বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ফিলিপাইন

বিরোধপূর্ণ দ্বীপের কাছে চীনা জাহাজের উপস্থিতি

'ম্যাক্সার টেকনোলজিসে'র তোলা ছবিতে প্রায় ৬০টি জাহাজ দেখা গেছে। এর মধ্যে কিছু থিটু দ্বীপ থেকে মাত্র দুই নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল
যাযাদি ডেস্ক
  ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ফিলিপাইনের থিটু দ্বীপে গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি

দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি থিটু দ্বীপের কাছে চীনা বেসামরিক জাহাজের সংখ্যা বেড়েছে। তবে দেশটির নৌবাহিনীর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা এতে উদ্বেগের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন। তথ্যসূত্র : রয়টার্স

ফিলিপাইনের পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল আলফোনসো টোরেস বলেছেন, জাহাজগুলোর এখানে আসা স্বাভাবিক। ম্যানিলা, পেন্টাগন ও বিদেশি কূটনীতিকরা মনে করেন, এসব জাহাজ চীনের কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে বেইজিংয়ের উপস্থিতি শক্তিশালী করার কাজ করে।

গত সোমবার 'ম্যাক্সার টেকনোলজিসে'র তোলা ছবিতে প্রায় ৬০টি জাহাজ দেখা গেছে। এর মধ্যে কিছু থিটু দ্বীপ থেকে মাত্র দুই নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল। ফিলিপাইনে 'পাগ-আসা' নামে পরিচিত দ্বীপটি দক্ষিণ চীন সাগরের একটি কৌশলগত স্থান। এখান থেকে চীনা জাহাজ ও বিমানের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে ম্যানিলা।

ফিলিপাইন নৌবাহিনীর দক্ষিণ চীন সাগর বিষয়ক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল রয় ত্রিনিদাদ বলেন, 'আমরা জাহাজগুলোর বিষয়ে অবগত আছি। এগুলোকে অবৈধ উপস্থিতি বলা যায়। তবে এতে উদ্বেগের কিছু নেই।' তিনি আরও বলেন, প্রতিটি বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানো জরুরি নয়। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেদের অবস্থান বজায় রাখা।'

অনলাইনে জাহাজ ট্র্যাকিং সাইটগুলোতে দেখা গেছে, স্যাটেলাইট ছবিতে থাকা অধিকাংশই চীনে নিবন্ধিত মৎস্য জাহাজ।

থিটু দ্বীপ ফিলিপাইনের বৃহত্তম ও কৌশলগতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপ। দক্ষিণ চীন সাগরের এই অঞ্চলটি মূলত চীনের দাবি করা এলাকা হলেও প্রতি বছর বিলিয়ন ডলারের পণ্য পরিবহণের জন্য স্থানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৬ সালে হেগের স্থায়ী সালিশি আদালত রায় দিয়েছিল, দক্ষিণ চীন সাগরের অধিকার নিয়ে বেইজিংয়ের দাবির আন্তর্জাতিক আইনগত ভিত্তি নেই।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্কারবরো আইল্যান্ডস ও সেকেন্ড থমাস শোলসের কাছে চীনা কোস্টগার্ড ও মৎস্য জাহাজ এবং ফিলিপাইনের জাহাজগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। থিটু দ্বীপ চীনের সুবি রিফ নৌঘাঁটি ও রানওয়ের কাছাকাছি অবস্থিত। এই ঘাঁটি কখনো কখনো চীনের জাহাজগুলোর জন্য একটি বন্দরের কাজ করে থাকে। ত্রিনিদাদ বলেন, সুবি থেকে আসা-যাওয়ার পথে পাগ-আসার সীমানার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

এই অঞ্চলে চীনা জাহাজগুলোর কার্যক্রম নিয়ে কূটনীতিক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা গভীর নজর রাখছেন। চলতি সপ্তাহে চীনা জাহাজগুলোর ট্রান্সপন্ডার চালু ছিল যা তাদের গতিবিধি নিরীক্ষা করা সহজ করেছে।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ কলিন কোহ মনে করেন, এই ঘটনাটি চীনের ম্যানিলার প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করার অংশ হতে পারে। বিশেষত, দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ম্যানিলার অবস্থা যাচাইয়ের সুযোগটা হয়তো হাতছাড়া করতে চায়নি বেইজিং।

থিটু দ্বীপে ফিলিপাইনের উপস্থিতি বাড়াতে ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা উন্নত করতে সম্প্রতি কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে একটি হ্যাঙ্গার যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। কোহ আরও বলেন, সামনের দিনগুলোতে এটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। চীনা জাহাজের উপস্থিতি অব্যাহত থাকলে থিটু দ্বীপে ফিলিপাইনের নির্মাণ প্রকল্প, বিশেষ করে হ্যাঙ্গারের কাজ বিলম্বিত হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে