শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

রপ্তানি আয় কমেছে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে

  ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
রপ্তানি আয় কমেছে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে

একটি দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির প্রশ্নে রপ্তানি আয় কতটা জরুরি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই, যদি রপ্তানি আয় কমে যায়, তবে তা স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, যদি রপ্তানি আয় কমে যায় তবে সেই বিষয়টি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার কারণ চিহ্নিত করা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।

সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, সদ্য বিদায়ী নভেম্বরে ৪৭৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। সোমবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এ হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করে রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরো (ইপিবি)। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ কম। এর আগে গত অক্টোবর মাসেও নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অর্থাৎ একটানা দুই মাস কমল রপ্তানি আয়।

আমরা বলতে চাই, পণ্য রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার বিষয়টি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ ও তার বাস্তবায়নে কাজ করা জরুরি। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, নভেম্বর মাসে ৫২৫ কোটি ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪৭৮ কোটি ডলার- যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ কম। অন্যদিকে, ২০২২ সালের অক্টোবরে আয় হয়েছিল ৫০৯ কোটি ডলার। সংশ্লিষ্টদের এটাও আমলে নেওয়া জরুরি যে, টানা দুই মাস পণ্য রপ্তানি কমে যাওয়ায় সামগ্রিক পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির গতিও কমে গেছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে (জুলাই থেকে অক্টোবর) পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ৩ শতাংশ। কিন্তু নভেম্বর মাসে রপ্তানি কমায় পাঁচ মাসের হিসাবে (জুলাই থেকে নভেম্বর) প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জানা যাচ্ছে, জুলাই থেকে নভেম্বর সময়ে রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ২২৩ কোটি ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে ১ হাজার ৮৮৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। আর আলোচ্য সময়ে তৈরি পোশাকের মধ্যে নিট পোশাকের রপ্তানি ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। তবে ওভেন পোশাকের রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৪ শতাংশ।

আমরা বলতে চাই, একটানা দুই মাস রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার বিষয়টি আমলে নিতে হবে। তেমনিভাবে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিকল্পনামাফিক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, রপ্তানি আয় কমলে তা নেতিবাচক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। ফলে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, যথাযথভাবে রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া। কেননা, একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি অত্যন্ত প্রভাবক। ফলে রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কারণ অনুসন্ধান সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, রপ্তানি আয় কমে যাওয়া আমলে নিতে হবে এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে সব ধরনের পদক্ষেপ জারি রাখা বাঞ্ছনীয়। এর আগে এই বিষয়টিও আলোচনায় এসেছিল যে, ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৮০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে সেই লক্ষ্য পূরণেও কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের এটিও আমলে নেওয়া জরুরি, তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের মধ্য অন্যতম খাত। সঙ্গত কারণেই এ খাতের সার্বিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরি। অন্যদিকে, সম্ভাবনাময় খাতগুলোর দিকেও নজর দিতে হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে কাজ করবেন এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে