সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ সঠিক উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ১৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

আবারও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি টিনশেড বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩৫ জন দগ্ধ হয়েছেন। গুরুতর দগ্ধ এসব রোগীকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে কালিয়াকৈর টপস্টার এলাকায় এ অগ্নিকান্ড ঘটে। সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক। তাদের জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে ময়মনসিংহ নগরীতে বেলুন ফোলানোয় ব্যবহৃত গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশুসহ ১২ জন দগ্ধ হয়েছেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি টিনের চালা উড়ে যায়। বাংলাদেশে এখন কারো নিরাপত্তা নেই। যাদের এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, তারা রয়েছেন চরম উদাসীন। এক দুর্ঘটনার রেশ না কাটতেই আরেক দুর্ঘটনা এসে হাজির হয়। আমরা বেদনাগ্রস্ত ও হতাশ হই। এটাই দেশের বাস্তবতা। বাংলাদেশের মানুষের নিয়তি। অন্যান্য দুর্ঘটনার পাশাপাশি ইদানীং গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুর্ঘটনার সংখ্যাও বাড়ছে। বেশ কিছুদিন আগে সিলেটের গোয়াইনঘাটে বসতঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মা-মেয়ে নিহত ও একই পরিবারের চার সদস্য দগ্ধ হয়েছেন। এছাড়া ঢাকার ধামরাইয়ে বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাসায় গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ হন জাহিদ হোসেন তার স্ত্রী রুমা আক্তার ও মেয়ে লাবনী। পাঁচ থেকে সাত বছর আগেও এসি, গ্যাস লাইন বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এত মৃতু্যর ঘটনা ঘটতো না। চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় গ্যাসের পাইপলাইন বিস্ফোরণে দেয়াল ধসে ৭ জন নিহত এবং ১০ জন দগ্ধ হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, রাজধানীর রূপনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ শিশুর মৃতু্য আমাদের হৃদয়ে দাগ কেটে আছে। বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগে বা গ্যাসের চুলার ব্যবহারে অসাবধানতা ও অসচেতনতা, গ্যাসের সিলিন্ডার পরীক্ষা না করা এবং সরবরাহকৃত গ্যাস লাইনের ত্রম্নটির কারণে বিপদ এবং মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে তার দৃষ্টান্ত এসব দুর্ঘটনা। মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরাজীব, আশরাফুল মাখলুকাত। বর্তমান সমাজের মানুষ সবচেয়ে অনিরাপদ। মানুষ যেখানে সেখানে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে।

নানা ধরনের দুর্ঘটনা ও বিপর্যয়ের মধ্যেও বাঙালির মনোবল কখনো দুর্বল হয়নি, হয়নি হীনবল। দৃঢ়চেতা ও মনোবলসম্পন্ন বাঙালি জাতি সবসময় এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে। কখনো বন্যা, ঝড়ঝঞ্ঝা, টর্নেডো, সাইক্লোন, নদীভাঙন ও জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করেছে; কখনো বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তারা মোকাবিলা করেছে করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবকে এবং নানা ধরনের দুর্ঘটনা। বাঙালি জাতি বারবার প্রমাণ করেছে তারা অদম্য। এ ক্ষেত্রে সরকারকে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাসলাইন, এসি, গ্যাস সিলিন্ডারসহ দুর্ঘটনাপ্রবল সব বিষয়ে মনোযোগ বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ দুর্ঘটনা রোধে ব্যক্তি সচেতনতা বাড়ানোসহ এ ব্যাপারে রাষ্ট্রেরও গভীরভাবে মনোযোগ দিতে হবে। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি সচেতনতাও জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে