শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন

আরিফে সন্দেহ বিএনপির, বাবরুল চমকের অপেক্ষা

কাইয়ুম উল্লাস, সিলেট
  ১৭ মে ২০২৩, ১০:০৬
আরিফে সন্দেহ বিএনপির, বাবরুল চমকের অপেক্ষা

বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ঘিরেই আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের চমক অপেক্ষা করছে। তার একটি সিদ্ধান্তে পাল্টে যেতে পারে সভ হিসেব-নিকেশ। আরিফ নির্বাচনে আসবেন নাকি সরে দাঁড়াবেন এ বিষয়টি সুরাহার ওপর নির্ভর করছে এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী হালহাল। তবে এখুনি খোলাসা করতে চান না মেয়র আরিফ। আরিফের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মেয়র আরিফ সিসিক নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী। সিলেট নগরের কিছু বিশিষ্টজন তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহ যোগাচ্ছেন। এমনকি বর্তমান একাধিক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদেরও তার প্রতি নীরব সমর্থন রয়েছে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সম্প্রতি লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন মেয়র আরিফ। কিন্তু তারেক রহমান তাকে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে শেষ মুহূর্তে একটি ‘সিগন্যাল’ দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন তারেক রহমান। এটি নির্বাচন করার নাকি সরে দাঁড়ানোর তা একমাত্র তারেক রহমানই জানেন।

এদিকে, আরিফ সিসিক নির্বাচনে অংশ নেন- এটা মেনে নিতে পারছেন না সিলেট মহানগর বিএনপি নেতারা। তারা একটি বিবৃতি দিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপির নেতারা যেন সিসিক নির্বাচনে অংশ না নেন। কারণ, তারা দলের গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে একাট্টা। কোনো ‘প্রহসনের নির্বাচনের’ পক্ষে নন। অবশ্য, আরিফ মহানগর বিএনপির নেতাদের নিয়ে বেশি ভাবছেন না। তিনি তারেক রহমানের সিগন্যাল ও সিলেট নগরীর বিশিষ্টজনদের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছেন। তবে তারেক রহমানের সংকেতের পাশাপাশি প্রশাসনের নিরপেক্ষতাও নিশ্চিত করতে চাইছেন আরিফ।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ইভিএম পদ্ধতিতে সিসিক নির্বাচনে ভোট হলে আরিফের পরাজয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আগে থেকেই আরিফকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। তবে বিএনপির একটি অংশ চাইছে, আরিফকে সরিয়ে প্রহসনের নির্বাচনে সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান জামানকে প্রার্থী করতে। জামান জিতলে দলীয় বিজয় আসবে, আর হারলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে। সেজন্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগকৃত এই নেতাকে বেছে নিয়েছে দলটি।

আরিফের ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, দলের কৌশলের ভিন্নপথে হাঁটছেন আরিফ। শেষ মুহূর্তে ব্যক্তিগত কৌশলেই আরিফ প্রার্থী হতে পারেন। আরিফ এখন কৌশলগত কারণে প্রার্থিতা ঘোষণা করছেন না। তিনি নির্বাচনের আগে কোনো হয়রানির শিকার হতে চাচ্ছেন না। তাই তিনি কৌশলী লড়াইয়ে নীরবে ও গোপনে নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। প্রশাসন যদি সিসিক নির্বাচনে পক্ষপাতমূলক দিকে মোড় নেয়, তবে আরিফ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন। সে ক্ষেত্রে তিনি তার বিকল্প হিসেবে পৌরসভার সাবেক মেয়র বাবরুল হোসেন বাবুলকে সমর্থন দিয়ে নতুন কৌশলে মাঠে নামতে পারেন। এরই মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে আমেরিকা থেকে সিলেটে এসেছেন সাবেক পৌর মেয়র বাবরুল হোসেন বাবুল। তাই আরিফ বিকল্প পথ সামনে রেখেই সিসিক নির্বাচনে কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছেন।

এসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা অতি উৎসাহী হয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। ব্যাপক ধরপাকড় করা হচ্ছে। অনেক কর্মকর্তাকে বদলিও করা হচ্ছে। এগুলো নির্বাচনকে প্রভাবিত করারই ইঙ্গিত। যদি আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াই তাহলে বুঝতে হবে প্রশাসনের কিছু অতি উৎসাহী কর্মকর্তার কর্মকাণ্ডের প্রতি সন্দেহ গভীর রূপ নিয়েছে।’

ইভিএম নিয়ে সমালোচনা করে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ইভিএমের সঙ্গে নগরের মানুষজন একেবারেই অপরিচিত। নির্বাচনের ছয় মাস আগে ইভিএম সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল। অথচ ভোটাররা এখনো পর্যন্ত ইভিএম সম্পর্কে কিছুই জানে না। ইভিএমে ভোট স্বচ্ছ হবে না। কারসাজি করা হবে।’

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে