সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২
স্মরণীয়-বরণীয়

হাজী মুহাম্মদ মহসিন

  ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
হাজী মুহাম্মদ মহসিন
হাজী মুহাম্মদ মহসিন

হাজী মুহাম্মদ মহসিন (৩ জানুয়ারি, ১৭৩২ -২৯ নভেম্বর ১৮১২) ছিলেন ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলার একজন প্রখ্যাত মুসলিম জনহিতৈষী, ধার্মিক, উদার ও জ্ঞানী ব্যক্তি। তিনি তার নিজের দানশীলতার মহৎ গুণাবলির জন্য দানবীর খেতাব পেয়েছিলেন। উত্তরাধিকার সূত্রে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন, যার ফলস্বরূপ, তিনি সে সময়ে বিপুল সম্পত্তি আয় করতে সক্ষম হন। অথচ এত সম্পত্তির মালিক হয়েও তিনি সহজ-সরল জীবনযাপন করতেন। যথাযথ শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা এবং দরিদ্র মানুষের দুর্দশা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য তার সম্পত্তির বিশাল আত্মত্যাগ করেছিলেন। তার সম্পদ পশ্চিমবঙ্গ এবং বর্তমান বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষের মধ্যে ঐতিহ্যগত ও আধুনিক শিক্ষা অর্জনের সুযোগ ছড়িয়ে দিয়েছে। দানশীলতার কারণে তিনি কিংবদন্তিতে পরিণত হন এবং বর্তমানেও দানের ক্ষেত্রে তুলনা অর্থে তার দৃষ্টান্ত ব্যবহার হয়ে থাকে। ১৭৬৯-৭০ সালের সরকারি দলিল অনুযায়ী তৎকালীন দুর্ভিক্ষের সময় তিনি অনেক লঙ্গরখানা স্থাপন করেন এবং সরকারি তহবিলে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। মুহাম্মদ মহসিন হুগলির এক সম্ভ্রান্ত ধনী মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাজি ফয়জুলস্নাহ ও মা জয়নাব খানম। ঐতিহাসিক তথ্য থেকে জানা যায়, পূর্ব পুরুষরা পারস্য বা ইরান থেকে বাংলায় এসেছিলেন। মুহাম্মদ মহসিন প্রথম দিকে আরবি ও ফারসি ভাষায় তার পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। অধ্যয়নে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করেছিলেন যখন তিনি শিশু ছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে যখন তার বয়স একটু বেশি হয়েছিল তখন এক গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে মহসিন ও তার আট বছরের বড় সৎ বোন মন্নুজানের সঙ্গে শিক্ষার্জন করেন। মুহাম্মদ মহসিনকে মুর্শিদাবাদে পাঠানো হয়েছিল, সেখানে সেই সময়ের অন্যতম বিখ্যাত মুক্তাব তাকে কোরআন এবং ইসলামী শিক্ষা শিখিয়ে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য রাজধানী মুর্শিদাবাদে শিক্ষা শেষ করেন। শিক্ষাজীবন শেষে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সফরে বেরিয়ে পড়েন। মুহাম্মদ মহসিন খুব ধার্মিক ছিলেন এবং সহজ-সরল জীবনযাপন করতেন। বিপুল সম্পদ তিনি দানসদকায় ব্যয় করতেন। হাজী মুহাম্মদ মহসিন ১৮১২ সালে হুগলিতে মৃতু্যবরণ করেন। তাকে হুগলি ইমামবাড়ার পার্শ্ববর্তী গোরস্থানে দাফন করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে