শেষপর্যন্ত জামিন পেলেন না ভারতের রাজধানী দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মঙ্গলবার দিলিস্নর রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ফলে আপাতত তিহার জেলেই থাকতে হচ্ছে কেজরিওয়ালকে। তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ
আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিকে গ্রেপ্তার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। গত বৃহস্পতিবার দিলিস্নর রাউস অ্যাভিনিউ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করে। এরপর ইডি কেজরির জামিন ৪৮ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল। যা গ্রাহ্য হয়নি। বিচারক ন্যায় বিন্দু মুখ্যমন্ত্রী কেজরিকে জামিন দেন। শুক্রবার সকালে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। ইডির আবেদনে সাড়া দিয়ে কেজরিওয়ালের জামিন স্থগিত রাখে দিলিস্ন হাইকোর্ট।
গত শুক্রবার জরুরিভিত্তিতে ইডির মামলা শোনে হাইকোর্ট। তবে শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল। মঙ্গলবার বিচারপতি সুধীর কুমার জৈন এবং বিচারপতি রবীন্দ্র দুদেজার অবকাশকালীন বেঞ্চ রায় ঘোষণার সময় বলে, 'ট্রায়াল কোর্টের এমন কোনো নির্দেশ দেওয়া উচিত হয়নি, যা হাইকোর্টের রায়ের বিপরীত।' একই সঙ্গে উচ্চ আদালত এটাও জানায়, নিম্ন আদালত নির্দেশ দেওয়ার সময় নথি এবং যুক্তি যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেনি। হাইকোর্ট আরও বলেছে, একবার তার (অরবিন্দ কেজরিওয়াল) গ্রেপ্তারিকে চ্যালেঞ্জ করে করা মামলা হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছিল। ফলে এটা কখনই বলা যাবে না যে, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে।
আবগারি মামলায় ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। কিন্তু তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। পরে লোকসভা ভোটের আগে প্রচারের জন্য তাকে অন্তর্র্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছিল। সেই মেয়াদ শেষ হলে আবার তিনি তিহার জেলে ফিরে গিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার আম আদমি পার্টির প্রধানের স্থায়ী জামিন মঞ্জুর হয় রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে।
ইডির আইনজীবী তথা কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু জানান, বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী ইডির পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করে জমা দেওয়া নথিগুলোর যথাযথভাবে বিবেচনা করার কথা ছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের। অথচ সেগুলো পর্যালোচনা না করেই একতরফাভাবে জামিন দেওয়া হয়েছে আপ প্রধানকে। তারপরই দিলিস্ন হাইকোর্টে কেজরির জামিনের বিরোধিতা করে মামলা করে ইডি। শুক্রবার মামলার শুনানিতে এ বিষয়টিই তুলে ধরেন ইডির আইনজীবী। তবে কেজরির আইনজীবী দাবি করেন, তদন্তকারী সংস্থা তার মক্কেলের বিরুদ্ধে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
এরপর দিলিস্ন হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রোববার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সোমবার তার সেই আবেদন আগামী বুধবার পর্যন্ত স্থগিত করে দেয় ভারতের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট সোমবার জানায়, বুধবারের মধ্যে ইডির মামলায় দিলিস্ন হাইকোর্ট কোনো রায় দেয় কি না, তা দেখে নিতে চায় তারা। তারপরই শুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন দেখার বিষয়, এ মামলায় কী রায় দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।