বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
পাঠক মত

অর্থ শৃঙ্খলে বন্দি জীবন কৃষকের মূলনীতি!

  ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
অর্থ শৃঙ্খলে বন্দি জীবন কৃষকের মূলনীতি!

কৃষিপ্রধান দেশ বাংলাদেশ বলা হলেও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষকের জীবনযাত্রার মানের তেমন পরিবর্তন হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে সবজির বাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে। বিক্রি করতে ব্যর্থ হয়ে কৃষক তার সবজি গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে। অথচ ক্রেতাদের ঠিকই বেশি দাম দিয়ে সেই সবজি কিনতে হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কৃষক ফুলকপি কেজি প্রতি ৩ টাকায় বিক্রি করছে, কিন্তু ক্রেতাদের সেই ফুলকপি কিনতে কেজি প্রতি ৩০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। কৃষক ৩ থেকে ৪ মাস পরিশ্রম করেও, তার উৎপাদন খরচ তুলতে পারে না। অথচ হাত বদলের পর খুচরা বিক্রেতারা কয়েক গুণ লাভ করছে। এই পর্যায়েও যদি সিন্ডিকেট সিস্টেমের আধিপত্য থাকে, তাহলে কৃষকের দুর্দশা কখনোই কাটবে না। আমরা বিপস্নবী জনগোষ্ঠী, দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনের ঘাটতি রাখি না। তবে সেই দাবি যদি স্বার্থহীন না হয়, তাহলে তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে এবং আমাদের মনুষ্যত্বকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। সবজির বাজারে ধস নামলেও আমরা যেন তাতে আনন্দিত। অথচ রপ্তানিকৃত পণ্যের বাজারে মূল্য পরিবর্তনের কোনো প্রভাব লক্ষ করা যায় না। কৃষি উপকরণের ক্ষেত্রে কৃষক যে দামে পণ্য ক্রয় করে, একজন চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ীও একই দামে তা ক্রয় করে। কৃষি উপকরণে ভর্তুকির চেয়ে বাজারে পণ্য বিক্রির সময় খাজনা আদায় করাতেই যেন বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ৩০ টাকা মূল্যে বিক্রি হওয়া পণ্যের জন্য যে খাজনা দিতে হতো, ৩ টাকা মূল্যের পণ্যের জন্যও কৃষককে একই পরিমাণ খাজনা দিতে হচ্ছে। ফলে কৃষকের ভাগ্য যেন কষ্টিপাথরে ঘষেও পরিবর্তন করা যাচ্ছে না। আমরাই কৃষকের ভাগ্যকে শিকলে বন্দী করে রেখেছি। আমরা চাইলে এই শিকল ভাঙতে পারি। বাজারে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা চালু করতে পারলে কৃষক তার ন্যায্যমূল্য পাবে। কৃষি উপকরণে ভর্তুকি নিশ্চিত করা গেলে কৃষক উৎপাদনে উৎসাহিত হবে। আর বাজার ব্যবস্থায় সিন্ডিকেট সিস্টেমের অবসান ঘটাতে পারলেই কৃষকের শিকল বন্দী জীবনের কড়া নড়বে।আমাদের হাজারো দাবির মাঝে কৃষকের দাবিগুলোর স্থান দিতে হবে। এটাই হতে পারে কৃষকের বন্দিদশা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায়।

মুরশিদ আলম

শিক্ষার্থী

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নকলের আশ্রয়ে স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যায়

বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নকলের প্রবণতা একটি গভীর সমস্যায় পরিণত হয়েছে। পরীক্ষায় কিছু শিক্ষার্থী নকলের মাধ্যমে সফল হওয়ার চেষ্টা করে। এ কাজ কেবল শিক্ষকদের সাথে প্রতারণা নয় বরং নিজের জীবন ও স্বপ্নের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। পরীক্ষা শিক্ষার্থীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যা তাদের জ্ঞান, দক্ষতা এবং ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি যাচাই করে। পরীক্ষা শিক্ষকের জন্য লাভজনক কোনো ব্যবস্থা নয়, বরং শিক্ষার্থীর মান যাচাইয়ের জন্য উপযোগী ব্যবস্থা। নকলের মাধ্যমে ভালো ফলাফল অর্জন করলে তা সাময়িক আনন্দের কারণ হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল চিন্তা করলে শূন্যতা ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাবে না। অসৎ উপায় অবলম্বন করে অন্যকে ধোকা দেয়ার চেয়ে নিজের প্রতিই বেশি জুলুম করা হয়। একাজ যেমন নৈতিকতা বিরোধী একই সাথে নিজের জন্য সর্বনাশা। পরীক্ষায় নকল আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়, নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। লেখাপড়া করে সৎ ভাবে পরীক্ষা দিয়ে ভাল ফলাফল অর্জন করতে না পারলে ক্যারিয়ারের সফল হওয়া সম্ভব নয়। তাই নিজের সাথে প্রতারণা না করে লেখাপড়ায় মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। আমাদের উচিত নকল প্রবণতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং শিক্ষার্থীদের কে বোঝানো যে, নকল তাদের জীবনে কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। কঠোর পরিশ্রম, আত্মনির্ভরশীলতা এবং সততার মাধ্যমে সাফল্য অর্জিত হয়। শিক্ষকদের সাথে প্রতারণা না করে নিজের প্রচেষ্টায় বিশ্বাস রাখার মানসিকতা গড়ে তোলার প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রত্যেক অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর প্রতি আহ্বান জানাই, আসুন আমরা নকলমুক্ত শিক্ষা নিশ্চিত করি এবং নিজের প্রতি সৎ থাকি।

মরিয়ম খানম সেতু

চট্টগ্রাম কলেজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে