আন্তর্জাতিক ফুটবলে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অভিষেক হয়। তারপর থেকে কখনো বাহরাইনের মুখোমুখি হয়নি। ২০২৬ এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দুই দেশ একই গ্রুপে পড়ায় আজ রোববার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় এশিয়ার দলটির বিপক্ষে প্রথমবারের মতো দেখা হতে যাচ্ছে আফঈদা-ঋতুপর্ণাদের।
আজ রোববার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাহরাইনের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার প্রত্যাশা করছেন আফঈদা-ঋতুপর্ণারা বাছাইপর্ব পেরিয়ে মূলপর্বে খেলবে।
ম্যাচের আগের দিন শনিবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে কোচ বাটলার বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জন্য পথটা মসৃণ নয় মোটেও। আমরা একটা প্রকল্পের মধ্যেই তিনটা চালাচ্ছি। জাতীয় দল, অনূর্ধ্ব-১৭ ও ২০ দল। আমাদের সুযোগ-সুবিধা কম। এ কারণেই তিনটা গ্রুপের কার্যক্রম একসঙ্গে চলছে। সিনিয়র দলে ৫০ শতাংশ খেলোয়াড়ই অনূর্ধ্ব-২০ বছর বয়সি।’
দলের উন্নতি ও কোয়ালিফাই করার প্রসঙ্গে বাটলার বলেন, ‘আমাদের যে বাছাই পেরুনোর সুযোগ আছে, সেটা আমি উড়িয়ে দিচ্ছি না। বাংলাদেশ কখনই কোয়ালিফাই করেনি, তবে আমরা ইতিবাচক আছি। নতুনরা দারুণ উন্নতি করছে। বিষয়টি আমি খুবই ইতিবাচকভাবে দেখছি।
আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে। একটার পর একটা ধাপ পেরুনোর মধ্য দিয়েই ভিত তৈরি হয়। যদি মেয়েরা তাদের সেরাটা দিতে পারে, তাহলে আমরা কোয়ালিফাই করতে পারি।’
মিয়ানমারে আসার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুটি ম্যাচ হারলেও জর্ডানে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে ড্র করেছে বাংলাদেশ। বাটলারের চোখে তাদের উন্নতিটাও স্পষ্ট, যেকারণে রিপা-মনিকাদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি।
বাটলার বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতে একেবারেই তরুণদের নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেক কিছু শিখেছে মেয়েরা। ইন্দোনেশিয়া ও জর্ডানের বিপক্ষে ড্র আমাদের জন্য একটা বেঞ্চমার্ক। এই সফরগুলো আমাদের দেখিয়েছে আমরা কোথায় আছি, কী করতে পারি।’
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ‘সি’ গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ যেখানে তাদের বাকি তিন প্রতিপক্ষ মিয়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান। এশিয়ান কাপের মূলপর্ব আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে জায়গা পেতে হলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হবে বাংলাদেশকে। ‘সি’ গ্রুপে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান (১২৮) পেছনে কেবল তুর্কমেনিস্তান (১৪১)। বাহরাইনের (৯২)এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (৫৫)।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রুপের অন্য প্রতিপক্ষকে বেশ সমীহ করেই কথা বলেছেন বাটলার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ফুটবলে আপনি কোনো দলকে খাটো করে দেখতে পারেন না। যেকোন দলই আপনার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। মিয়ানমার শক্তিশালী, বাহরাইনও শারীরিকভাবে শক্তিশালী এবং তরুণ দল, উন্নতিও করছে। আমি মনে করি, কোন দলকে উপেক্ষা করা ঠিক হবে না।’
অপরদিকে বাহরাইন র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের থেকে এগিয়ে। তাদের কোচ মোহাম্মেদ আদনান হুসেইনও জয়ের প্রত্যাশা নিয়েই আছেন। সবশেষ তিন ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ড্র ও সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের প্রসঙ্গ টেনে সংবাদ সম্মেলনে
বাহরাইন কোচ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো। অল্প সময় অনুশীলন করেছি, ম্যাচও খেলেছি তিনটা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি ও সৌদি আরবের বিপক্ষে একটি। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ যে আমরা এখানে আসতে পেরেছি। অভিজ্ঞ ও নবীনদের মিলিয়েই আমাদের দল। আশা করি, ভালো কিছু মেলে ধরতে পারব।’