শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নেপালে আস্থা ভোটে জয়ী প্রচন্ড ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন?

নেপালে অতীতে দেখা গেছে সরকারগুলো ছিল অস্থিতিশীল। গত ১৪ বছরে অন্তত ১০ বার সরকার বদল হয়েছে। প্রচন্ড এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন। আগের দুবার মেয়াদ পুরো করতে পারেননি, অনেক সরকারই তা পারেনি।
আহমদ মতিউর রহমান
  ২৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

নেপালের রাজনীতির সংকট কি আবার নতুন করে দেখা দেবে কিনা, ঘটনাক্রম নতুন মোড় নেবে কিনা প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচন্ডের সরকার টিকবে কিনা এ রকম ভাবনার আপাত অবসান হয়েছে ২০ মার্চ আস্থা ভোটে তার জয়লাভের মধ্য দিয়ে। তবে সংকট কেটে গেল কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ গত ২০ নভেম্বরের নির্বাচনের পর নানা নাটকীয়তা ও ডিগবাজির পর সরকার গঠনে মরিয়া ছিলেন এক সময়ের গোপন কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতা পুষ্প কমল দাহাল প্রচন্ড। দেশ থেকে রাজতন্ত্র উচ্ছেদের পর তিনি মেইন স্ট্রিম রাজনীতিতে আসেন। এ সময়ে পানি আরও গড়িয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ নেপাল করোনাকালের ধকল কাটিয়ে আবার স্বাভাবিক হতে চাইছে। পর্যটন শিল্প নতুন করে চাঙ্গা হতে শুরু করেছে- যা মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছিল। সামনে আছে পর্বতারোহণের মৌসুম। এ সময়টাতে বিশ্বের বহু দেশের পর্বতারোহীরা হিমালয় জয় করতে নেপালে পাড়ি জমায়। এ থেকে নেপালের বেশ আয় হয়। সবকিছু মিলিয়ে অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠার একটা সম্ভাবনার মধ্যে রাজনীতিতে কালো ছায়া নেমে আসে। যার শঙ্কা বিশ্লেষকরা করে আসছিলেন। তবে সর্বশেষ কিছু নাটকীয় ঘটনাক্রমের পর মাত্র ৩২ আসনে বিজয়ী দলের নেতা প্রচন্ডকে এক রকম বরাভয়ই দিচ্ছে। হিমালয়ান টাইমসের ১৯ মার্চের খবরে বলা হয়েছিল : বালুওয়াটারে প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের বাসভবনে অনুষ্ঠিত ১০-দলীয়য় ক্ষমতাসীন জোটের বৈঠকে সোমবার নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে আস্থা ভোট দিতে সম্মত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দাহালের মেয়ে গঙ্গা দাহাল, যিনি তার ব্যক্তিগত সচিবালয়ে কাজ করেন, তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন এ কথা। - নেপালি কংগ্রেসের সহ-সভাপতি পূর্ণ বাহাদুর খড়কা বলেছেন, জোটের অংশীদাররা প্রধানমন্ত্রীকে আস্থা ভোট দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সংসদীয় দলের বৈঠকে বসবে। ২১ মার্চ সেই পত্রিকার অনলাইন এডিশিন 'পিএম দাহাল সিকিউস ভোট অব কনফিডেন্স ইন পার্লামেন্ট' শিরোনামে জানাচ্ছে: 'প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে আস্থা ভোট পেয়েছেন, স্পিকার দেবরাজ ঘিমিরে আজ (২০ মার্চ) হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সভায় এ ঘোষণা করেছেন। হাউসে পেশ করা প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী দাহাল ১৭২ ভোট পেয়েছেন। এর আগে, আস্থা ভোটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সিপিএন (ইউএমএল), রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি এবং নেপাল মজদুর কিষান পার্টি ছাড়া সমস্ত রাজনৈতিক দল তাদের সমর্থন ঘোষণা করে। ২৫ ডিসেম্বর, ২০২২-এ এই পদে নিয়োগের পর প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়বারের মতো আস্থা ভোট গ্রহণ করেন। সাংবিধানিক বিধান অনুসারে, সরকারকে সমর্থনকারী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করার পরে প্রধানমন্ত্রীকে ৩০ দিনের মধ্যে আস্থা ভোট গ্রহণ করতে হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ২৬ মার্চের মধ্যে আস্থার ভোট নিতে হতো। এর আগে দাহাল ১০ জানুয়ারি, ২০২৩-এ সংসদ থেকে ৯৯ শতাংশের বেশি আস্থা ভোট পেয়েছিলেন।'

এত কিছুর পরও কি সংকট কেটে গেল কিনা বিশ্লেষকরা সেটা নিয়ে দুভাগে বিভক্ত। সংকট কেটে গেল কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না বলছেন একদল। তাদের কথায় যুক্তি আছে। কারণ দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর রং পাল্টাতে সময় লাগছে না। তারই প্রতিধ্বনি মেলে তাকে ২৫ ডিসেম্বর যাদের সমর্থনে প্রচন্ড সরকার গঠন করেছিলেন সেই দলের নেতার বক্তব্যে। ১৯ মার্চ হিমালয়ান টাইসমের খবর- সিপিএন-ইউএমএল সেক্রেটারি গোকর্ণ বিস্তা বলেছেন যে, সিপিএন-এমসি চেয়ারপারসন পুষ্প কমল দাহালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দেশের জন্য ভালো করবে না। হেটাউদায় প্রেস চৈতারি মাকাওয়ানপুর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ইউএমএল নেতা বিস্তা যুক্তি দিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী দাহাল তার পদ বাঁচাতে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা দেশের জন্য ভালো করবে না। তিনি বলেন, 'সিপিএন-এমসি চেয়ারপারসন দাহালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার অস্থিতিশীল ও নৈরাজ্যমূলক কর্মকান্ডে জড়িত- যা নিশ্চিতভাবে দেশের ক্ষতি করবে।' বর্তমান জোট বেশি দিন টিকবে না বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেন তিনি।

এই 'বেশি দিন টিকবে না' কথাটাকে ফেলনা ভাবছেন না বিশ্লেষকরা। কারণ আগেও দুবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া প্রচন্ড বেশি দিন দায়িত্বে থাকতে পারেননি। আর দলটি আস্থা ভোটে প্রচন্ডকে ভোটও দেয়নি। সিপিএন-ইউএমএল দল তার পাশ থেকে সরে যাওয়ায় আস্থা ভোটের প্রয়োজন দেখা দেয় সে কথা আগেই বলেছি।

\হআরও কিছু তথ্য দিয়ে নিলে পরিস্থিতি বুঝতে সুবিধে হবে। নেপালের সাম্প্রতিক নির্বাচনে কোনো দল সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। গঠিত হয়েছে একটা ঝুলন্ত পার্লামেন্ট। শেষে সাবেক মাওবাদী নেতা প্রচন্ড তার সিপিএন-মাওবাদী সেন্টার দল থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন আটটি দলের সমর্থন নিয়ে। তিনি যাদের সঙ্গে জোট করে নির্বাচন করেছিলেন সেই গণতান্ত্রিক জোটের বড় শরিক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার নেপালি কংগ্রেস তাকে সরকার গঠনে সমর্থন দেয়নি, যেটা দিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির দল সিপিএন-ইউএমএলসহ কয়েকটি দল। এর এক মাসের মাথায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে মতভিন্নতার জেরে ৫ মন্ত্রী পদত্যাগ করেন আর ইউএমএল সমর্থনও প্রত্যাহার করে। ফলে স্পষ্টতই প্রচন্ড সরকার বিপদে পড়েন। প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারীর মেয়াদ শেষে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ইতোমধ্যে শপথ নিয়েছেন রামচন্দ্র পাইডেল। প্রচন্ড তাকে সমর্থন করেছেন। আর এ কারণেই তার কোয়ালিশনে ভাঙন ধরেছিল। এর পর আসে পার্লামেন্ট তাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার বিষয়টি। নেপালি কংগ্রেস তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসায় তা সহজ হয়েছে, আপাতত বিপদে নেই সরকার। তবে তারা নির্বাচনের পর পরই কেন প্রচন্ডকে সমর্থন দিলেন না আর এখন তাদের এই সমর্থন স্থায়ী হবে কিনা সেটাও প্রশ্ন বটে। বিশেষ করে প্রচন্ডের ভোটের সময়কার এই মিত্ররা কেন ডিগবাজি খেলেন এবং আবার ডিগবাজি খাবেন কিনা তার গ্যারান্টি কোথায়? এই সংশয়ই ঝরে পড়েছে প্রচন্ডের সরকার গঠনকালীন মিত্র সিপিএন ইউএমএলের নেতা গোকর্ণের উক্তিতে। তিনি বলেই বসেছেন এই সরকার স্থায়ী হবে না।

প্রচন্ডের সরকার ও জোটে চিড় ধরেছিল দায়িত্ব নেয়ার মাস ঘোরার আগেই। দেড় মাসের মধ্যেই পুরোপুরি ভেঙে যায় প্রচন্ডের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, 'চীনপন্থি' নেতা কেপি শর্মা ওলির দল কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (ইউএমএল)-এর সমঝোতা। ২৭ ফেব্রম্নয়ারি 'কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল' (মাওয়িস্ট সেন্টার)-এর নেতা প্রচন্ডের সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করে ওলির সিপিএন (ইউএমএল)। এর ফলে আস্থাভোটের আয়োজন করতে হয়। বিশ্লেষকরা বলে আসছিলেন, ওলির দলের সমর্থন প্রত্যাহারে আপাতত প্রচন্ডের সমস্যা নেই- কারণ নেপালি পার্লামেন্টের ২৭৫ আসনবিশিষ্ট হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের বৃহত্তম দল নেপালি কংগ্রেস এবং তাদের সহযোগী চার দলের সমর্থন এখন রয়েছে প্রচন্ডের দিকে। আর ফলে সেটাই দেখা গেছে। প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে নেপালি কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন পাঁচদলীয় জোটের অন্যতম শরিক হিসেবে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের ভোটে লড়েছিল প্রচন্ডের দল সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার)। কিন্তু নেপালি কংগ্রেস প্রধান শের বাহাদুর দেউবা অর্ধেক মেয়াদের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব চুক্তি অনুযায়ী প্রচন্ডকে দিতে অস্বীকার করায় ডিসেম্বরে ওলির সিপিএন (ইউএমএল), রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি (আরএসপি) এবং ছোট দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী হন প্রচন্ড। বাকি অর্ধেক মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হবেন ওলি বা তার দলের কোনো নেতা। ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে প্রচন্ড-ওলির চুক্তি হলেও গোড়া থেকেই দু'দলের সম্পর্ক মসৃণ ছিল না। এই পরিস্থিতিতে গত ১৫ জানুয়ারি প্রচন্ড সরকারের আস্থাভোটের দিন নাটকীয়ভাবে দেউবার নেতৃত্বাধীন নেপালি কংগ্রেসের জোট প্রচন্ডকে সমর্থন করেন। এর পরে সিপিএন (ইউএমএল)-সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার) টানাপড়েন আরও তীব্র হয়। এর পর ফেব্রম্নয়ারি মাসে আরএসপি মন্ত্রীরা ইস্তফা দিয়ে জোট ছাড়ার কথা ঘোষণা করায় সরকারের অন্দরে টানাপড়েন আরও বাড়ে।

উলেস্নখ্য, ২৭৫ আসনের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের বৃহত্তম দল নেপালি কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ৮৯। ওলির সিপিএন (ইউএমএল)-এর ৭৯ এবং প্রচন্ডের সিপিএন (মাওয়িস্ট সেন্টার)-এর ৩২ জন রয়েছেন। আরএসপির ১৯, রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির ১৪, জনতা সমাজবাদী পার্টির ১১ এবং ২৩ জন নির্দল সদস্য রয়েছেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে। জোট গড়ার সময় প্রচন্ড আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, ইউএমএল প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থন দেবেন তিনি। কিন্তু ওই প্রতিশ্রম্নতি থেকে তিনি সরে এসেছেন। আর সেটা থেকেই সংকটের সূচনা বলা যেতে পারে।

তার আগে ২৬ ফ্রেব্রম্নয়ারি রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী নিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ডের সঙ্গে মতবিরোধের জের ধরে নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রীসহ তিন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন জোটে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। উপ-প্রধানমন্ত্রী রাজেন্দ্র লিঙদেন ও অপর তিন মন্ত্রীও পদত্যাগ করেন। রাজেন্দ্র পরে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমরা যে জোটে যোগ দিয়েছিলাম, তা আর বহাল নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছিলেন, মন্ত্রীদের পদত্যাগ সত্ত্বেও সরকারের এখনই পতন হবে না। তবে এই গোলযোগের ফলে নতুন কোয়ালিশন গঠিত হতে পারে। আর সেটাই হয়েছে।

নেপালে অতীতে দেখা গেছে সরকারগুলো ছিল অস্থিতিশীল। গত ১৪ বছরে অন্তত ১০ বার সরকার বদল হয়েছে। প্রচন্ড এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন। আগের দুবার মেয়াদ পুরো করতে পারেননি, অনেক সরকারই তা পারেনি।

নেপালে চীন ও ভারতের মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। এসব পরিবর্তনে তাদের প্রভাব বা ইশারা ইঙ্গিত থেকে থাকবে। এদিকে প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারীর মেয়াদ শেষ হলে এই পদে নির্বাচন হয়। ৯ মার্চ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে পাউডেল ইতোমধ্যে শপথও নিয়েছেন। প্রচন্ডের সমর্থন পাওয়া পাউডেল কি তার রক্ষাকর্তা হবেন কিনা সেটা একটা প্রশ্ন বটে। তবে নেপালে প্রেসিডেন্টের পদ অনেকটা আলংকারিক, সেটাও মনে রাখতে হবে।

বর্তমান ১০-দলীয় জোটের অংশীদাররা হলো সিপিএন-মাওবাদী কেন্দ্র, নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন (ইউনিফাইড সোশ্যালিস্ট), জনতা সমাজবাদী পার্টি-নেপাল, জনমত পার্টি, রাষ্ট্রীয় জন মোর্চা, নাগরিক উনমুক্তি পার্টি, জনতা সমাজবাদী পার্টি-নেপাল, লোকতান্ত্রিক সমাজবাদী পার্টি-নেপাল, নেপাল সমাজবাদী পার্টি এবং আম জনতা পার্টি। সিপিএন-ইউএমএল প্রধানমন্ত্রী দাহালের প্রস্তাবকে সমর্থন না করায় পিএম দাহাল আটদলীয় জোট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন। নেপালি কংগ্রেস নেতা রামচন্দ্র পাউডেলকে সভাপতি পদের জন্য সমর্থন করে? এলএসপি-এন নেতা সর্বেন্দ্র নাথ শুক্লা বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী টিআরসি বিল এবং সংবিধান কাউন্সিল আইন (সংশোধন) বিলসহ দুটি বিলের জন্য জোটের অংশীদারদের সমর্থন চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী জোটের অংশীদারদের সমর্থন চেয়েছিলেন এই বলে যে, বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট আগামী পাঁচ বছরের জন্য অক্ষত থাকবে। শুক্লা বলেছিলেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিকত্ব বিল, ফেডারেল সিভিল সার্ভিস বিল এবং দন্ডবিধি সংশোধনের বিল উত্থাপন করতে বলেছেন। বিচার বিভাগের যে কোনো স্তর থেকে 'রাজনৈতিক বন্দিদের' বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করার কথাও তিনি বলেছেন। এটা কতটুকু রক্ষা হয় সেটা দেখার বিষয়।

জানা গেছে, আস্থা ভোটের পরই প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রিসভা সম্প্র্রসারণের পরিকল্পনা করছেন। প্রধানমন্ত্রী এক ডজনেরও বেশি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন বা পোর্টফোলিও ধারণ করে আছেন। এখন সেগুলো তিনি বণ্টন করবেন জোট সঙ্গীদের মধ্যে। জোট সঙ্গীরা ভালো ভালো পোর্টফলিও আশা করছেন। কোন নেতার ভাগে কি মেলে সেটাই এখন দেখার বিষয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, জোটের অংশীদারদের প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থ কিছু অংশীদারকে পোর্টফোলিও বরাদ্দের বিষয়ে অসন্তুষ্ট করতে পারে- যা প্রধানমন্ত্রীকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। এ থেকে পরিত্রাণ তিনি কীভাবে পাবেন সেটাও এখন দেখার পালা।

আহমদ মতিউর রহমান : কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে