শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লঙ্কান স্পিনে মহাবিপদে উইন্ডিজ

যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১৪:১৬

গলে শ্রীলঙ্কার স্পিনের যেন জবাব খুঁজে পাচ্ছে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বড় লক্ষ্য তাড়ায় অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছে ক্যারিবিয়ানরা। বড় জয়ের আশা জাগিয়েছে শ্রীলঙ্কা। সিরিজের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিন ৩৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৮ রানেই ৬ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। হয়তো ম্যাচ শেষ হয়ে যেতে পারত চার দিনেই। আলোকস্বল্পতায় খেলা গড়িয়েছে শেষ দিনে।

জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার অপেক্ষা আর ৪ উইকেটের। চতুর্থ দিন শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৫২ রান। এখনও তাদের প্রয়োজন ২৯৬ রান। বৃষ্টি আর আলোকস্বল্পতায় তৃতীয় ও চতুর্থ দিনে নষ্ট হয়েছে অনেকটা সময়। শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা যেভাবে টার্ন ও বাউন্স পাচ্ছেন, শেষ দিনে প্রকৃতির সহায়তা ছাড়া ম্যাচ বাঁচানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ভীষণ কঠিন!

গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের প্রায় দুই সেশন বৃষ্টিতে ভেসে যায়। বুধবার চতুর্থ দিনেও বৃষ্টির বাগড়ায় খেলা শুরু হয় এক ঘণ্টা দেরিতে। প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ উইকেট তুলে নিতে লঙ্কানদের ১৫ মিনিটের বেশি লাগেনি। শেষটিসহ ৪০ রানে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার প্রাভিন জয়াবিক্রমা।

ক্যারিবিয়ানদের ২৩০ রানে থামিয়ে স্বাগতিকরা প্রথম ইনিংসে পায় ১৫৬ রানের বড় লিড। পরে তারা দ্রুত ৪ উইকেটে ১৯১ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে দাঁড়ায় বড় লক্ষ্য।

প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান দিমুথ করুনারত্নে দ্বিতীয় ইনিংসেও জাগান তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আশা। কিন্তু আউট হয়ে যান ১৭ রান দূরে থাকতে, রাকিম কর্নওয়ালের বলে কাট শট খেলার চেষ্টায় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ১০৪ বলে ৯ চারে গড়া তার ৮৩ রানের ইনিংসটি। এ বছর টেস্ট ক্রিকেটে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লঙ্কান অধিনায়কের টানা ষষ্ঠ পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস এটি।

৮৪ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৬৯ রানের ইনিংস খেলেন সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০ ইনিংসে অবশেষে ফিফটি করতে পারলেন তিনি। শেষ সেশনে রান তাড়ায় নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নতুন বলে দুই প্রান্ত থেকে স্পিন দিয়ে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। চতুর্থ ওভারে মেন্ডিসের বলের লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ হন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। একবার জীবন পেয়েও টেকেননি জার্মেইন ব্ল্যাকউড। মিড অনে ক্যাচ দেন তিনি লাসিথ এম্বুলদেনিয়ার বলে। বাঁহাতি এই স্পিনার পরে বোল্ড করে দেন রোস্টন চেইসকে।

মাঝে শেই হোপকে বোল্ড করা মেন্ডিস নিজের পরের ওভারে টানা দুই বলে কাইল মেয়ার্স ও জেসন হোল্ডারকে ফিরিয়ে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। শেষ পর্যন্ত যদিও তা হয়নি। তখন ১৮ রানে নেন ৬ উইকেট। টেস্টে এটিই ক্যারিবিয়ানদের সবচেয়ে কম রানে ৬ উইকেট হারানোর ঘটনা। ১৯৫৬ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তারা ২২ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছিল।

পঞ্চাশের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এনক্রুমা বনার ও জশুয়া ডি সিলভার ব্যাটে সেই শঙ্কা এড়াতে পারে তারা। শেষ দিনে তারা একশর আগে অলআউট হওয়া ঠেকাতে পারেন কি-না, সেটিই এখন দেখার। দিন শেষে বনার ১৮ ও জশুয়া ১৫ রানে অপরাজিত আছেন। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেওয়া মেন্ডিস এবার ১৭ রানে নিয়েছেন ৪টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩৮৬

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৮৫.৫ ওভারে ২৩০ (আগের দিন ২২৪/৯) (জশুয়া ১৫*, গ্যাব্রিয়েল ২; লাকমল ৬-১-১০-১, চামিরা ৮-০-১৪-০, এম্বুলদেনিয়া ৩২-১১-৬৭-১, জয়াবিক্রমা ১৯.৫-৬-৪০-৪, মেন্ডিস ১৭-১-৭৩-৩, ধনাঞ্জয়া ৩-০-১১-১)

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৪০.৫ ওভারে ১৯১/৪ ডিক্লে: (নিসানকা ৩, করুনারত্নে ৮৩, ওশাদা ১৪, ম্যাথিউস ৬৯*, ধনাঞ্জয়া ১, চান্দিমাল ১০*; কর্নওয়াল ১৫.৫-০-৬০-২, হোল্ডার ৫-০-১৯-০, চেইস ৬-১-২৮-০, ওয়ারিক্যান ৯-১-৪২-২, গ্যাব্রিয়েল ৪-০-২৩-০, ব্র্যাথওয়েট ১-০-৯-০)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৪৮) ২৫.৩ ওভারে ৫২/৬ (ব্র্যাথওয়েট ০, ব্ল্যাকউড ৯, বনার ১৮*, হোপ ৩, চেইস ১, মেয়ার্স ২, হোল্ডার ০, জশুয়া ১৫*; এম্বুলদেনিয়া ১০-৩-১৮-২, মেন্ডিস ১১-১-১৭-৪, জয়াবিক্রমা ৪-২-৮-০, ধনাঞ্জয়া ০.৩-০-৫-০)।

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে