রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান

রোমানা হাবিব চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক, ব্রাইট ফোর টিউটোরিয়াল হোম, চট্টগ্রাম য়
  ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

জলবায়ু পরিবর্তন

প্রশ্ন: বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কী?

উত্তর : পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বেড়ে যাওয়াই হলো বৈশ্বিক উষ্ণায়ন।

প্রশ্ন: বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ কী?

উত্তর : বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ হলো বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া।

প্রশ্ন: বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের একটি উদাহরণ দাও।

উত্তর : বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের একটি উদাহরণ হলো- হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা হওয়া।

প্রশ্ন: পরিবেশের উপর বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব কী কী?

উত্তর :পরিবেশের উপর বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব হলো : ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাসের হার ও মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া।

হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি হওয়া। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে খরা সৃষ্টি হওয়া।

সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া এবং নদীর পানিতে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করা। সবসময় পৃথিবী উষ্ণ থাকা।

প্রশ্ন: গ্রিন হাউজের ভেতরের পরিবেশ গরম থাকে কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : গ্রিন হাউজ তৈরির মূল উপাদান কাচ, যা তাপ কুপরিবাহী বলে এতে প্রবেশ করা সূর্যের তাপ বেরিয়ে যেতে পারে না। তাই ভেতরের পরিবেশ গরম থাকে।

শীতপ্রধান দেশে তীব্র শীতের কারণে গাছপালা বেঁচে থাকতে পারে না। সেখানে কাচের তৈরি ঘরে শাক-সবজির চাষ করা হয় যা গ্রিন হাউজ নামে পরিচিত। সূর্যের তাপ এ কাচ ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করে যা গাছপালা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু এ তাপ কাচ ভেদ করে বাহিরে আসতে পারে না।

প্রশ্ন: জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমানো এবং এর সঙ্গে খাপ খাওয়ানো কীভাবে সম্পর্কিত?

উত্তর : জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমানো এবং এর সঙ্গে খাপ খাওয়ানো অর্থাৎ অভিযোজন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমানোর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যেমন- কয়লা, তেল, গ্যাস ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে বায়ুমন্ডলে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং নবায়নযোগ্য (যেমন : সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি) শক্তির ব্যবহার বাড়ানো। তবে জলবায়ুর যে পরিবর্তন ইতোমধ্যে সাধিত হয়েছে তার সঙ্গে আমাদের খাপ খাওয়াতে হবে। এতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি কমানো ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে।

প্রশ্ন: কীভাবে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমাতে পারি?

উত্তর : বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রধান কারণ বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের পরিমাণ কমিয়ে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমাতে পারি।

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে পৃথিবীর জলবায়ু ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে। কয়লা, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হয়। আবার বনভূমি ধ্বংসের কারণে গাছপালার মাধ্যমে কার্বন ডাইঅক্সাইডের শোষণের হারও কমেছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে বায়ুতে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইডের শোষণ বাড়ানো সম্ভব। দৈনন্দিন জীবনে শক্তির ব্যবহার কমিয়ে ও আমরা কার্বন ডাইঅক্সাইডের নির্গমন কমাতে পারি।

প্রশ্ন: পৃথিবীর বায়ুমন্ডল গ্রিন হাউজের কাচের মতো কাজ করে কেন?

উত্তর : পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে থাকা কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয় বাষ্প ভূপৃষ্ঠের বিকিরিত তাপ পৃথিবীর বাইরে যেতে বাধা প্রদান করে বলে বায়ুমন্ডল গ্রিন হাউজের মতো কাজ করে।

বায়ুমন্ডল হলো পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বায়ুর স্তর। সেখানে থাকা কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ও জলীয় বাষ্প গ্রিন হাউজের কাচের দেয়ালের মতো কাজ করে। দিনের বেলায় সূর্যের আলো বায়ুমন্ডলের ভেতর দিয়ে ভূপৃষ্ঠে এসে পড়ে এবং ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়। রাতে ভূপৃষ্ঠ হতে সেই তাপ বায়ুমন্ডলে ফিরে আসে এবং ভূপৃষ্ঠ শীতল হয়। কিন্তু কিছু তাপ বায়ুমন্ডলের ওই গ্যাসগুলোর কারণে আটকা পড়ে। এতে রাতের বেলায়ও পৃথিবী উষ্ণ থাকে।

প্রশ্ন: জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন কী ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : পরিবর্তিত জলবায়ুতে বেঁচে থাকার জন্য গৃহীত কর্মসূচিই হলো 'জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন'। অভিযোজনের উদ্দেশ্য হলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি কমানো ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ। এক্ষেত্রে, নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন-

১. ঘরবাড়ি, বিদ্যালয়, কলকারখানা ইত্যাদি অবকাঠামোর উন্নয়ন করা,

২. বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশয়কেন্দ্র নির্মাণ করা,

৩. উপকূলীয় বন সৃষ্টি করা,

৪. লবণাক্ত পরিবেশে বাঁচতে পারে এমন ফসল উদ্ভাবন করা,

৫. জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করা,

৬. জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ সম্পর্কিত ধারণা সকলকে জানিয়ে।

প্রশ্ন: পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে আমাদের জীবনে এর কী প্রভাব পড়বে?

উত্তর : বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে। এভাবে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াই হলো বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে মেরু অঞ্চলের বরফ গলছে এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে আমাদের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। এসব দুর্যোগের মধ্যে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, নদী ভাঙন ইত্যাদি অন্যতম।

প্রশ্ন: দুইটি গ্রিন হাউজ গ্যাসের নাম লেখ।

উত্তর : দুইটি গ্রিন হাউজ গ্যাসের নাম- র. মিথেন ও রর. কার্বন ডাইঅক্সাইড।

প্রশ্ন: বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কাকে বলে?

উত্তর : ধীরে ধীরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়াকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলে।

হ পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে