বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাদক চোরাচালান রোধে কার্যকর উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ৩১ মে ২০২৩, ০০:০০

মাদক সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে- বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় এমন খবর প্রকাশিত হয়। এছাড়া মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে- এই বিষয়টিও বহুল আলোচিত। লক্ষণীয়, শুধু শহর নয়, গ্রাম পর্যায়েও ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, প্যাথেডিনসহ নানা নেশাজাতীয় দ্রব্য ছড়িয়ে পড়েছে- এমন বিষয়ও বিভিন্ন সময়ে সামনে এসেছে- যা সামগ্রিক অর্থেই উদ্বেগজনক। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে যে, সারাদেশে একক ও সম্মিলিতভাবে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ধরা পড়ছে বড় বড় মাদকের চালান। কিন্তু তারপরেও মাদকের বিস্তার কমছে না। যা উৎকণ্ঠার। এ ক্ষেত্রে আমলে নেওয়া দরকার, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাদক দেশীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মাদক চোরাচালানের কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর শুধু মিয়ানমারেই পাচার হয় ১৪ হাজার কোটি টাকা- যা দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড কিছুটা হলেও দুর্বল করে দিচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার মাদকের সার্বিক ভয়াবহতাকে আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। এখন যেমন জানা যাচ্ছে, শুধু মিয়ানমারেই পাচার হয় ১৪ হাজার কোটি টাকা আর তা দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড কিছুটা হলেও দুর্বল করে দিচ্ছে। অন্যদিকে, এটাও আমলে নিতে হবে, মাদকের বিস্তারের কারণে ঘটছে মাদককেন্দ্রিক নানা ধরনের অপরাধ। তথ্য মতে, এমন পরিস্থিতিতে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে মাদকের বিস্তার ঠেকাতে অ্যাকশনে নামার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। আর সে মোতাবেক মাদক সংক্রান্ত একটি বিশেষ তালিকা তৈরির কাজও চলছে।

প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যায়, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা সূত্র মতে, মাদক ইসু্যতে চরম বিব্রত সরকার। মাদকের বিস্তার কেন কমছে না, জানতে চাওয়া হয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে। মূলত গলদ কোথায় এবং কাদের কারণে মাদকের বিস্তার কমছে না, তাদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে। এমনকি তারা যদি সরকারদলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাদক সেবন, ব্যবসার সঙ্গে কোনো নেতাকর্মী জড়িত থাকলে তাদের চিরতরে দল থেকে বহিষ্কার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর কেউ পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা করলে তার সম্পর্কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তদন্তের সত্যতা মিললে তাদেরও দল থেকে বহিষ্কার করার নির্দেশনা আছে।

আমরা মনে করি, যে কোনো মূল্যে মাদকের বিস্তার রোধ করতে হবে। কেননা, মাদকের ভয়াল থাবা নানাভাবেই ক্ষতি করছে। এর আগে এমন বিষয়ও সামনে এসেছে যে, নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অবলীলায় জড়িয়ে পড়ছে মাদকের সঙ্গে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে যেমন যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি, তেমনি ধনী-দরিদ্র উভয় পরিবারের কিশোর-কিশোরী, বিশেষ করে তরুণসমাজ বিপথগামী হচ্ছে- এই বিষয়গুলো খবরে উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে- যা সহজ করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।

মনে রাখতে হবে, মাদক নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগের অভাব পরিলক্ষিত হলে এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সবাই- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এছাড়া, 'মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা কর্তৃপক্ষ যত কঠোর অবস্থানেই থাকুক না কেন, জনগণ নিজে থেকে মাদক নিরাময়ে পদক্ষেপ না নিলে এ সমস্যা পুরোপুরি কখনোই সমাধান করা সম্ভব নয়'- এমন বিষয়ও এর আগে আলোচনায় এসেছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এটাও সামনে এসেছে যে, মাদক আইনের পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০০ গ্রামের বেশি পরিমাণ ইয়াবা বা হেরোইনসহ কেউ গ্রেপ্তার হলে তার সাজা যাবজ্জীবনের পরিবর্তে মৃতু্যদন্ড করা হয়েছে। তারপরেও মাদকের বিস্তার ঠেকানো যাচ্ছে না। এছাড়া বর্তমানে সরকারের তরফ থেকেই মাদককে দেশের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। তবু সম্প্রতি আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে মাদক চোরাকারবারিরা। সঙ্গত কারণেই সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নিতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে, মাদকের আগ্রাসন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে