যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আসর বসবে। আর ওই আসরে খেলবে প্রথমবারের মতো ৪৮টি দল। তার একটি হচ্ছে ইরান। ইতিমধ্যে ফুটবলের এই মেগা আসরে খেলার জন্য ছাড়পতও পেয়ে গেছে এশিয়ার দলটি। তবে মাঠের লড়াই জিতে বিশ্বকাপের টিকিট পেলেও এখন তাদের সামনে এক অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিপক্ষ রাজনীতি ও ভিসা জটিলতা।
আর ২০২৬ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করবে তিনটি দেশ— যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। ফাইনালসহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হবে যুক্তরাষ্ট্রে। আর এখানেই শুরু হয়েছে সমস্যা। ওয়াশিংটনের কড়া ভিসা নীতি, সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা এবং ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্ব একত্রে জটিল করে তুলেছে ইরানের বিশ্বকাপ যাত্রা।
চলতি বছরের মার্চে উজবেকিস্তানের সঙ্গে ড্র করে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ইরান। কিন্তু ভিসা না পেলে যুক্তরাষ্ট্রে নকআউট পর্বে খেলাই অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়াবে। আর এমন পরিস্থিতিতে ফিফা ও আয়োজকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
বিশ্বকাপের সূচি অনুযায়ী, ইরান যদি ‘গ্রুপ এ’-তে পড়ে, তাহলে প্রাথমিক ম্যাচগুলো হতে পারে মেক্সিকোতে। কিন্তু শেষ ষোলোতে গেলে ম্যাচ পড়বে যুক্তরাষ্ট্রে-যেখানে ভিসা পাওয়া দারুণ কঠিন হয়ে দাঁড়াবে ইরানি খেলোয়াড়দের জন্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল আছে ১২টি দেশের ওপর, যার মধ্যে রয়েছে ইরান। যদিও ক্রীড়াজগতের জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, এখনো নিশ্চিত কিছু নয়।
ইতিহাস বলছে, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক টানাপোড়েনে আগে রাশিয়া ও যুগোস্লাভিয়া যেমন নিষিদ্ধ হয়েছিল ইরানের ক্ষেত্রেও তেমন কিছু ঘটতে পারে কি না তা নিয়েই শঙ্কা ফুটবলমহলে।
শুধু জাতীয় দল নয়, ভিসা সমস্যা তাড়া করছে ক্লাব ফুটবলেও। ইন্টার মিলানের ইরানি স্ট্রাইকার মেহদি তারেমি ক্লাব বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকলেও ভিসা জটিলতায় যুক্তরাষ্ট্রে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি। ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তা সত্ত্বেও তাকে তেহরান থেকে বের করে আনা যায়নি।
এখনও পর্যন্ত ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো কিংবা মার্কিন প্রশাসন কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করলে বিশ্বকাপে ইরানের উপস্থিতি আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছেই।