বিবিধ অথের্ ক্রিয়াপদকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।
যেমন :
১. ভাবপ্রকাশ ক্রিয়া : ভাব প্রকাশের দিক দিয়ে ক্রিয়াপদ ২ প্রকার। যেমন : সমাপিকা ক্রিয়া, অসমাপিকা ক্রিয়া।
২. বিবিধ : অন্যান্যভাবে ক্রিয়াপদ ৬ প্রকার। যেমন : অকমর্ক, সকমর্ক দ্বিকমর্ক, প্রযোজক ক্রিয়া, যৌগিক ক্রিয়া, মিশ্র ক্রিয়া
ক্রিয়াপদের গঠন
ক্রিয়ামূল বা ধাতুর সঙ্গে পুরুষ অনুযায়ী কালসূচক ক্রিয়াবিভক্তি যোগ করে ক্রিয়াপদ গঠন করতে হয়। যেমন: ‘পড়ছে’-পড় ‘ধাতু’+‘ছে’ বিভক্তি।
সকল ক্রিয়াপদের সংজ্ঞা
১. ক্রিয়া : যে শব্দ দিয়ে কাজ বুঝায় তাকে ক্রিয়া বলে।
২. অনুক্ত ক্রিয়া : যে বাক্যে ক্রিয়া উহ্য থাকে তাকে অনুক্ত ক্রিয়া বলে।
৩. সমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়া বাক্যকে সমাপ্ত করে তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
৪. অসমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়া বাক্যকে সমাপ্ত করতে পারে না তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
৫. সকমর্ক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কমর্পদ থাকে তাকে সকমর্ক ক্রিয়া বলে।
৬. অকমর্ক ক্রিয়া : যে বাক্যে কোনো কমর্পদ থাকে না তাকে অকমর্ক ক্রিয়া বলে।
৭. দ্বিকমর্ক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার দুটি কমর্ থাকে তাকে দ্বিকমর্ক ক্রিয়া বলে।
৮. সমধাতুজ/ধাত্বথর্ক : যে বাক্যে ক্রিয়া ও কমর্পদ একই ধাতু থেকে তৈরি তাকে সমধাতুজ/ধাত্বথর্ক কমর্ বলে।
৯. প্রযোজক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া প্রযোজনা করে তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে।
১০. নামধাতু : বিশেষ্য, বিশেষণ ও ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের পরে আ-প্রত্যয়যোগে গঠিত ধাতুকে নামধাতু বলে।
১১. যৌগিক ক্রিয়া : সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়া দিয়ে গঠিত বিশেষ বা সম্প্রসারিত অথর্ প্রকাশক ক্রিয়াকে যৌগিক ক্রিয়া বলে।
১২. মিশ্রক্রিয়া : বিশেষ্য, বিশেষণ ও ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে কর, হ, দে, পা, যা, কা, গা, ছাড়, ধর, মার ইত্যাদি ধাতু দিয়ে গঠিত ক্রিয়াকে মিশ্রক্রিয়া বলে।
অনুক্ত ক্রিয়াপদ
ক্রিয়াপদ বাক্যগঠনের অপরিহাযর্ অঙ্গ। ক্রিয়াপদ ভিন্ন কোনো মনোভাবই সম্পূণর্রূপে প্রকাশ করা যায় না। তবে কখনো কখনো বাক্যে ক্রিয়াপদ উহ্য বা অনুক্ত থাকতে পারে। যেমন :
ইনি আমার ভাই = ইনি আমার ভাই (হন)।
আজ প্রচন্ড গরম = আজ প্রচন্ড গরম (অনুভ‚ত হচ্ছে)
তোমার মা কেমন? = তোমার মা কেমন (আছেন)?
বাক্যে সাধারণত ‘হু’ ও ‘আছ’ ধাতু গঠিত ক্রিয়াপদ উহ্য থাকে।
সমাপিকা ক্রিয়া
যে ক্রিয়াপদ দ্বারা বাক্যের (মনোভাবের) পরিসমাপ্তি জ্ঞাপিত হয় তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন : ছেলেরা খেলা করছে। এ বছর বন্যায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
সমাপিকা ক্রিয়া সকমর্ক, অকমর্ক ও দ্বিকমর্ক হতে পারে। ধাতুর সঙ্গে বতর্মান, অতীত বা ভবিষ্যত কালের বিভক্তি যুক্ত হয়ে সমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়।
যেমন :
* আনোয়ার বই পড়ে। এখানে ক্রিয়া-সকমর্ক আর কাল-বতর্মান
* মাসুদ সারাদিন খেলেছিল। এখানে ক্রিয়া-অকমর্ক আর কাল-অতীত
* আমি তোমাকে একটি কলম উপহার দেব। এখানে ক্রিয়া-দ্বিকমর্ক আর কাল-ভবিষ্যত
অসমাপিকা ক্রিয়া
যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি ঘটে না, বক্তার কথা অসম্পূণর্ থেকে যায় তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন : প্রভাতে সূযর্ উঠলে ...। আমরা হাত-মুখ ধুয়ে ...। আমরা বিকেলে খেলতে ...। এখানে, ‘উঠলে’ ‘ধুয়ে’ ও ‘খেলতে’ ক্রিয়াপদগুলোর দ্বারা কথা শেষ হয়নি।