ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কালস্নাকুরিচি জেলায় বিষাক্ত মদ পানে ৩৭ জনের মৃতু্য হয়েছে। গত কয়েকদিনে বিষাক্ত মদ পানে অসুস্থ হয়ে আরও অন্তত ৫৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই থেকে কালস্নাকুরিচি জেলা প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। মৃত ও অসুস্থদের বেশিরভাগই জেলার করুণাপুরম এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক অবৈধ মদ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার এবং আরও দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি, বিবিসি
অসুস্থদের মধ্যে অনেকেই অত্যাধিক ডায়রিয়া, ক্লান্তি, ঘন ঘন বমি ও বমি বমি ভাব, পাকস্থলীতে ব্যথা চোখে জ্বালাপোড়াসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সামনে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বিষাক্ত মদ বিক্রির অভিযোগে এরই মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে তামিলনাড়ু পুলিশ। সেই সঙ্গে কালস্নাকুরুচি পুলিশের যে শাখা রাজ্যের মদের বাণিজ্য নজরদারিতে রাখার দায়িত্বে ছিল, সেই শাখার একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ও ১০ পুলিশ সদস্যকে চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মদ বিক্রির লাইসেন্স বা বৈধতাপত্র নেই- এমন বিক্রেতারা প্রায় সময়ই তাদের পণ্যের তেজ বাড়ানোর 'মিথানল' নামের একটি রাসায়নিক মেশান। এটি খুবই উচ্চমাত্রার বিষাক্ত অ্যালকোহল। বিশুদ্ধ মিথানল সামান্য মাত্রায় গ্রহণ করলেও তা অন্ধত্ব, যকৃৎ অকার্যকর এমনকি মৃতু্য পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
লাইসেন্সবিহীন মদ বিক্রেতারা অনেক কম দামে তাদের পণ্য বিক্রি করেন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রতি বছর বিষাক্ত মদপানে বহু মানুষের মৃতু্য হয়। এই মৃতদের অধিকাংশই হতদরিদ্র। এই শোচনীয় ঘটনাটিকে গোয়েন্দা সংস্থা এবং নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগকারী শাখার একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত বছরও তামিলনাড়ুতে বিষাক্ত মদ পানে ২২ জনের মৃতু্য হয়েছিল।
এদিকে, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং প্রত্যেক অসুস্থের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্স'-এ এক বার্তায় এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'যারা অবৈধ মদ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, তাদের পুরো চক্রকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। এরই মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'