সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভয়াবহ অগ্নিকান্ড

কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে
নতুনধারা
  ০২ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

রাজধানীর বেইলি রোডে ঘটেছে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা। বহুতল একটি ভবনে অগ্নিকান্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৪৬ জনে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব তথ্য জানিয়েছেন। আর এ ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দু'জন ভর্তি আছেন বলেও জানা যায়।

প্রসঙ্গত, অগ্নিকান্ডের মতো ঘটনা কতটা ভয়াবহ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যখন একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে, তখন তা আমলে নেওয়ারও কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। উলেস্নখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটি সাততলা। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ভবনটি প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগার পর তা ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ক্রেনের সাহায্যে ভবনের সপ্তম তলা ও ছাদে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের নামিয়ে আনতে থাকেন তারা।

ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানা গেছে, অগ্নিকান্ডের পর ভবনের ভেতরে ধোঁয়া ছিল। এরপর ভবনে তলস্নাশি চালিয়ে অচেতন অবস্থায় অনেককে বের করে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বলা দরকার, অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত নিয়ের্ যাব-৩-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন ওই ভবনের নিচতলায় একটি কফির দোকান রয়েছে। সেখানে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের ঘটনা ঘটেছে বলে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন। বহুতল ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রধান।

আমরা বলতে চাই, এবারের ঘটনাটি কতটা ভয়ানক তা সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে। এটাও স্মর্তব্য যে, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে হৃদয়বিদারক এবং ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিকভাবে অগ্নিকান্ডের মতো ভয়াবহ ঘটনাগুলো আমলে নিতে হবে এবং পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। যদি একের পর এক আগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকে, তবে তা কতটা ভয়ানক ও আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তা বলাই বাহুল্য। এবারের ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা মনে করি, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আগুনের সূত্রপাত এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ অপরিহার্য।

এ কথা বলা দরকার, বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, অনেক মানুষ চলে গেছে না ফেরার দেশে। পত্রপত্রিকায় এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল যে, নানা কারণেই বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েক বছরে শুধু কেমিক্যালের কারণে অনেকগুলো অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। বস্তিতেও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। কেমিক্যাল গোডাউন, আধুনিক বহুতল, শপিংমলসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার, বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও সতর্ক না হওয়ায় অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে।

সর্বোপরি বলতে চাই, এবারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি আমলে নিন। একইসঙ্গে এই ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা একের পর এক কেন ঘটছে সেটাও এড়ানো যাবে না। বিভিন্ন সময়, নানা কারণে অগ্নিকান্ডের যেসব ঘটনা ঘটেছে- প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে- এর চেয়ে ভয়ানক আর কী বা হতে পারে! যখন গ্রাম থেকে শহর, বস্তি থেকে শুরু করে আবাসিক ও বাণিজ্যিক বহুতল ভবন, দোকানপাট, গুদাম, মার্কেট কোনো কিছুই আগুনের লেলিহান গ্রাস থেকে মুক্ত নয়- তখন এই প্রশ্নও অযৌক্তিক নয় যে, অগ্নিকান্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাচ্ছে না কেন! সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে