ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নে অবস্থিত ময়না এ সি বোস ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান অরুণের অপসারণের দাবিতে নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কর্তৃক তিনি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছেন।
লাঞ্ছিত হওয়া এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। জানা যায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান অরুণের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার ১২ মে সকালের দিকে শিক্ষক মিলনায়তনে গিয়ে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই প্রধান শিক্ষককে কিল-ঘুষি মারে।
এক পর্যায়ে সকল শিক্ষকদের তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে। পরে পুলিশ গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সম্প্রতি স্কুলের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান অরুণের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বোয়ালমারী মোহাম্মদপুর সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। গত ২৪ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরীর নিকট।
সেই লিখিত অভিযোগের তদন্ত হওয়ার কথা এসএসসি পরীক্ষার পরে। এ ঘটনার জেরে সোমবার সকালে স্কুলের শিক্ষকরা তাদের বসার কক্ষে গেলে বাহির থেকে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা।
এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিচার চেয়ে মিছিল করে। শিক্ষকরা ময়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা ও থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে এবং শিক্ষকদের রুমের তালা খুলে দেন। পরে স্কুল ছুটি দিয়ে দেয়া হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মৃধা আবুল হাশেম বলেন, আমরা শিক্ষকরা রুমে ঢুকলে শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে তালা মেরে দেয় রুমের। শিক্ষার্থীরা মিছিল করে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের জন্য। কোন উপায়ান্তর না পেয়ে ময়না ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন দিলে তিনি এসে তালা খুলে দেন।
এ সময় প্রধান শিক্ষকের রুমের মধ্যে জোর করে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে। প্রবেশ করার সময় শিক্ষার্থীদের সাথে ঠেলাঠেলি হয়। শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করার কারণে স্কুল ছুটি দিয়ে দেয়া হয়।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমান অরুণ বলেন, স্কুলে গেলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের রুমে তালা মেরে অবরুদ্ধ করে ফেলে। এ সময় তারা ক্লাস বর্জন করে।
ময়না ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষক ফোন করে বলেন, তাদের শিক্ষার্থীরা রুমে তালা দিয়ে আটকিয়ে রেখেছে। পরে স্কুলে গিয়ে দেখি শিক্ষকদের রুমে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। পুলিশ আর আমি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে রুমের তালা খুলে দেই। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, স্কুলের ঝামেলা শুনে পুলিশ ঘটনা স্থলে যায়। পুলিশ পৌঁছতে পৌঁছাতে পরিবেশ শান্ত হয়ে যায়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, স্কুলে একটু ঝামেলা হয়েছিল পরে শান্ত হয়ে গেছে।