শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
স্বাগত মাহে রমজান

মাহে রমজানে নবীজির ৪ আমলের তাগিদ

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

রহমত-বরকত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজান। নেয়ামতে ভরপুর এ মাসে নবীজি বিশেষ চারটি আমলের কথা বলেছেন। আমলগুলোর সঙ্গে কিছু দোয়া, জিকির, তাওবাহ ও ইসতেগফার রয়েছে। এর বিনিময়ে রয়েছে বেশকিছু সুখবর। নবীজি সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম রমজানকে স্বাগত জানাতে গিয়ে উম্মতে মুসলিমার উদ্দেশ্যে এ আমলগুলোর দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

নবীজি সালস্নালস্নাহু আলাইহ ওয়া সালস্নামের নির্দেশনা অনুযায়ী মুমিন মুসলমান বিশেষ চারটি আমল, জিকির ও দোয়া করার মাধ্যমে মাসটি ইবাদতে কাটাবে। রোজাদারের জন্য মাসটি ইবাদতের বসন্তকালে পরিণত হবে। আমল চারটির মধ্যে দুটি মহান আলস্নাহর জন্য আর দুটি বান্দার জন্য। হাদিসে এসেছে- হজরত সালমান ফারসি রাদিয়ালস্নাহু আনহু বর্ণনা করেন, 'শাবান মাসের শেষ দিন রাসুলুলস্নাহ সালস্নালস্নাহু আলাইহি ওয়া সালস্নাম আমাদের উদ্দেশ্য এ মর্মে বক্তব্য দেন যে, 'হে লোক সকল! অবশ্যই তোমাদের সামনে মহান মাস, বরকতময় মাস উপস্থিত। এ মাসে তোমরা ৪টি আমল বেশি বেশি আদায় করবে। এর মধ্যে দুটি কাজ আলস্নাহর জন্য আর দুটি কাজ তোমাদের নিজেদের জন্য।'

আলস্নাহর জন্য ২ আমল। প্রথমত, কালেমার সর্বোত্তম তাসবিহ- 'লা ইলাহা ইলস্নালস্নাহ' পাঠ করা। এ কালেমা মানুষকে এক আলস্নাহর স্বীকৃতি তথা তাওহিদের দিকে ধাবিত করে। মানুষ সবচেয়ে বড় অপরাধ শিরক থেকে মুক্ত রাখে। যে উদ্দেশ্যে আলস্নাহ যুগে যুগে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। আর আমাদের জন্য দিয়েছেন মহাগ্রন্থ আল-কোরআন। তাই কোরআন নাজিলের মাসে মহান আলস্নাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি দিতেই একনিষ্ঠতার সঙ্গে সঙ্গে বেশি বেশি কালেমার তাসবিহ পাঠ করার তাগিদ দিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহম্মদ (সা.)।

দ্বিতীয়ত, আলস্নাহর কাছে বেশি বেশি ইসতেগফার তথা ক্ষমা প্রার্থনা করা। কেননা গুনাহমুক্ত জীবনের অন্যতম উপায় হচ্ছে তাওবাহ ও ইসতেগফার করা। আলস্নাহতাআলা ঘোষণা করেন- 'যে গুনাহ করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতপর আলস্নাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে

আলস্নাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়। (সুরা নিসা : আয়াত ১১০)

'নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে অবস্থান করবে এবং তুমি কখনো তাদের জন্য সাহায্যকারী পাবে না। কিন্তু যারা তওবাহ করে ও সংশোধন হয় তারা ব্যতীত।' (সুরা নিসা : আয়াত ১৪৫-১৪৬) 'হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আলস্নাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।' (সুরা নুর : আয়াত ৩১)

তাই তো আলস্নাহ বলেন, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ইসতেগফার কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল।' ইসতেগফারের কারণে আলস্নাহ তাআলা অনেক কঠিন অবস্থা থেকে মানুষকে হেফাজত করবেন।

এদিকে হজরত মুহম্মদ (সা.) তার বান্দাদের নিজের যে দুই আমল করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন তা হলো- আলস্নাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করা। জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি চাওয়া। কেননা জান্নাতই মুমিনের আসল ঠিকানা। যে ঠিকানায় বসবাসে মুমিন কখনো বৃদ্ধ হবে না। ব্যবহারের কোনো জিনিসপত্র পুরনো হবে না। যেখানে বিরাজমান থাকবে মধুমিশ্রিত নদী। সেখানে শেষ হবে না মানুষ চিরযৌবনা হবে। হাদিসে পাকে এ জান্নাত লাভের প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। হাদিসে এসেছে- 'যে ব্যক্তি আলস্নাহর কাছে কোনো কিছু চায় না আলস্নাহতাআলা তার প্রতি রাগান্বিত হন।' তাই জান্নাত পেতে আলস্নাহর কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা, আকুতি জানাতে হবে।

অন্যদিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়ার কারণ হিসেবে হজরত মুহম্মদ (সা.) বলেন, আলস্নাহর কোনো বান্দা জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে, এটা মহান আলস্নাহ নিজেও পছন্দ করেন না। পরকালের চিরস্থায়ী জীবন যেন আলস্নাহর ভয়াবহ আজাবে পরিণত না হয় সেজন্যই আলস্নাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা চাইতে হবে। আর ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের মহান আলস্নাহ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে