শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির তালিকা সংসদে

সাত কোম্পানির স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ একই
যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

জাতীয় সংসদে দেশের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির তথ্য উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী। ব্যাংকে এদের ঋণ স্থিতির পরিমাণ ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর মোট খেলাপি ঋণ ১৬ হাজার ৫৮৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপির মধ্যে ৭ কোম্পানির স্থিতি এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ একই। এসব কোম্পানি একটি কিস্তিও পরিশোধ করেনি।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নে ঋণ খেলাপির এ তথ্য উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে এটি উপস্থাপিত হয়।

উপস্থাপিত শীর্ষ ২০-এর মধ্যে সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৭৩২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৬৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৮৫৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৫২৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। রিমেক্স ফুটওয়্যারের ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৭৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এই অঙ্কের পুরোটাই খেলাপি ঋণ। রাইজিং স্টিল কোম্পানির ঋণের স্থিতি ১ হাজার ১৪২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৯৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্সের ঋণের স্থিতি ৯৬৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। তাদের পুরোটাই খেলাপি ঋণ। রূপালী কম্পোজিট লেদার ওয়্যারের ঋণের স্থিতি ও খেলাপির পরিমাণ একই, ৮৭৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ক্রিসেন্ট লেদার্স প্রডাক্টের ঋণের স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ একই ৮৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেমসের ঋণের স্থিতি ও খেলাপি ঋণ ৮১১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সাদ মুসা ফেব্রিক্সের ঋণের স্থিতি ১ হাজার ১৩১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৭৭৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বি আর স্পিনিং মিলসের ঋণের স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ একই, ৭২১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এসএ অয়েল রিফাইনারির ঋণের স্থিতি ১ হাজার ১৭২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৭০৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। মাইশা প্রপাটি ডেভেলপমেন্টের ঋণের স্থিতি ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৬৬৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইলের ঋণের স্থিতি ৭৭০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৬৬০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সামান্নাজ সুপার অয়েলের ঋণের স্থিতি ১ হাজার ১৩০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৬৫১ কোটি ৭ লাখ টাকা। মানহা প্রিকাস্ট টেকনোলজির ঋণের স্থিতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ একই, ৬৪৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আশিয়ান এডুকেশনের ঋণের স্থিতি ৬৫৩ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ ৬৩৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এসএম স্টিল রি-রোলিং মিলসের ঋণের স্থিতি ৮৮৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৬৩০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এ্যাপোলো ইস্পাত কমপেস্নক্সের ঋণের স্থিতি ৮৭২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৬২৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এহসান স্টিল রি-রোলিংয়ের ঋণের স্থিতি ৬২৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৫৯০ কোটি ২৩ লাখ টাকা এবং সিদ্দিকী ট্রেডার্সের ঋণের স্থিতি ৬৭০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। খেলাপি ঋণ ৫৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা।

প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক ও স্থানীয় অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বছর কয়েক ধরে নানা সময়ে বড় ঋণ পরিশোধে ছাড়সহ নানা সুবিধা দিচ্ছে সরকার। তবে খেলাপি ঋণের রাশ টানতে তা জোরাল ভূমিকা রাখছে না।

গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ওই সময় পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৪ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্যের চেয়ে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেশি হবে বলে মনে করেন অর্থনীতির গবেষকরা।

আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা চলমান

সংসদে সরকারি দলের হাবিবর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পেতে আলোচনা চলছে। চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক থেকে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পাওয়া গেছে। এই ঋণ ৫ বছরের গ্রেস প্রিরিয়ডসহ ৩০ বছরে পরিশোধযোগ্য।

এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত জাপান সরকার ৯২ কোটি ১৬ লাখ ডলার ছাড় করেছে।

এ সংসদ সদস্যের আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির হার আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়েছিল।

২০২১-২২ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৬৫২ কোটি ৮ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৯১ হাজার ২৬৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে