ইসরাইলি অভিযানের পর ফিলিস্তিনের গাজা শহরের শেজাইয়া এলাকায় ধ্বংস্তূপের নিচ থেকে ৬০টির বেশি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া আশপাশের ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক লাশ আটকা পড়ে আছে বলেও এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। গত বুধবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, দুই সপ্তাহ আগে প্রবেশের পর শেজাইয়া এলাকায় তাদের সামরিক অভিযান তারা শেষ করেছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, আনাদলু, রয়টার্স, এএফপি
বৃহস্পতিবার গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, শহরের এলাকাগুলো থেকে ইসরাইলি সেনারা চলে যাওয়ার পর ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা গাজা শহরের শেজাইয়া পাড়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৬০ জনের বেশি মানুষের লাশ উদ্ধার করেছেন। মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'আশপাশের ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো কয়েক ডজন লাশ চাপা পড়ে আছে।' তিনি বলেন, ইসরাইলি বাহিনী আশপাশের ৮৫ শতাংশের বেশি আবাসিক ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে। শেজাইয়া বর্তমানে একটি দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছে, যা বসবাসের জন্য উপযুক্ত নয়। বাসালের ভাষায়, 'ইসরাইলের আক্রমণে অনেক পরিবার আটকা পড়েছে এবং উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
ইসরাইলি আগ্রাসনে নিহত
আরও ৫০ ফিলিস্তিনি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরাইলি বর্বর হামলায় আরও অর্ধশত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৮ হাজার ৩৪৫। এ ছাড়া গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৮৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
গাজা ভূখন্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর করা দুটি 'গণহত্যায়' ৫০ জন নিহত এবং আরও ৫৪ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
'গাজায় প্রবেশ করতে দিন, ইসরাইলকে
চিঠি বৈশ্বিক গণমাধ্যমের
সংবাদ সংগ্রহের জন্য ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করার অনুমতি চেয়ে ইসরাইলের সরকারের উদ্দেশে দেওয়া এক খোলাচিঠিতে স্বাক্ষর করেছে ৬৪টি বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যম। সিএনএন, বিবিসি, এজেন্সি ফ্রান্স-প্রেস (এএফপি), অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসসহ বিশ্বের প্রায় সব প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের নির্বাহী প্রতিনিধি সেই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন।
বৃহস্পতিবার চিঠিটি প্রকাশ করেছে সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও অধিকার আদায় বিষয়ক বৈশ্বিক সংস্থা 'কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস'। সেখানে বলা হয়েছে, 'আমরা, এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ বরাবর এ আহ্বান জানাচ্ছি যে, গাজায় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রবেশ রোধ করতে যেসব বিধিনিষেধ জারি রয়েছে, সেগুলো যত শিগগির সম্ভব তুলে নিন এবং সংবাদ সংগ্রহের জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর কর্মীদের প্রবেশ করতে দিন।'
খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, 'যুদ্ধের ৯ মাস চলছে, কিন্তু এখনো গাজায় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর সংবাদকর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত স্থানীয় সাংবাদিকদের ওপর অসম্ভব চাপ পড়ছে। এই চাপ পুরোপুরি অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য।'