রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন সম্ভব : বিএনপি

যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ মে ২০২৫, ০০:১৫
আপডেট  : ২৫ মে ২০২৫, ০০:২২
ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন সম্ভব : বিএনপি
ছবি : যায়যায়দিন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে যাওয়ার উপায় হল নির্বাচন।

নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে হবে কেন? ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন সম্ভব, এটা আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি।’

1

শনিবার (২৪ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পৌঁছায় দলটির প্রতিনিধিদল।

প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলটি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বৈঠকের বিষয়বস্তু আগে জানানো হয়নি উল্লেখ করে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে আলোচনার বিষয়বস্তু আগে জানানো হয়নি। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমরা যা আন্দাজ করতে পেরেছিলাম, তার ওপর ভিত্তি করে আমরা একটা লিখিত বক্তব্য নিয়ে এসেছিলাম।

আমরা সেটি তাকে (ড. ইউনূস) দিয়েছি। আমরা ওই লিখিত বক্তব্যের আলোকে কথা বলেছি।’

লিখিত বক্তব্যের সারাংশ তুলে ধরে ড. মোশাররফ আরও বলেন, ‘বিএনপি প্রথম থেকেই একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবি করে আসছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে। বিএনপির প্রতিটি নেতা–কর্মী পারিবারিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

এ জন্য আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি সবচেয়ে বেশি বিএনপির। এই বিচারপ্রক্রিয়া কোনোভাবে অসম্পন্ন থেকে গেলে বিএনপি সরকারে গেলে তা বিচারের আওতায় এনে স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিষয়ে সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে শেষ করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের দাবি আমরা জানিয়েছি।

বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বাস করে, একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে।’

নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশে স্বৈরাচার ফিরে আসার সম্ভাবনা বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যত বেশি বিলম্ব করা হবে, আমরা মনে করি জাতির কাছে আবারও স্বৈরাচার ফিরে আসার সম্ভাবনা তত বেশি বাড়বে। আর এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্টদের উপরেই বর্তাবে।’

গুজবের বিষয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বিএনপি কখনো প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায়নি, বরং শুরু থেকেই সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে।’

বৈঠকে তিনটি প্রধান বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন, বিচারকার্য এবং নির্বাচন সংস্কার নিয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন। সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া এবং বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

বৈঠকের ফলাফল নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এখনই আমাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় আসেনি। যে আলোচনা হয়েছে তা উনারা প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জানাবে। তারপরে আমরা প্রতিক্রিয়া জানাতে পারব।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, ‘বৈঠকে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সংস্কারের বিষয়ে তারা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।’

খসরু বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়ে আমরা তাদের সঙ্গে একমত হয়েছি। আর সংস্কারগুলো ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই হবে। আর এটা খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে। এখানে কোনো দ্বিমত পোষণ করা হয়নি। নির্বাচনের বিষয়ে এমন কথাও হয়েছে, চাইলে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে