিপজ্জনক ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। শুধুমাত্র ওই দেশটির সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তখনকার দিলিস্ন-মস্কোর জোটের সমর্থন ও সাহায্যপ্রাপ্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও তিনি মার্কিন নিক্সন কিসিঞ্জার প্রশাসনের আরও বৈরিতা সৃষ্টির মতো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ভারতের ইন্দিরা সরকারের সঙ্গে তিনি যে মৈত্রী গড়ে তুলেছিলেন তা ছিল কিংবদন্তি মৈত্রীতুল্য। একটি বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশীর দ্বারা তিন দিক থেকে পরিবেষ্টিত থাকা অবস্থায় কীভাবে একটি ছোট দেশ তার আত্মমর্যাদা, স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে বড় দেশটির সঙ্গে সমান মর্যাদার ভিত্তিতে মৈত্রী সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। তার ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। তার মুখের এক কথায় স্বাধীন বাংলাদেশের বয়স তিন মাস না হতেই ভারতীয় সৈন্য বাংলার মাটি চলে গেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছবার পর বঙ্গবন্ধু তার প্রথম ভাষণে ঘোষণা করেছিলেন, 'আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই যে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি বিশেষ কোনো ধর্মীয় ভিত্তিতে হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, হিন্দু, মুসলমান সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে'। স্বাধীনতার সংগ্রাম কখনো শেষ হয় না। নতুন নতুন পরিস্থিতিতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ বা হুমকি মোকাবিলা করার জন্য নতুনভাবে সংগ্রাম শুরু করার জন্য সংগ্রাম শুরু করতে হয়। তাই সব প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে প্রতিহত করে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে পরিণত করার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন, সেই স্বপ্নকে যে কোনো মূল্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ হোক আজ আমাদের অঙ্গীকার। ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি, কলামিস্ট ও গবেষক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে