বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়াউর রহমানের জন্মদিন আজ

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
জিয়াউর রহমানের জন্মদিন আজ

সাবেক রাষ্ট্রপতি, সেনাপ্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মদিন আজ। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি তিনি বগুড়া জেলার বাগবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মনসুর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করে দেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করেন।

জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

বগুড়া ও কলকাতায় শৈশব এবং কৈশোর অতিবাহিত করেন জিয়াউর রহমান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৫ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের গণমানুষের কাছে মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সমাদৃত। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের প্রধান হিসেবে জিয়াউর রহমান এ দেশের মানুষের কাছে প্রথম পরিচিত হলেও পরে তিনি বাংলাদেশের একজন বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে রাজনৈতিক ঐকতানে নিয়ে আসা ও সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর কারণে তিনি আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি আখ্যা পান। তিনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠনের মধ্য দিয়ে দেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতির সূচনা করেন। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের নতুন দর্শন উপস্থাপন করেন জিয়াউর রহমান।

জিয়াউর রহমান ১৯ দফা কর্মসূচি দিয়ে দেশে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি এগিয়ে নিয়ে যান। তার প্রতিষ্ঠিত বিএনপি দেশের মানুষের প্রিয় দল হিসেবে '৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ, '৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, '৯৬ সালে ষষ্ঠ ও ২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অধীনে অনুষ্ঠিত '৮৬ সালের তৃতীয় ও '৮৮ সালের চতুর্থ এবং বর্তমান ক্ষমতাসীনদের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালে দশম ও ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বিএনপি বর্জন করে। আর সপ্তম ও নবম সংসদ নির্বাচনে সংসদে বিরোধী দলে ছিল বিএনপি। আর ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নিবার্চনে চরম ভরাডুবি হয় দলটির।

বঙ্গবন্ধুর পক্ষে '৭১ সালে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ যেমন এ দেশের মুক্তিকামী মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছিল, তেমনি '৭৫ সালে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যখন হুমকির মুখে, তখন সিপাহি-জনতার অভু্যত্থান হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আসীন হন। পরে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে জিয়াউর রহমান চীনসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের সূচনা করেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাতটি দেশকে নিয়ে 'সার্ক' গঠনের উদ্যোগ তারই। ওআইসিকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর সংহতি জোরদার করার জন্য তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে সাহসী অবদানের জন্য স্বাধীনতার পর তৎকালীন সরকার তাকে বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৮১ সালে এক সামরিক অভু্যত্থানে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে মর্মান্তিকভাবে মৃতু্যবরণ করেন।

জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

কর্মসূচি : দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী পালনে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বিএনপি'র মহানগর, জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন, আলোকসজ্জা, আলোচনা সভা, শীতবস্ত্র বিতরণ, দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রমনার ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকে জিয়াউর রহমানের ওপর ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে বিএনপি। এছাড়া দলের অঙ্গ, সহযোগী ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে নিজ নিজ সুবিধা অনুযায়ী শীতবস্ত্র বিতরণ করবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে