ইউক্রেনের একটি আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে তিনজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অর্ধশত মানুষ। শনিবার রাতে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম খারকিভ শহরে ওই হামলা চালানো হয়। তথ্যসূত্র : এএফপি
গত মাসে নতুন করে অভিযান শুরু পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ অঞ্চলে আক্রমণ আরও জোরদার করেছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় শনিবার খারকিভ শহরের একটি পাঁচতলা আবাসিক ভবনে রাশিয়ার হামলায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। জরুরি বিভাগের কর্মীরা ঘোষণা দিয়েছেন, স্থানীয় সময় রোববার সকালেই উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। এক 'টেলিগ্রাম' পোস্টে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার বোমা হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও ৫৩ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন শিশুও রয়েছে।
এর আগে শনিবার ইউক্রেনের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে জ্বালানি অবকাঠামোতে বড় ধরনের হামলা চালায় রাশিয়া। জাপোরিঝিয়া এবং লভিভ অঞ্চলে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর অনেক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। হামলায় দুই কর্মচারী আহত হয়েছেন এবং তাদের জাপোরিঝিয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইউক্রেন বলছে, গত তিন মাসে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামোতে অষ্টমবারের মতো বড় ধরনের হামলার ঘটনা এটি। দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের বিদু্যৎ উৎপাদনকেন্দ্রগুলো পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে।
দোনেৎস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সেলিডোদের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান হামলায় দুইজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। আঞ্চলিক গভর্নর ওই অঞ্চল থেকে লোকজনদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা আরও জানায়, চাসিভ ইয়ার শহর ও এর আশপাশের পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। রাশিয়া ক্রমাগত সামনের দিকে এগোচ্ছে ও ব্যাপক সম্মুখ আক্রমণ করছে।
এদিকে, পূর্ব ইউক্রেনের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর চাসিভ ইয়ার চারপাশে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ। শহরটিকে রক্ষা করতে নিয়োজিত ইউক্রেনীয় সামরিক ইউনিট এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের ২৪তম যান্ত্রিক ব্রিগেডের কর্মকর্তারা জানান, তাদের চাসিভ ইয়ার শহরে পাঠানো হয়েছে। কারণ, রাশিয়া সেখানে তুমুল আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
চাসিভ ইয়ার শহরটি বাখমুতের পশ্চিমে অবস্থিত এবং এর কাছাকাছি আভদিভকা শহর। এই শহরটিতে গত এক দশক ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। শহরটি রাশিয়ার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ২০১৪ সালে শহরটির কিছু অংশ মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দখলে নিয়েছিল। কিন্তু পরে ইউক্রেনীয় সেনারা সেটার নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়। ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২০২৩ সালে ফেব্রম্নয়ারিতে মস্কো আবারও শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।