বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। কৃষি এবং কৃষকরাই বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড। মহান মুক্তিযুদ্ধে কৃষকরা ছিলেন সামনের সারিতে। সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণের পাশাপাশি নানাভাবে তারা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের সংবিধানে কৃষি বিপস্নবের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নকে রাষ্ট্রের অন্যতম কর্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে মিশে আছে কৃষি। কৃষিকে বাদ দিয়ে এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশের বর্তমান জনসংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষি খাতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা একান্ত অপরিহার্য।
কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান কর্মকান্ড এবং জীবনীশক্তি। উৎপাদনশীলতা ও আয় বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বিশাল জনগোষ্ঠীর সমৃদ্ধির জন্য কৃষির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দেশের জিডিপিতে কৃষি খাত অর্থাৎ ফসল, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ এবং বন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, শ্রমশক্তির প্রায় অর্ধেক কর্মসংস্থান জোগান এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কাঁচামাল সরবরাহ করে। কৃষি সামাজিক কর্মকান্ডের এক বিশেষ ক্ষেত্র যা জনগণের খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তা, আয়ের সুযোগ সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ ছাড়া কৃষি বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্যের বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ভোক্তাদের বাজারের চাহিদাভিত্তিক মালামালের উৎস। তাই গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাসকরণে কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়ন এবং এর প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা অপরিহার্য।
ফসল, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ এবং বন উপখাতগুলোর সমন্বিত রূপ হলো কৃষি খাত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফসল উপখাতের সঠিক উন্নয়ন কর্মকান্ড গ্রহণ ও পরিচালনার উদ্দেশ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক কৃষি নীতিমালা প্রণীত হয়েছে। ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা, সম্প্রসারণ, বীজ, সার, ক্ষুদ্র সেচ, বিপণনব্যবস্থা এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো এ নীতিমালায় প্রত্যাশামাফিক প্রাধান্য পেয়েছে। বাংলাদেশের কৃষিতে ফসল খাত অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং সরকারের কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচিতে ফসল খাত সর্বাধিক গুরুত্ব পায়। প্রতি বছর দেশে কৃষি জমির পরিমাণ প্রায় ১% হারে হ্রাস পাচ্ছে এবং মৃত্তিকার অবক্ষয় ও উর্বরতা হ্রাস এবং মৃত্তিকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে মাটির গুণাগুণ হ্রাস পাচ্ছে। অধিকন্তু, পানিসম্পদ ও সংকুচিত হচ্ছে। ক্রমহ্রাসমান জমিতে বর্তমান জনগোষ্ঠীর জন্য অধিক খাদ্য উৎপাদন এবং কৃষিজাত শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহের প্রয়োজনে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, নিবিড়করণ ও বহুমুখীকরণসহ মূল্য সংযোজন প্রয়োজন।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশ সরকারের অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসরত জনগোষ্ঠী ৫০ ভাগের নিচে নামিয়ে আনা। এ ছাড়া দেশে একটি নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক কাঠামো বজায় রাখার জন্য প্রণীত 'প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২০২১)'-তে জনগোষ্ঠীর দ্রম্নত অর্থনৈতিক উন্নতি, পলস্নী অঞ্চলের উচ্চতর প্রবৃদ্ধি, কৃষি উন্নয়ন এবং গ্রামীণ কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অকৃষি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মোট দেশীয় উৎপাদনের উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে কৃষি খাতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি একইভাবে বৃদ্ধি করতে হবে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের ভোক্তাদের সঙ্গে কৃষকের সরবরাহ চেইন সংযোগের মাধ্যমে কৃষিতে জিডিপির উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব। এর ফলে দেশে দরিদ্রতা ক্রমহ্রাসের পাশাপাশি জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন হবে।
কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশে ছোট খামারের ভূমিকাই বেশি। জনগণের অর্থনৈতিক উন্নতি এবং জীবিকার ক্ষেত্রে কৃষির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য হ্রাস এবং জীবনমান উন্নয়নের জন্য বর্তমান কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাকে অধিকতর গতিশীল করা এবং টেকসই বাণিজ্যিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার প্রচলন অপরিহার্য। প্রযুক্তি পরিবর্তনের মাধ্যমে টেকসই কৃষি নিবিড়করণ ও বহুমুখীকরণের জন্য প্রয়োজন কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণের সম্মিলিত দক্ষ ও কার্যকর কৃষি প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা। এ ক্ষেত্রে যথাযথ মূল্য সংযোজন এবং সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার সহায়তা প্রয়োজন। জ্ঞান-নিবিড় কৃষিকে টিকিয়ে রাখার জন্য উৎপাদনশীলতা, সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতা, যুগোপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহার, গবেষণা ও পরীক্ষা কাজের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ দক্ষ মানব সম্পদ সরবরাহ বজায় রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে কৃষির জন্য প্রয়োজন অধিকতর বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা। বর্তমান সময়ের বহুমাত্রিক জাতীয় এবং অর্থনৈতিক পরিবেশে কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনায় সরকারি ব্যয়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
প্রথম জাতীয় কৃষিনীতি এপ্রিল, ১৯৯৯-এ গৃহীত হয়েছিল। সময়ের পরিক্রমায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইসু্য উদ্ভূত হয় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হয়। কৃষি সম্পদ হ্রাস, ক্রমহ্রাসমান জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা ও তীব্রতা বৃদ্ধি, কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি, খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্য ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে কৃষিকে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশেষভাবে সক্ষম করে তোলা প্রয়োজন। বর্তমান কৃষি-অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান কৃষিনীতিকে যুগোপযোগী করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৩-এর সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে- টেকসই ও লাভজনক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, গবেষণা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফসলের উন্নত জাত ও চাষাবাদ প্রযুক্তির টেকসই উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ করা।
যথাযথ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও উপকরণ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা, বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক কৃষির প্রচলন করা এবং তা অব্যাহত রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনযোগ্য কৃষকের চাহিদা মিটাতে সক্ষম এমন স্বনির্ভর এবং টেকসই কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদামতো মানসম্পন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনে উৎসাহ প্রদান ও কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করা, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিনির্ভর নতুন শিল্প স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি করা এবং জনগণের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে কৃষি বহুমুখীকরণ এবং অধিক পুষ্টিমানসম্পন্ন বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে উৎসাহ প্রদান করা।
বাংলাদেশের কৃষি খাতে সক্ষমতাগুলো হলো : ফসল উৎপাদনের জন্য সাধারণত বছরব্যাপী অনুকূল কৃষি জলবায়ু, খামারপর্যায়ে প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর/সম্প্রসারণের জন্য গবেষণা-সম্প্রসারণ পদ্ধতি, কৃষি গবেষণা এবং উন্নয়নের জন্য বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী এবং প্রশিক্ষিত জনবল, প্রধান প্রধান শস্য উৎপাদনের জন্য লাগসই প্রযুক্তি, দেশব্যাপী কৃষি উপকরণ সরবরাহ নেটওয়ার্ক, নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহী ও সৃজনশীল কৃষক, কৃষি কর্মকান্ডের জন্য পর্যাপ্ত শ্রমশক্তি, বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক জীববৈচিত্র্য, সেচের পানির প্রাপ্যতা, বিদ্যমান সহায়তামূলক প্রাতিষ্ঠানিক ও নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো, সরকারের বিদ্যমান আর্থিক সহায়তা/প্রণোদনা, দেশব্যাপী বিস্তৃত কৃষিব্যবস্থাপনা মনিটরিং নেটওয়ার্ক, বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলের উপজেলাভিত্তিক ভূমি ও মৃত্তিকা সম্পদের ব্যবহার উপযোগী নির্দেশিকা, কৃষকদের চিরাচরিত ও অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান এবং কৃষি ভর্তুকি কার্ড ও কৃষক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।
দুর্বলতাগুলোর মধ্যে রয়েছে : তূলনামূলকভাবে দুর্বল কৃষি বিপণন ব্যবস্থাপনা, ফসল কর্তনোত্তর অধিক ক্ষতি, কৃষি কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য কৃষকের নিজস্ব মূলধনের অপ্রতুলতা, সীমিত প্রাতিষ্ঠানিক কৃষিঋণ, কৃষক সংগঠনের সক্রিয়তার অভাব, উপকরণ ব্যবহারের সীমিত দক্ষতা, রপ্তানি বাজারের চাহিদা পূরণের জন্য মানসম্মত পণ্য উৎপাদনের অপ্রতুল প্রযুক্তি, প্রতিকূল পরিবেশ উপযোগী প্রযুক্তির অপর্যাপ্ততা, বেসরকারি পর্যায়ে গবেষণা এবং উন্নয়নে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ, অগ্রসরমান কৃষি বিজ্ঞানে প্রশিক্ষিত বিজ্ঞানী, অবকাঠামোমূলক অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা, কৃষিতে বহুমুখীকরণের অভাব, কৃষি উপকরণের মান নিয়ন্ত্রণে দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, কৃষি ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির অপর্যাপ্ত ব্যবহার, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের অপ্রতুলতা, মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ উৎপাদন ও সরবরাহের অপর্যাপ্ততা, কৃষিজাত পণ্যের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণের অপর্যাপ্ততা এবং কৃষিপণ্যের পরিবহণ ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা।
কৃষি গবেষণার মাধ্যমে প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই কৃষি উন্নয়নের জন্য একটি সুসমন্বিত গবেষণা পরিকল্পনা অপরিহার্য। গবেষণার মাধ্যমে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনা সম্ভব যার ফলে কৃষি সরবরাহ-কেন্দ্রিক এর পরিবর্তে চাহিদাভিত্তিক হবে। এর জন্য প্রয়োজন উৎপাদন মাত্রার চেয়ে উৎপাদন দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি। এ ছাড়া এর জন্য প্রয়োজন সমতা, কর্মসংস্থান, সুষ্ঠু পরিবেশ সংরক্ষণ, পুষ্টি, খাদ্যের গুণগতমান, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি নতুন ধারণার ক্ষেত্রগুলো বিবেচনায় রেখে খাদ্য নিরাপত্তা প্রচেষ্টা চলমান রাখা। এ জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের সার্বিক জবাবদিহিতার পাশাপাশি কার্যকর অন্তর্বীক্ষণ, অগ্রাধিকার পুনর্নির্ধারণ এবং সুদৃঢ়করণের দাবি রাখে।
খামারের উৎপাদনশীলতা ও কৃষকের আয় বৃদ্ধির জন্য নতুন প্রযুক্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সরকার কৃষি সম্প্রসারণকে সেবাপ্রদানকারী ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচনা করে যা বর্ধিত কৃষি উৎপাদনের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি ও আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে কৃষককে উপযুক্ত কারিগরি ও খামার ব্যবস্থাপনাবিষয়ক তথ্য ও পরামর্শ প্রদানসহ নতুন প্রযুক্তি, উন্নত খামার পদ্ধতি এবং কলাকৌশল বিষয়ে সহায়তা প্রদান করবে।
টেকসই কৃষি উৎপাদনব্যবস্থা নিশ্চিত করার তাগিদে কৃষি সম্প্রসারণ সেবাকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা অব্যাহতভাবে অনুভূত হচ্ছে এবং সে প্রেক্ষাপটে গবেষণা ও সম্প্রসারণ পরস্পরের সঙ্গে এবং খামার পর্যায়ে উৎপাদন বিষয়ে প্রয়োজনে কৃষকদের সঙ্গে পারস্পরিক মতবিনিময়সহ সমস্যা-সমাধানে কার্যকর সহায়তা দান করতে পারে এমন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
কৃষিনির্ভর দেশ হিসেবে কৃষকদের শস্য উৎপাদন ক্ষমতা এবং জনগণের চাহিদার মধ্যকার ব্যবধান দূর করা এবং তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন দক্ষ কৃষি শ্রমিক ও শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের বিশাল ভান্ডার। জাতীয় কৃষিনীতির সঠিক বাস্তবায়ন ফসল উৎপাদন প্রক্রিয়াকে বেগবান করবে, যার ফলে সময়ের পরিবর্তনে সামগ্রিকভাবে কৃষি একটি গতিশীল খাতে পরিণত হবে যা দেশের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা যায়। জাতীয় কৃষিনীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কৃষক, গবেষক, বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণবিদ, কৃষি ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা এবং রাজনীতিবিদ সবাই তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল অবদান রাখলে এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনার লক্ষ্যগুলো অর্জিত হবে।
আরাফাত রহমান : কলাম লেখক