বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

ঢাকায় একের পর এক ছিনতাই পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হবে

  ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ঢাকায় একের পর এক ছিনতাই পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হবে

একের পর এক খুন ছিনতাইসহ যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে থাকলে তা জনজীবনের স্বাভাবিকতা নষ্ট করে। সঙ্গত কারণেই এই ধরনের পরিস্থিতি আমলে নেওয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প থাকতে পারে না। প্রসঙ্গত, ঢাকায় একের পর এক ছিনতাই এবং চলাচল করতে মানুষ ভয় পাচ্ছেন বলেও জানা যাচ্ছে। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নেওয়া জরুরি বলেই প্রতীয়মান হয়।

তথ্য মতে, ১৮ ডিসেম্বর, রাজধানীর মেয়র হানিফ উড়াল সড়ক দিয়ে একজন হেঁটে যাচ্ছিলেন, এ সময় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন তিনি। ছিনতাইকারীরা তার পেটে ছুরিকাঘাত করে মুঠোফোন ও সাত হাজার টাকা নিয়ে যায়। ঢাকা মহানগর পুলিশ জানায়, স্থানীয় মানুষ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, এই ধরনের ঘটনা কতটা ভীতিপ্রদ বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে, সেটি এড়ানোর সুযোগ নেই। বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

1

লক্ষণীয়, শুধু এই ঘটনাই নয়, রাজধানীতে ছিনতাইয়ের এমন অনেক ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে রাতে ও ভোরে চলাচল করতে মানুষ ভয় পাচ্ছেন- এমনটি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে। এছাড়া, শুধু ছিনতাই নয়, ঘটছে চুরি ও ডাকাতির ঘটনাও। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা হয়। পুলিশ ও ঢাকার আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার ৫০টি থানা এলাকায় গত ১ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০ দিনে অন্তত ৩৪ জন ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মামলা করেছেন। এ সময় একজন ছিনতাইকারীর হাতে নিহত হয়েছেন। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও চারজন। সব মিলিয়ে গত ৫ আগস্ট থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাড়ে চার মাসে ছিনতাইকারীর হাতে নিহত হয়েছেন সাতজন। এর আগে, ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার মগবাজারে এক তরুণ ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বলেও জানা যায়।

আমরা বলতে চাই, সৃষ্ট পরিস্থিতির ভয়াবহতা যেমন অনুধাবন করা জরুরি, তেমনিভাবে এটাও এড়ানো যাবে না যে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ না হলে তা জনজীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে, স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হবে। আমরা বলতে চাই, যেভাবে ছিনতাই চুরির ঘটনা ঘটছে তা কোনোভাবেই এড়ানোর সুযোগ নেই। জানা যায়, অনেক ক্ষেত্রে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ নিয়ে যান না। ফলে, শুধু মামলার পরিসংখ্যান দিয়ে অপরাধের প্রকৃত চিত্র উঠে আসে না। আমরা মনে করি, অপরাধের প্রকৃত চিত্র ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে, দোষীদের আইনগত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এ কথা মনে রাখা জরুরি, অপরাধীরা পার পেয়ে গেলে তারা আরও বেশি অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠবে এমন আশঙ্কা থাকে। ফলে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

বলা দরকার, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনায় কত মামলা হয়েছে, তা নিজেদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরেছে পুলিশ সদর দপ্তর। তাদের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন থানায় গত আগস্ট থেকে নভেম্বর সময়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৬৫টি। ফলে, সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সার্বিক চিত্র আমলে নেওয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

সর্বোপরি আমরা উলেস্নখ করতে চাই, পুলিশও বলছে- ঢাকায় ছিনতাই বেড়েছে। সঙ্গত কারণেই যেমন সতর্কতা জরুরি, তেমনিভাবে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে উদ্যোগী হচ্ছে বলেও জানা গেছে- যা আশাব্যঞ্জক। ফলে, যত দ্রম্নত সম্ভব সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ঢাকায় একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে এটা কোনোভাবেই সহজ করে দেখার সুযোগ নেই। এছাড়া, যখন রাতে ও ভোরে চলাচল করতে মানুষ ভয় পাচ্ছেন এটাও আলোচনায় আসছে; তখন সার্বিক পরিস্থিতি কতটা আশঙ্কার সেটা অনুধাবন করা জরুরি। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করনীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক উদ্যোগী হবে এবং এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে