মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। ১৩ জুন (শুক্রবার) ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার পর থেকে শুরু হওয়া এই পাল্টাপাল্টি আক্রমণ তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে পুরো অঞ্চলজুড়ে।
প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা 'নিশ্চিহ্নের' দাবি যুক্তরাষ্ট্রের; 'যুদ্ধ এখন শুরু', ঘোষণা তেহরানের ইরানে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর ইরানের অভিজাত রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ঘোষণা করেছে, 'যুদ্ধ এখনই শুরু'।
ট্রাম্প পোস্টে লেখেন, 'আমাদের অসাধারণ আমেরিকান যোদ্ধাদের অভিনন্দন।' তিনি আরও লেখেন, এখন 'শান্তির সময়'।
হামলার পর হোয়াইট হাউসে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো, বিশেষ করে ফর্দো, 'নিশ্চিহ্ন' হয়েছে। তিনি একে 'চমৎকার সামরিক সাফল্য' হিসেবে বর্ণনা করেন।
ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, তেহরানকে এখন 'শান্তি প্রতিষ্ঠা করতেই হবে, নাহলে ভবিষ্যতের আরও ভয়াবহ হামলা হবে।'
ট্রাম্প বলেন, 'এখন হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য এটা হবে এক ভয়ঙ্কর ট্র্যাজেডি। মনে রাখবেন, এখনও বহু লক্ষ্যবস্তু বাকি আছে। যেগুলোয় আঘাত হানা হয়েছে, সেগুলো ছিল সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে প্রাণঘাতী।'
'যদি দ্রুত শান্তি না আসে, তাহলে আমরা বাকি লক্ষ্যবস্তুগুলোর দিকে নিখুঁত ও দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত অগ্রসর হবো', যোগ করেন তিনি।
এদিকে শীর্ষ মার্কিন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, ট্রাম্প 'সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন'।
তিনি বলেন, 'তেহরান সরকার এটা প্রাপ্য ছিল। ভালো করেছেন, প্রেসিডেন্ট।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার প্রিয় নাগরিকদের উদ্দেশে বলছি: আমাদের আছে বিশ্বের সেরা বিমান বাহিনী। আমি গর্বিত।'
অন্যদিকে শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা হাকিম জেফরিস বলেছেন, ট্রাম্প 'দেশকে ভুল পথে পরিচালিত করেছেন'।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবেন। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এখন যুদ্ধের ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে এবং আমি প্রার্থনা করি যেন ওই অঞ্চলে থাকা আমাদের সেনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়, যাদের এখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলে দেওয়া হয়েছে।'
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার সেনা মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন রয়েছে।
আইআরজিসি জানিয়েছে, এই হামলা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা সংঘাতকে আরও উসকে দিয়েছে, যা এখন কেবল সংঘর্ষ নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে পুরোপুরি একটি যুদ্ধের রূপ নিয়েছে।
ইউরো নিউজ