অধ্যায়-৩
প্রশ্ন :দোলনকাল কাকে বলে?
উত্তর :পর্যাবৃত্ত গতি সম্পন্ন বস্তু কণার একটি পূর্ণ দোলনের সময়কে দোলনকাল বলে।
প্রশ্ন :আলোর বেগ কত?
উত্তর :আলোর বেগ প্রতি সেকেন্ডে তিন লক্ষ কিলোমিটার।
প্রশ্ন :মন্দন কী?
উত্তর :সময়ের সাথে কোনো বস্তুর বেগ যদি হ্রাস পায় তবে তার ত্বরণকে মন্দন বলে।
প্রশ্ন :ঘর্ষণের সুবিধা-অসুবিধা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘর্ষণ যেমন উপকারী তেমন অপকারীও বটে। সুবিধা : ১. ঘর্ষণের কারণে আমরা কোনো বস্তুকে আঁকড়ে ধরতে পারি। ২. ঘর্ষণের জন্য আমরা রাস্তায় চলাচল করতে পারি। ৩. ঘর্ষণের কারণে গাড়ির ব্রেক করা সম্ভব হয়। অসুবিধা : ১. ঘর্ষণ গতির প্রতিরোধ বল হিসেবে কাজ করে। ২. ঘর্ষণের ফলে যন্ত্রাংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ৩. ঘর্ষণের ফলে যানে জ্বালানি খরচ বেশি হয়।
প্রশ্ন :বস্ন্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের ধারণা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের অস্তিত্ব এবং প্রকৃতি বিষয়ক একটি বহুল প্রচলিত ধারণা। ধারণা মতে ইষধপশ ঐড়ষব এমন একটি বস্তু, যা খুবই ঘনসন্নিবিষ্ট থাকে। অতি ক্ষুদ্র আয়তনে এখানে অধিক ভর বিদ্যমান। এখানে মহাকর্ষীয় বলের মান অধিক হওয়ায় আশপাশের সকল বস্তুকেই এটি কেন্দ্রে নিয়ে যায়। বস্ন্যাকহোল সৃষ্টি হয় বৃহৎ নক্ষত্রের সংকুচিত হওয়ার মাধ্যমে।
প্রশ্ন :মাধ্যাকর্ষণ বল বলতে কী বুঝায়?
উত্তর :পৃথিবী কোনো বস্তুকে যে বলে তার নিজের দিকে টানে তাকে মাধ্যাকর্ষণ বল বলে। বিজ্ঞানী নিউটন প্রথম এই বলের ধারণা দেন। এটি একটি মৌলিক বল, যা অভিকর্ষজ বল নামেও পরিচিত। এই বলের জন্যই উপরে ছুড়ে দেওয়া বস্তু নিচের দিকে পড়ে। সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীকে চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে রাখে। ফলে সূর্য হতে আমরা আলো এবং আরামদায়ক উষ্ণতা পাই। এটি আমাদের বায়ুমন্ডল সঠিক স্থানে ধরে রাখে। ফলে আমরা পৃথিবীতে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারি।
প্রশ্ন :পর্যাবৃত্ত গতি উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :কোনো বস্তুর গতি যদি এমন হয়, এটি একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর গতির পুনরাবৃত্তি করে তবে তাকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে। এই গতিতে চলমান বস্তুর গতিপথ নির্দিষ্ট এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর গতিপথের একই বিন্দুকে একই দিক থেকে অতিক্রম করে। দোলনকাল এই গতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই গতি একটি পূর্ণ দোল দিতে যে সময় নেয় তাই তার দোলনকাল। নির্দিষ্ট অবস্থার জন্য সেই গতির দোলনকালও নির্দিষ্ট সেটাকে বাড়ানো বা কমানো যায় না। দোলনকাল পরিবর্তন করতে হলে অবস্থানের পরিবর্তন প্রয়োজন। দোলনায় দোল খাওয়া, স্প্রিংয়ের সংকোচন প্রসারণ এই গতির উদাহরণ।
প্রশ্ন :সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর গতি কী ধরনের গতি? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর গতি পর্যাবৃত্ত গতি। ব্যাখ্যা : কোনো গতিশীল বস্তু কণার গতি যদি এমন হয় যে, এটি এর গতিপথের কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পরপর একই দিক থেকে অতিক্রম করে, তাহলে সেই গতিকে পর্যাবৃত্ত গতি বলে। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরার সময় কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুকে নির্দিষ্ট সময় পরপর একই দিক থেকে অতিক্রম করে। তাই সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর গতি পর্যাবৃত্ত গতি।
প্রশ্ন :বেগ এবং দ্রম্নতি এক নয়- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :সরল বা বক্রপথে চলমান বস্তুর অবস্থার পরিবর্তনের হারই দ্রম্নতি। অন্যদিকে নির্দিষ্ট দিকে অবস্থার পরিবর্তনের হার হলো বেগ। বস্তুর বেগের মানই দ্রম্নতি। এর জন্য দিক বা অভিমুখের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বেগ বুঝাতে অবশ্যই দিক বা অভিমুখ উলেস্নখ করতে হবে। বেগের নির্দিষ্ট মান এবং দিক থাকবে। কিন্তু দ্রম্নতির মান নির্দিষ্ট হলেও দিক নির্দিষ্ট নয়। তাই বলা চলে বেগ এবং দ্রম্নতি এক নয় ভিন্ন রাশি।
প্রশ্ন :একটি গাড়ির গতিবেগ ৩৬ শসয্ব-১ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর :একটি গাড়ির গতিবেগ ৩৬ শসয্ব-১ বলতে বুঝায় গাড়িটি প্রতি ঘণ্টায় ৩৬ শস বা ৩৬০০০স দূরত্ব অতিক্রম করে। অর্থাৎ গাড়িটির আদি অবস্থান হতে ৩৬০০ং এ সরণ ৩৬০০০স।
প্রশ্ন :ত্বরণ বলতে কী বুঝায়?
উত্তর :বস্তুর বেগের পরিবর্তনের হারকে ত্বরণ বলে। অর্থাৎ সময়ের সাথে বস্তুর বেগের পরিবর্তনকে ত্বরণ বলা হয়। বল প্রয়োগে বস্তুর বেগ বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়, যার ফলে ত্বরণও বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়। ত্বরণ ধনাত্মক বা ঋণাত্মক উভয়ই হতে পারে। ঋণাত্মক ত্বরণের অন্য নাম মন্দন। ত্বরণকে ধ দ্বারা প্রকাশ করা হয় যার এস আই একক সং্ব২।
প্রশ্ন :দোলনকাল কাকে বলে? সকল ঘূর্ণন গতি বজ্রগতি কিন্তু সকল বজ্রগতি ঘূর্ণন গতি নয় কেন?
উত্তর :পর্যাবৃত্ত গতিসম্পন্ন বস্তু কণার একটি পূর্ণ দোলনের সময়কে দোলনকাল বলে। কোনো বস্তু যদি একটি নির্দিষ্ট বিন্দু বা অক্ষের চারদিকে বৃত্তাকার পথে গতিশীল হয় তবে তার গতি ঘূর্ণন গতি। অন্যদিকে বজ্রগতি হলো বক্ত পথে চলমান বস্তুর গতি। বৃত্তাকার পথ বজ্রগতির শর্ত নয়। বৃত্তাকার পথ একটি বক্ত পথ। বক্ত পথ বৃত্তাকার ছাড়াও অন্যভাবে সৃষ্টি হতে পারে। যেমন কোনো বস্তুকে ছুড়ে দিলে সেটি বক্র পথে যাবে বৃত্তাকার পথে নয়। সুতরাং তার গতি বজ্রগতি হবে কিন্তু বৃত্তাকার গতি বা ঘূর্ণন গতি হবে না। তাই বলা যায়, সকল ঘূর্ণন গতি বজ্রগতি কিন্তু সকল বক্তগতি ঘূর্ণন গতি নয়।
প্রশ্ন :গতিশীল বস্তুর গতি হ্রাসের কারণ কী? গতির বিভিন্ন রূপগুলো কী কী? ঘর্ষণ একটি প্রয়োজনীয় উপদ্রব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর :গতিশীল বস্তুর গতি হ্রাসের কারণ হলো ঘর্ষণ। গতির বিভিন্ন রূপগুলো হলো- সরল গতি, বক্রগতি, ঘূর্ণন গতি, পর্যাবৃত্ত গতি। ঘর্ষণ একটি প্রয়োজনীয় উপদ্রব। কারণ- ঘর্ষণ না থাকলে গতিশীল বস্তু স্থির হতো না, গাড়ির ব্রেক কাজ করত না, তির্যকভাবে প্রয়োগকৃত বলের প্রতিক্রিয়া বল সৃষ্টি হতো না, আমরা সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারতাম না। অন্যদিকে ঘর্ষণের ফলে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ অত্যধিক উত্তপ্ত হয়, জুতার সোল ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আমাদের জীবনযাপনে ঘর্ষণ যেমন প্রয়োজন তেমনই অতিরিক্ত ঘর্ষণ ক্ষতির কারণ।