রোববার, ০৪ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২
আরও ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ থামেনি

মিসর-কাতারের যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টা চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ
যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ থামেনি
নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের হামলা

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তাৎক্ষণিক স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পক্ষে প্রস্তাব পাস হলেও ইসরায়েল হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করেনি। তাদের হামলায় গাজা উপত্যকার কেন্দ্রস্থলের একটি পোস্ট অফিসে আশ্রয় নেওয়া আরও ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার নুসেইরাতে এই হামলা চালানো হয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। যদিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। যুদ্ধে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য গাজা উপত্যকার আটটি ঐতিহাসিক শিবিরের মধ্যে নুসেইরাত অন্যতম। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা

এর আগে গত বৃহস্পতিবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে দুটি ইসরায়েলি হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হন। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসক রয়েছেন। হামাসের ভাষ্য, এদের কয়েকজন মানবিক ত্রাণ রক্ষার একটি বাহিনীর অংশ।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, হামাস যোদ্ধারা মানবিক ত্রাণের চালান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, মানবিক ত্রাণের নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দুটি বিমান হামলা চালানো হয়েছে। হামাস সদস্যরা গাজার বেসামরিক নাগরিকদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের। ইসরায়েলের দাবি, হামাস এর আগেও ত্রাণবাহী ট্রাক ছিনতাই করেছে।

হামাস জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত অন্তত ৭০০ পুলিশ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা সিটির কেন্দ্রস্থলের বেশ কয়েকটি জেলার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছে, তারা ওই এলাকা থেকে ছোড়া রকেটের পাল্টা জবাব দেবে।

গাজার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে অক্টোবর থেকে সেনাবাহিনী হামলা করছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অর্থোপেডিক ডাক্তার সাইদ জুদেহ আল-আওদা হাসপাতালে যাওয়ার পথে ইসরায়েলি বাহিনী তাকে গুলি করে হত্যা করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭ জনে।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারের বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

উলেস্নখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচু্যত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে