শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
লোডশেডিং

সিলেটে শিডিউল তছনছ

কাইয়ুম উলস্নাস
  ১৪ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

ঘোষণা করা হয়েছিল-এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং হবে। কিন্তু সিলেটে বিভিন্ন এলাকায় ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে বলে জনগণের অভিযোগ আছে। এক ঘণ্টা পরপর টানা বিদু্যৎ না থাকার কারণে জীবনযাত্রায় পড়ছে ক্ষতিকর প্রভাব। বিশেষ করে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ নিয়ে ধীরে ধীরে জনরোষ বাড়ছে। সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় বিদু্যৎ বিভাগের লোকজনের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নগরী ও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনে এক ঘণ্টা পরপর বিদু্যৎ চলে যাচ্ছে। যে কারণে নগরীর ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিদু্যৎ না থাকা ও গরমে অতিষ্ঠ হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। একইভাবে রাতেও ঘন ঘন লোডশেডিং করা হচ্ছে। গরম ও অন্ধকারের কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে পারছে না। বিভিন্ন এলাকায় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে রাতের বেলা সড়ক অবরোধেরও ঘটনা ঘটছে।

নগরীর রাজাম্যানশনের বই ব্যবসায়ী সোহেল আহমদ বলেন, 'এক ঘণ্টা পরপর বিদু্যৎ চলে যায়। দিনে ও রাতে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা বিদু্যৎ থাকে না। '

সুরমা মার্কেটের ব্যবসায়ী জমির মিয়া বলেন, 'এক ঘণ্টার কথা বলে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে। এটা জনগণের সঙ্গে ধোকাবাজি করা হচ্ছে।'

এসএসসি পরীক্ষার্থী রায়হান আহমদ বলেন, 'সামনে আমার পরীক্ষা। বন্যার কারণে পড়তে পারিনি। একটা ধকল গেল, এখন লোডশেডিংয়ের কারণে পড়তে পারছি না। দিনে রাতে ১০ ঘণ্টা বিদু্যৎ থাকে না।'

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার শিক্ষার্থী সুমন আক্ষেপ করে বলে, 'সন্ধ্যা হলেই বিদু্যৎ চলে যায়। গভীর রাত পর্যন্ত থাকে না। একে তো বিদু্যৎহীনতা, তার উপর তীব্র গরমের কারণে রাতে একেবারে পড়াশোনা

করা যায় না।'

সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ এলাকার গৃহিণী শামীমা আক্তার বলেন, 'দিনের বেশিরভাগ সময় বিদু্যৎ থাকছে না। ফলে ঘরে টেকাও দায়।'

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের কথা বলা হলেও সিলেটে দিনে ও রাতে দেড় ঘণ্টা করে লোডশেডিং করার কথা জানানো হয়। তবে সিলেটে চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদু্যৎও মিলছে না ফলে শুরুতেই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে লোডশেডিংয়ের শিডিউলে। সিলেট জেলা ও নগরীতে দিনের অর্ধেক সময়ই বিদু্যৎ থাকছে না। এক ঘণ্টার লোডশেডিং কয়েক দফা করে সেটা কোথাও ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

সরকারের এমন সিদ্ধান্ত সত্ত্বেও সিলেটে প্রথমদিনেই এলাকাভেদে ৩-৪ ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের সময় নির্ধারণ করে শিডিউল তৈরি করে বিদু্যৎ বিভাগ। তবে প্রথমদিন থেকে নিজেদের তৈরি এই শিডিউল মানতে পারছে না তারা।

বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, 'আমাদেরকে চাহিদার ৭০ শতাংশ সরবরাহ ধরে শিডিউল করতে বলা হয়েছিল। সে অনুযায়ী আমরা এলাকাভেদে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং রেখে শিডিউল করেছিলাম। কিন্তু এখন অর্ধেক সরবরাহই পাচ্ছি না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শিডিউল মানতে পারছি না।'

বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানায়, শনিবার দুপুরে সিলেট জেলায় বিদু্যতের চাহিদা ছিল ১৭৫ মেগাওয়াট, কিন্তু পাওয়া গেছে ৮৩ মেগাওয়াট। ফলে ৫০ শতাংশ লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এ কারণে শিডিউলে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

সিলেট পলস্নী বিদু্যৎ সমিতি-১ এর মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, 'শনিবার সকালে আমাদের চাহিদা ছিল ৮০ মেগাওয়াট। সরবরাহ পেয়েছি ৫০ মেগাওয়াটের মতো। যে কারণে শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে জনমনেও ক্ষোভ জন্ম নিচ্ছে। তাই এলাকার মানুষের সঙ্গে সমন্বয় করতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে নিয়ে মিটিং করছি।'

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে